৫ বছরের চুক্তিতে নিয়োগ পেয়ে কাজ করছে ১৫ বছর ধরে বেনাপোল স্থলবন্দরের অধিকাংশ ক্রেন ও ফর্কলিফট অকেজো হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে মালামাল খালাস প্রক্রিয়া
মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের অধিকাংশ ক্রেন ও ফর্কলিফট অকেজো হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের মালামাল খালাস প্রক্রিয়া। আমদানিকারকরা বন্দর থেকে সময়মতো তাদের পণ্য খালাস করতে না পারায় বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ পণ্যজট। বন্দরের গুদাম থেকে পণ্য বের করার পর নতুন পণ্য ঢোকাতে হচ্ছে। জায়গার এ সংকটের কারণে পণ্যবোঝাই ভারতীয় ট্রাক বন্দরের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে থাকছে দিনের পর দিন। ট্রাক থেকে পণ্য নামানোর অনুমতি মিললেও ক্রেন ও ফর্কলিফট বিকল থাকায় বিপাকে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। বন্দর ব্যবহারকারীদের মেশিনারিসহ ভারী মালামাল লোড-আনলোডের সময় দিনের পর দিন অপেক্ষা করে থাকতে হচ্ছে সিরিয়াল দিয়ে। বন্দরে পন্যজট থাকায় ভারত থেকেও পণ্য নিয়ে আসছে চাচ্ছে না ভারতীয় ট্রাক চালকরা। বিরাজমান জটিলতা সামাধান না হলে যে কোন সময় বন্ধ হতে পারে দু‘দেশের আমদানি রফতানি বানিজ্য। তবে বেনাপোল স্থলবন্দরে ফর্কলিফট ও ক্রেন সরবারহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম লিমিটেড বলছে ভিন্ন কথা। ৫ বছরের চুক্তিতে ১৪ বছর ধরে কাজ করে চলেছে বন্দরে, বাড়েনি চুক্তি মুল্য, পরিশোধ করেনি কোম্পানীর পাওনা টাকা। উচ্চ আদালতে মামলা করে কাজ ছাড়ছে না তারা। ফলে নতুন কেউ আসতে পারছে না এ কাজে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সাল থেকে বেনাপোল বন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ওয়্যারহাউজিং কর্পোরেশনের মাধ্যমে বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে মংলা বন্দরের অধীনে এর কার্যক্রম চলত। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এটি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধিনেই পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশের সিংহভাগ শিল্প-কলকারখানা, গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিভিন্ন প্রকল্পের বেশির ভাগ মেশিনারিজ আমদানি করা হচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। ক্রেন ও ফর্কলিফট ছাড়া এ জাতীয় পণ্য বন্দরে আনলোড ও বন্দর থেকে খালাস নেওয়া সম্ভব নয়। মংলা বন্দর থেকে ২০০২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পর অতি পুরাতন ক্রেন ও ফর্কলিফট মংলা বন্দর থেকে ভাড়া করে এনে এখানে কাজ চালায় বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০০৬ সালের ২১ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দরের পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঢাকার মহাখালীর মেসার্স সীস লজিস্টিক্যাল সিস্টেমের পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি হয়। ওই বছরের ১ আগস্ট থেকে তারা বেনাপোল স্থলবন্দরে বেসরকারী কার্গো হ্যান্ডলিং এর দায়িত্ব পায়। তারা বন্দরে ৬টি ফর্কলিফট ও ৫টি ক্রেণ দিয়ে মালামাল ওঠানামার কাজ করার পর ওই বছরের ১০ নভেম্বর আরো ৬টি নতুন ফর্কলিফট নিয়ে আসে। কয়েকদিন কাজ করার পর এসব ফর্কলিফট ও ক্রেণ অকেজো হওয়া শুরু করে। কিন্তুু মেরামতের কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। চুক্তি অনুযায়ী ৫টি বিভিন্ন ধারন ক্ষমতা ক্রেন ও ১১টি ফর্কলিফট দিয়ে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ করার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ৬টি ক্রেন ও ৯টি ফর্কলিফট অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
বর্তমানে বেনাপোল বন্দরে ২৫ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ফর্কলিফট রয়েছে একটি ও পাঁচ টনের ফর্কলিফট রয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে ৪ টি দীর্ঘদিন ধরে অচল। ৪০ টন, ৩৫ টন ও ১৯ টনের ক্রেন আছে একটি করে, আর ১০ টনের ক্রেন আছে দুইটি। এসব ক্রেনের মধ্যে ৫ টি তাকে অধিকাংশ সময় অকেজো। বর্তমানে সবচেয়ে বড় ২৫ টনের ফর্কলিফটি অকেজো থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটছে মালামাল লোড-আনলোডে।
২০১৬ সালে বেনাপোল স্থলবন্দরে বেসরকারী কার্গো হ্যান্ডলিং এ নতুন ঠিকাদার নিয়োগের জন্য দরপত্র আহবান করা হলে আগের হ্যান্ডলিং ঠিকাদার মেসার্স সীস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম উচ্চ আদালতে রীট করে। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় দরপত্র আহবান প্রক্রিয়া। ফলে এই কোম্পানী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। আর এ কারণে এ পথে আমদানিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে দু‘দেশের বন্দর ব্যবহারকারীসহ ব্যবসায়ীরা।
বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, চুক্তি অনুযায়ী ইকুপমেন্ট হ্যান্ডলিং কোম্পানী নতুন কোন ইকুপমেন্ট এখানে দেননি। সবই পুরাতন। মাঝেমধ্যে মেরামতের জন্য যেসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয় তার অধিকাংশই পুরনো। ফলে মাস না ঘুরতেই ফের তা অচল হয়ে পড়ে। বন্দরে যেসব ক্রেন ও ফর্কলিফট ব্যবহার করা হচ্ছে তার অধিকাংশই ভাড়া করা দীর্ঘদিনের ও পুরাতন। এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো রকম দায়সারা গোছের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। বন্দরের গুদামে জায়গার অভাবে ওখান থেকে পণ্য বের করার পর নতুন পণ্য ঢোকানো হচ্ছে। খালাসের অভাবে পণ্যবোঝাই ট্রাক বন্দরের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকছে দিনের পর দিন। ট্রাক থেকে পণ্য নামানোর অনুমতি মিললেও ক্রেন বা ফর্কলিফট মিলছে না। ফলে জায়গা ও ক্রেন সংকটে বিপাকে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। বন্দরের উর্ধতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না।
ফর্কলিফট ও ক্রেন সরবারহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম লিমিটেডের বেনাপোলের ম্যানেজার ফখরুল ইসলাম জানান, ২০০৬ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্দরের পণ্য ওঠানো ও নামানোর জন্য বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে ৫ বছরের চুক্তি করে। পরবর্তীতে বন্দর কর্তৃপক্ষ আর চুক্তি নবায়ন করেনি। আমাদের কোম্পানীর দেনা পাওনা পরিশোধ করেনি। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়ে গত ১৫ বছর ধরে পুরাতন চুক্তিতে বন্দরের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। ১৫ বছর আগের চুক্তিতে বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম চালানো সম্ভব না। আমাদের দেনা পাওনা পরিশোধ করা হলে আমরা বন্দরের কার্যক্রম গুটিয়ে নেব।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, ৫১ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার বন্দরে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টন পণ্য ওঠানো-নামানো হয়। এসব পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য ন্যুনতম সাতটি ক্রেন ও ৩০টি ফর্কলিফট প্রয়োজন। সেখানে একটি ক্রেন ও ২টি ফর্কলিফট দিয়ে কাজ করানোর ফলে সেগুলো প্রায় সময় বিকল হয়ে পড়ে থাকছে। প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। বন্দরের জায়গা ও ক্রেন সমস্যার সমাধান না হলে বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ করা ছাড়া আমাদের কোন বিকল্প পথ নেই।
ব্যবসায়ীদের এসব অভিযোগের কথা স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, বর্তমানে স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথেও প্রচুর পরিমান মালামাল আসছে ভারত থেকে। সে জন্য জায়গার কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে বন্দরে ক্রেন ফর্কলিপট এর সমস্যা আছে। আইনী জটিলতার কারনে সমস্যাগুলো হচ্ছে, অচিরেই এসব সমস্যা সমাধান করা হবে।
এদিকে আগামী দু’মাসের মধ্যে বেনাপোল বন্দরে জরুরী ভিত্তিতে ক্রেন, ফর্কলিফট, নতুন ৫টি শেড নির্মান ও জমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কে এম তারিকুল ইসলাম। তিনি সম্প্রতি বেনাপোল বন্দর অডিটরিয়ামে বন্দর, কাস্টমস, পুলিশ, আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার মো: আজিজুর রহমান, সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, আমদানি রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দিন, ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিবসহ বন্দরের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
শারদীয়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেল ইলিশের প্রথম চালান
মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি: ভারতে শারদীয়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারের অনুমোদন পাওয়া এক হাজার ৪শ‘৫০ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানির প্রথম চালান ১২ মেট্রিক টন মাছ ভারতে গেল। সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ এই মাছ বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে রফতানি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সুত্র এই খবর জানিয়ে বলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য এই শুভেচ্ছা। ২০১২ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে এরপর বাংলাদেশ সরকার একাধিকবার ভারত সরকারকে শুভেচ্ছা উপহার স্বরুপ ইলিশ মাছ দিয়েছে। গত বছরও শারদীয়া দূর্গাপুজার সময় দেওয়া হয়েছিল ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ। পদ্মার ইলিশ পেয়ে ওপারের অনেকে খুশি।পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আগামী ২৩ অক্টোবর শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সেরা উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
বেনাপোল স্থলবন্দর মৎস্য কোয়ারেনটাইন পরিদর্শক আসওয়াদুল ইসলাম বলেন, ইলিশ মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১০ সেপ্টেম্বর এক হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয় সরকার। এসব ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশের নয়টি প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫০ থেকে ১৭৫ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার ইলিশের প্রথম চালান ১২ মেট্রিক টন ভারতে প্রবেশ করেছে। পর্যায়ক্রমে বাকী মাছ রফতানি হবে।
বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট ‘নিলা এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি রুবাইত বলেন, এবার প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ দশমিক ৬ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজি ৮৫৫ টাকা। ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইলিশের এ চালান ছাড় করা হবে। প্রথম চালানের দুই ট্রাকে ৬০০ বক্সে ১২ মেট্রিক টন ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।ইলিশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান খুলনার জাহানাবাদ সি ফুড লিমিটেড আর ভারতের আমদানিকারক কলকাতার জেকে ইন্টারন্যাশনাল।
পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে প্রিয় হলেও দেশের চাহিদা বিবেচনায় বিভিন্ন সময় তা রপ্তানি বন্ধ রাখে বাংলাদেশ সরকার। ২০১২ সালের আগে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হতো। তবে ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ২০১২ সালের পর ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় সরকার। গতবছরও দুর্গাপূজা উপলক্ষে পাঁচশ’ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। এরপর থেকে আবারো বন্ধ থাকে ইলিশ রপ্তানি।
ভারতে পদ্মার ইলিশ পাঠানোর আগেই পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলো ভারত
মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি: ভারতে পদ্মার ইলিশ রফতানির আগেই কোন ঘোষনা ছাড়াই বেনাপোল স্থলবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজরফতানি বন্ধ ঘোষনা করলো ভারত।সোমবার বিকেলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। ফলে বেনাপোলের ওপারের পেট্রাপোলে আটকা পড়ে পেঁয়াজ ভর্তি প্রায় ১৫০টি ট্রাক। একই অবস্থা অন্যান্য স্থলবন্দরেও।ভারতের শুল্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সোমবার কিছু নীতিগত পরিবর্তন হওয়ার কারণে পেঁয়াজের রফতানি বন্ধ করা উচিত।
সোমবার সকাল থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে কোন পেঁয়াজের গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে সকালের দিকে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ প্রবেশের পরপরই দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারতের পেঁয়াজ রফতানিকারকদের সংগঠন। বিকেলের দিকে দুই ট্রাক পদ্মার ইলিশ ভারতে রফতানি করলেও পেঁয়াজ বাংলাদেশে রফতানিতে তাদের মন গলেনি।
বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোল রফতানিকারক সমিতির পক্ষে ব্যবসায়ি কার্তিক ঘোষ বলেন, পেঁয়াজ রফতানিকারক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৭শ ৫০ মার্কিন ডলারের নীচে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি করবে না। সে কারনে অনেকগুলো পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক বর্ডারে দাঁড়িয়ে আছে।
বেনাপোলের পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল জানান, ভারতের সাথে আমদানি বাণিজ্য শুরুর পর থেকে ২শ ৫০ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ আমদানি হয়ে আসছে। ভারতের নাসিকে বন্যার কারনে সেখানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের রফতানিকারকরা স্থানীয় বাজার দর হিসাবে ৭শ ৫০ ডলারের নীচে বাংলাদেশে পেঁয়াজের রফতানি করবে না। এ কারনে তাঁরা পেঁয়াজের রফতানি সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতের বনগাঁ এলাকার পেঁয়াজ ব্যবসায়ি অনিল মজুমদার টেলিফোনে জানান, বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি করতে তাদের আপত্তি নেই। বাজার দরে এলসি পেলে তাঁরা পূনরায় রফতানি শুরু করবে। সে ক্ষেত্রে পুরানো যে সব এলসি দেয়া আছে সে গুলো ২শ ৫০ মার্কিন ডলার সংশোধন করে সংশোধিত মুল্যে এবং নতুন এলসি ৭শ ৫০ মার্কিন ডলার করা হলে পেঁয়াজের আমদানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, ভারত কোন ঘোষনা ছাড়াই মুল্য বৃদ্ধির দাবিতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। পারস্পারিক বাণিজ্যে সমঝোতার বিকল্প নেই। তাঁরা রফতানি বন্ধ না করে পেঁয়াজের আমাদানিকারকদেরকে সময় বেঁধে দিতে পারতেন। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তটা নেয়া ঠিক হয়নি।
এদিকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধের খবরে নড়ে চড়ে বসেছে বেনাপোলসহ বিভিন্ন স্থানের পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়িরা। সন্ধ্যার আগেই খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
Discussion about this post