নাসরিন আক্তার মৌসুমী -বাংলার বার্তা-কুয়েতঃ “সমুদ্র জয়” নামটা শুনলেই ভীষন ভাল লাগে। অনেকের মনে হয়ত প্রশ্ন জাগতে পারে “সমুদ্র জয়” এটা আবার কেমন জয়? হ্যাঁ এটাই হলো সমুদ্র জয়। আর এই জয় করেছেনে আমাদের বাংলাদেশী নাবিকেরা। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সমুদ্র জয় জাহাজ। সুদূর বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে এসেছে এই সমুদ্র জয় নামের জাহাজটি। আর বাংলার ইতিহাসে এটাই প্রথম জাহাজ যা সমুদ্র জয় নামে এসেছে কুয়েতে। এই সমুদ্র জয় নামে জাহাজটিতে মোট ক্রু আছেন ২৩৫ জন। এর মধ্যে নারী অফিসার আছেন ৫ জন। আর বাকী সব নাবিকেরা হলেন পুরুষ। কমান্ডার এ কে এম আফজাল হোসেন পিএসসি, বিএন এর নেতৃত্বে এই সমুদ্র জয় জাহাজটি চিটাগং থেকে শুরু করে শ্রীলংকা, কাতার, কুয়েত বাহারাইন এবং সর্বশেষ ইন্ডিয়াতে ভ্রমন করবেন। জাহাজটির দৈর্ষ্য ১১৫ মিটার আর প্রস্থ হচ্ছে ১৩.২ মিটার। ২৩ শে এপ্রিল জাহাজটি চিটাগং থেকে রওয়ানা হয় শ্রীলংকা কলম্বো’র উদ্দেশ্যে। চিটাগং থেকে কলোম্বোর দূরত্ব হলো ১৩৬৬ নার্টিক্যাল মাইল এন এম। শ্রীলংকায় কিছুদিন থেকে ২১৬৬ এনএম দূরে কাতারের উদ্দেশ্যেযাত্রা শুরু করে। কাতার দোহা টু কুয়েতের দূরত্ব হচ্ছে ৩৬২ এনএম, অতিক্রম করে এখন এই সমুদ্র জয় জাহাজটি কুয়েতের বুকে অবস্থান করছে। তারা কুয়েতে ৪ দিন থাকবেন। আর এই ৪ দিন সমুদ্র জয় জাহাজটি জনগনের জন্য দেখার ব্যবস্থা ব্যবস্থা করেছেন কুয়েতস্থ বাংলাদেশ ডিফেন্স অ্যাটাশি। ২৩ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত কুয়েতে অবস্থান করবেন। ২৭ মে তারা বাহারাইন এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। ২৮ তারিখে তারা কুয়েত থেকে ৩০১ এনএম দূর বাহারাইন পৌছবেন ইনশা আল্লাহ। সেখান থেকে ১৯২৭ এনএম দূর ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। ভারত থেকে সর্বশেষ রওয়ানা হবেন নিজ দেশ বাংলাদেশের চিটাগং এর উদ্দেশ্যে যা কিনা ১৬৩৮ নটিক্যাল মাইল এনএম দূরে অবস্থিত। দোয়া রইলো তাদের এই দৈর্ঘ সফর সফল হউক। বাংলাদেশ নৌ বাহিনী শুধু সমুদ্রে ভ্রমনের জন্য নহে, বাংলাদেশ নৌ বাহিনী বিভিন্ন ভাবে নানান কর্মকান্ডে সাফল্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। এরা ৭১ এর যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। পাহারাদার হিসেবে দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে নিরাপদে রাখছেন সমুদ্র পথ গুলোকে। এখনো তারা যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায় সক্রিয়। আবহাওয়া তাদের অনুকুলে থাক বা না থাক তারা তাদের দায়িত্বের ব্যাপারে এতটুকু অবহেলা করেন না। যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায় তারা অগ্রনী ভূমিকা পালন করে থাকে। এরা সাগরের বুকে একঝাক সাদা পায়রা। এরা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে ভ্রমন করে এক দেশ থেকে আরেক দেশে এর সাথে দেশের সম্মান। সমুদ্র জয় জাহাজটার সকল ক্রুকে জানাচ্ছি আমাদের কুয়েত বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং স্বাগতম। সেই সাথে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ৫ জন সাহসী নাবিক মহিলা অফিসারকে। যারা সমুদ্র জয় করে মাইলের পর মাইল পারি দিচ্ছেন তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এই প্রথম একটি জাহাজ “সমুদ্র জয়” নামে বাংলাদেশ থেকে এসে আমাদেরকে জয়ী করেছেন। এই ছোট ছোট জয় যেন একদিন বিরাট সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। দেশকে যেন উজ্জল ও সমৃদ্ধশালী করে তুলেন। ২৩ শে এপ্রিল থেকে ১৬ই জুন পর্যন্ত আমাদের এই নাবিকেরা অবস্থান করবেন সাগরের বুকে। তাদের এই পথ চলা যেন আনন্দের হয় আমাদের সেই প্রত্যাশা রইলো।
Discussion about this post