কুয়েতের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট দিয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়াররা। এক সময় কয়েক শত বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ার দেশটির গুরুত্বপূর্ণ কাজে দায়িত্ব পালন করে থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা অনেক কম। ভিসা জটিলতায় নতুন করে বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ার না আসায় দেশটিতে কমতে শুরু করেছে উচ্চ পর্যায়ের দক্ষ জনশক্তি।
কুয়েতের বিদ্যুৎ ও পানি মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, তেল মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, সহ কুয়েতের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি বেসরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের ট্যেকনিকেল বিভাগে বেশ সুনামের সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা। ২০০৭ সালের আগে দেশটিতে কয়েক শত বাংলাদেশী প্রকৌশলী কর্মরত ছিলেন।
কর্ম জীবনের মেয়াদ শেষে কেউ নিয়েছেন অবসর, কেউবা আরো উচ্চ জীবন যাপনের চিন্তা করে পাড়ি জমিয়েছেন আমেরিকা কিংবা কানাডায়। সেই থেকে দেশটিতে বাংলাদেশী প্রকৌশলীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে । এখন দেশটিতে বাংলাদেশী প্রকৌশলীর সংখ্যা অর্ধশতের নিচে এমনটাই জানা গেল ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, (আই ই বি) কুয়েত চ্যাপ্টারের সংগঠনটির পিকনিক এবং ফ্যামিলি গেট টুগেদার অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানের কাছে কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা দেশটিতে নতুন করে সরকারীভাবে প্রকৌশলী নিয়োগের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করার অনুরোধ করেন। কুয়েতে উনিশশো ছিয়ানব্বই থেকে আই ই বি কুয়েত চ্যাপ্টার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
কুয়েতে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরে রয়েছে প্রচুর প্রকৌশলীর চাহিদা। এই সুযোগটি গ্রহন করছে ভারত ও মিসর। অতি দ্রুত বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করলে কুয়েতে আবারও বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ারা তাদের দক্ষতায় এখানে সুনাম কুড়ানোর পাশাপাশি দেশের রেমিটেন্সও রাখবেন বিশেষ ভূমিকা এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান বলেন বাংলাদেশ দূতাবাস সব সময় কুয়েতে নতুন শ্রম বাজার খুঁজছে তবে তারা এখন দক্ষ জনশক্তির বাজার ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে কয়েকশো নার্স কুয়েতে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়োগ পেয়েছেন। এটা একটা মাইল ফলক কুয়েতে শ্রম বাজারে। তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে যাতে আগামীতেও আরো দক্ষ জনশক্তি কুয়েতে নিয়োগ দিতে ।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলেন একই দেশে বাস করলেও কর্মব্যস্ততার কারণে এক জনের সাথে আরেক জনের দেখা হয় না বছরে একবার। এই মিলন মেলার মাধ্যমে পারিবারিক এবং কর্ম জীবনের খবরা খবর একে অপরের সাথে শেয়ার করা যায়। অনুষ্ঠানে দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল বল নিক্ষেপ, বালিশ খেলা, র্যাফল ড্র, পুরস্কার বিতরণসহ নানা ব্যতিক্রমী আয়োজন। এই মিলন মেলায় অংশ নেন । এছাড়া গৃহীনিদের তৈরী নানা রকম মুখরোচক খাবারও পরিবেশন করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, কুয়েত চ্যাপ্টার এর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুল কুদ্দুস মল্লিক এর সভাপতিত্বে এবং ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় খেলাধুলা সহ অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আতাহার আলী, ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার সাহেদ ফারুক সিনহা, ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার পথিক, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজ সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন ডিফেন্স এটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) ইকবাল আক্তার, তৃতীয় সচিব আবদুল লতিফ ফকির। । এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, (আই ই বি) কুয়েত চ্যাপ্টারের সকল নেতৃবৃন্দ ও তাদের পরিবারবর্গ সহ সুধীজনেরা।
Discussion about this post