সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় তৃতীয় গ্রুপে (প্রথম ১৫ পারা) বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ শিহাব উল্লাহ।
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হাফেজ মুহাম্মদ শিহাব উল্লাহ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এ প্রতিযোগিতায় ১০৩টি দেশের প্রতিযোগী অংশ নেয়। সৌদি আরবের ইসলাম, দাওয়াহ ও দিক-নির্দেশনা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল সাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটি জানা গেছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ‘কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন, তেলাওয়াত ও তাফসির প্রতিযোগিতা- ৪১তম আসর’ শীর্ষক এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিযোগীদের পাশাপাশি এতে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও সম্মানী ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানায় সৌদি আরব। সৌদি সরকারের আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এই প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন। আরও পড়ুন: বিশ্বশান্তির জন্য মুসলিমদের ঐক্য জরুরি: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতায় সৌদি বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে তার ভাই ও মক্কা মুকাররমার গভর্নর আমির খালিদ আল-ফায়সাল পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি বিজয়ীদের হাতে কৃতিসনদ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ-পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়াও এতে সৌদির ধর্ম, দাওয়াহ ও দিক-নির্দেশনা বিষয়ক মন্ত্রী ড. আব্দুল লতিফ বিন আব্দুল আজিজ আল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
সনদের পাশাপাশি পুরস্কার হিসেবে শিহাবকে ৫৫ হাজার সৌদি রিয়ালের (প্রায় ১১ লাখ টাকা সমপরিমাণ) প্রতীকী চেক দেওয়া হয়। অন্যদিকে শিহাব গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ক্রোয়েশিয়ায় ৪৩টি দেশের হাফেজদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ২৫তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
দশ বছর বয়সী শিহাব উল্লাহ রাজধানী যাত্রাবাড়ীর তাহফিজুল কুরআন ওয়াস্ সুন্নাহ মাদ্রাসার ছাত্র। সে সাত বছর বয়সে কোরআন হেফজ করা শুরু করে। এরপর এক বছর না পেরোতেই পবিত্র কোরআনের হাফেজ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। কুমিল্লা জেলার বরুডার নেয়ামতুল্লাহ মাহবুব তার বাবা। সৌদিতে শিহাবের সঙ্গে তার শিক্ষক ও যাত্রাবাড়ীর তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক প্রখ্যাত কারি নাজমুল হাসান রয়েছেন।
‘কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন, তেলাওয়াত ও তাফসির প্রতিযোগিতা’র এই আসর চারটি বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক বিভাগের সেরা তিনজনকে পুরস্কৃত করে। এছাড়া সাফল্যের বিচারে উত্তীর্ণদের (অংশগ্রহণকারী সবাইকেই) ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয়। চার বিভাগের প্রথম তিনটি স্থান অধিকারীদের নাম ও দেশের তালিকা—
প্রথম বিভাগের বিজয়ী
১ম স্থান অধিকার করেছে সৌদি আরবের মুজাহিদ ফায়সাল আওয়াদ।
২য় স্থান অধিকার করেছে আলজেরিয়ার খাইরুদ্দিন আহমদ মুহাম্মদ।
৩য় স্থান অধিকার করেছে ফিলিস্তিনের মুসা মুহাম্মদ আলী আওয়াদ।
দ্বিতীয় বিভাগের বিজয়ী যারা
১ম স্থান অধিকার করেছে নাইজেরিয়ার ইদরিস আবু বকর মুহাম্মদ আবু বকর।
২য় স্থান অধিকার করেছে আমেরিকার আহমদ মুহাম্মদ হাসান।
৩য় স্থান অধিকার করেছে ইরাকের আহমদ জারুল্লাহ আবদুর রহমান আল-জাবুরি।
তৃতীয় বিভাগে বিজয়ী যারা
১ম স্থান অধিকার করেছে লিবিয়ার আবদুস সাইয়িদ সুলাইমান সালেহ।
২য় স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশের মুহাম্মদ শিহাবুল্লাহ।
৩য় স্থান অধিকার করেছে ইন্দোনেশিয়ার আল-হাসসান আহমদ সওদার।
চতুর্থ বিভাগে বিজয়ী যারা
১ম স্থান অধিকার করেছে মাদাগাস্কারের আলী হামাদি বাত্রালাহি।
২য় স্থান অধিকার করেছে থাইল্যান্ডের মুআজ শুকরি মিরাহ।
৩য় স্থান অধিকার করেছে ব্রাজিলের মুহাম্মদ আলী।
Discussion about this post