না আউজুবিল্লাহ অনেকের কাছে “ money is 2nd God” তবে ওনার কাছে মানব সেবা হচ্ছে 2nd God। মানুষকে সম্মানী করা ওনার আরেকটি ধর্ম। দেশ বিদেশ থেকে কোন জ্ঞানী গুনী আসলে তাকে সম্মান জানানোর জন্য আয়োজন করেন মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে সংবর্ধনা সভার। আমার প্রবাস জীবনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সমাজের উচ্চ শ্রেণীর লোক থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া তথা ভিক্ষুকের সাথে আমার সখ্য হয়েছে। অনেক রতি মহা রতি দেখেছি। তবে ওনার মতো সাদা মনের মানুষের সংখ্যা নেহায়ত কম। ওনার জীবনে অর্থ আর বিত্ত বিসর্জন দিয়ে কতটুকু পেয়েছেন তা পাঠক মহলের কাছে বিবেচনার জন্য ছেড়ে দিলাম। বিগত ৫ বছর ধরে ওনাকে কাছ থেকে দেখার ও জানার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
আমার মতো একজন অধমের কলমের কালিতে ওনার পরিচয় দিয়ে ওনাকে ছোট করতে চাইনা। তারপরও পাঠক মহল জানার জন্য সামান্য পরিচয় তুলে ধরলাম। প্রবাস ও দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ওনাকে বাবুল ভাই হিসেবে জানেন। পুরো নাম ইফতিখার হোসেন বাবুল। দেশের বাড়ী চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলা মরিয়ম নগর ইউনিয়নে। রাজনৈতিক পরিচয় আবুধাবী কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। রাঙ্গুনিয়ার বিশিষ্ট শিল্পপতি ইলিয়াছ হায়দারের ভগ্নীপতি। আদর্শগতভাবে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বিশ্বাসী হলেও চির শত্রু জামাত ইসলামের লোকজন ওনার কাছে কোন প্রকার আর্থিক, কায়িক বা মৌখিক সাহয্য চেয়ে ফেরৎ এসেছে এমন নজির বিরল। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিশ্বাসী হলেতো কথা নাই। আগে বলেছিলাম মানব সেবা ওনার ধর্ম বা আল্লাহ। আমার জানামতে প্রবাসে কোন বিপদগ্রস্থ লোক ওনার কাছে সাহায্য চেয়ে খালি হাতে ফেরৎ আসতে হয়েছে এমন নজির কেউ দিতে পারবেন না। ওনার আয়ের এক তৃতিয়াংশ পরিবারের জন্য রেখে বাকি সব মানব সেবা ও সংগঠনের পিছনে ব্যয় করেন। অনেক সময় দেখা যায় যার উপকার করেছেন সেই ক্ষতি করতে চান ওনার। ওনি তার পরও করে যান তার উপকার।
বছরে বেশ কয়েকবার দেশে গেলে অনেকে ওনার মাধ্যমে দেশে পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সরাঞ্জামাদি পাঠান। একবার ওনার মাধ্যমে পাঠানো এমন কিছু চালানী নিতে প্রাপক দীর্ঘদিন না আসায় খুলে দেখে কিছু চালের খালী বস্তা চালানী দিয়েছেন। কৌতুল বসত দিয়েছেন না এমনি দিয়েছেন তার সঠিক উত্তর এখন খুঁজে পাননি ওনি। ওনি কিন্তু প্রেরককে কিছু বলেননি, হয়তো তার মনে কষ্ট পাবেন ভেবে।
ওনি সব সময় আনত মস্তকে থাকতে ভালবাসেন। আমি আমার ৫ বছরে টিভি সাংবাদিকতা জীবনে ওনার ছবি আনত মস্তক ছাড়া তুলতে পারি নাই। যে কারো সাথে অনায়াসে সখ্য গড়ে তুলতে পটু ওনি। কোন সন্ত্রাসী ওনাকে যদি ক্ষতি করতে আসেন ওনার সাথে কথা বললে সে ওনার ভক্ত হয়ে যাবে তাতে কোন সংদেহ নেই। কোন রেষ্টুরেন্টে ওনি ঢুকলে ওনার পরিচিত যারা আগে থেকে ছিলেন তাদের বিল ওনি মেটাবেন। অনেক সময় দেখেছি বিএনপির নেতাকর্মী নাস্তা করছেন তৎমধ্যে তিনি প্রবেশ করলেন ওনার দলবল নিয়ে তখন ওনি সবার বিল চুকিয়ে আসেন। বিএনপির নেতা বললেন আমরা ওনি থাকলে কখনো বিল দিতে পারিনা।
মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করা ওনাকে শোভা পায়। আমি আমার জীবনে ওনার অনেক নিউজ করেছি কখনো ওনার ছবি ছিল কখনো অফিস থেকে কেটে পেলেছে ওনি তার প্রতিবাদ করেন নি। অন্যরাতো পান থেকে চুন কসলে প্রতিবাদি হয়ে ওঠেন। কিন্তু ওনার বেলায় ভিন্ন। আমি দেখেছি প্রবাসে অনেকে রাজনীতি করে ছবি বা সম্মানের ওনি কিন্তু তার ধার ধারেন না। প্রবাসে যারা রাজনীতি করে তারা সব সময় দিয়ে যায় তার বিনিময়ে কিছু পেয়েছে কিনা জানা নেই আমার। তারপরও করে করে যান তারা রাজনীতি চর্চ্চা। মাথা থেকে নামাতে পারেন না রাজনীতি নামের ভুতটা।
এতকিছু বললাম তারপরও যেনে আমার লেখাটা অসম্পুর্ণ রয়ে গেল। ওনার দেশের বা প্রবাসের বাড়ীতে একবার ঘুরে আসলে যে কারো মন ভাল হয়ে যাবে। কারণ ওনার কোন ঘর নাই যেন ওটা একটি পারফিউমের শো রুম।
আমি জানিনা আমার লেখাটা যদি ওনার হাতে যায় ওনি আমার উপর কতটুকু ক্ষিপ্ত হবেন। কারণ শেখ শাদি একটি কথা বলেছেন, “গর আহমকরা সেতায়ত তা হুশ আমদ” (বেকুপের প্রশংসা করলে খুশি হয়)। কারো প্রশংসা করলে প্রশংসাকারীর মুখে তুতু মারতে বলেছেন, তারপরও যদি ঐ ব্যাক্তি প্রশংসা করে মনে করতে হবে সত্যি বলেছেন। কিছু পাওয়ার জন্য প্রশংসা করছেন না।
পরিশেষে মহান আল্লাহর দরবারে ওনার সু স্বাস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আমিন ছুম্মা আমিন।
মুহাম্মদ রফিক উল্লাহ্
আরব আমিরাত
+৯৭১৫৫৭৩১২৫৮১।
mamur.ullah@gmail.com
Discussion about this post