এই রায় সাহেদের মতো ভদ্রবেশী অপরাধীদের জন্য একটি বার্তা: আদালত। অবৈধ অস্ত্র রাখার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে রিজেন্ট গ্রুপ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। এই রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে সাহেদের মতো ভদ্রবেশী অপরাধীদের জন্য এই রায় একটি বার্তা’। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই মামলার রায় দেন। ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় করা মামলায় সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারায় তার সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন।
দুপুর ২টার দিকে রায় ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে সাহেদকে এজলাস কক্ষের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এরপর ঢাকার এক নম্বর মহানগর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ রায় পড়া শুরু করেন। প্রথমে ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের দেওয়া জবানবন্দির সারাংশ পড়ে শুনান বিচারক।
মামলার বাদীর জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত বলেন, আসামি মাদক মামলায় হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার স্বীকারোক্তি মতে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথের পরিত্যক্ত গাড়ির পেছনের সিটের নিচ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। জব্দ তালিকার সাক্ষীও গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলেছেন।
‘পরে তদন্ত কর্মকর্তার অনুসন্ধানে উঠে আসে ওই গাড়িটি সাহেদ কিস্তিতে কিনেছিলেন। তিনি এতই চতুর যে অস্ত্রের কথা জানা সত্ত্বেও বিচার চলাকালে একবারও আদালতে তা স্বীকার করেননি। আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, এই অস্ত্রটি সাহেদের মালিকানায় ছিল না এবং তিনি তা জানতেনও না। যে গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে তা সাহেদের নয়, এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ’
‘অথচ সাহেদ কিস্তিতে গাড়িটি কিনেছিলেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয় এবং তার কাছে সরবরাহ করা চাবি নিয়েই তালাবদ্ধ গাড়ির তালা খুলে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাই এতে প্রমাণিত হয় অস্ত্র সম্পর্কে তিনি জানতেন ও তার মালিকানাধীন গাড়ি থেকেই তা উদ্ধার করা হয়। সুতরাং এখানে তার অস্ত্র সম্পর্কে জানা থাকা ও মালিকানার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া এই আসামি এতই ধুরন্ধর যে মালিকানার বিষয়টি তিনি কখনও আদালতে স্বীকার করেননি। তাই তিনি এখানে কোনো অনুকম্পা পেতে পারেন না।’
সবশেষ রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘আমাদের সমাজে সাহেদের মতো ভদ্রবেশী অপরাধীদের জন্য এই রায় একটি বার্তা হিসেবে কাজ করবে।’ এরপর আদালত সাহেদের বিরুদ্ধে দণ্ডের ঘোষণা করেন।
Discussion about this post