তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহাল না হলে সরকার পতনে এক দফার আন্দোলন শুরু করা যায় কি না, সে বিষয়ে দলীয় নেতাদের মতামত আহ্বান করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রোববার বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে এই আহ্বান জানান। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন খালেদা। সেখানে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি এবং দলকে গতিশীল করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ নেবেন তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, “আগামী ১০ জুনের মধ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান করে সংসদে বিল পাসের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।” দাবি না মানলে সরকার পতনে এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামতে হতে পারে- এই কথা বলে তিনি বলেন, “প্রয়োজনে সরকার পতনে এক দফা আন্দোলনেও আমাদের যেতে হতে পারে। এ নিয়ে আপনাদের কাছ থেকে সুচিন্তিত মতামত আসতে হবে।” সরকারকে বেঁধে দেওয়া সময়ের পর ১১ জুন ঢাকার সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। দেশ পরিচালনায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আওয়ামী-মহাজোট সরকার ইতিমধ্যে তিন বছর অতিক্রম করেছে। এদের দুঃশাসনে ও সীমাহীন ব্যর্থতায় সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছে হাহাকার। সর্বক্ষেত্রে চলছে সন্ত্রাস, দখল, দলীয়করণ, অনাচার আর লুটপাটের মহোৎসব। “সরকার সমর্থক সন্ত্রাসীদের চাঁদাবজি, টেন্ডারবাজি, সংঘর্ষ ও হানাহানি রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে গ্রামে-গঞ্জে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলার ঘটেছে গুরুতর অবনতি।” “ এই অবস্থা থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে,” বলেন বিরোধীদলীয় নেতা। আন্দোলনের জন্য দলকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “বার বার বিপর্যয়ের মধ্য থেকে মাথা তুলে উঠে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। প্রমাণ করেছে, জনগণের সমর্থনধন্য এই দল অবিনাশী, দুর্জয় ও দুর্বার।“দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভোটের অধিকার রক্ষা করতে জনগণকে সংঘবদ্ধ করে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় এসে গেছে।” সকাল ১১টায় কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন খালেদা জিয়া। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে গঠিত ৩৮৬ সদস্যের নির্বাহী কমিটির এটি তৃতীয় সভা। এর আগে ২০১০ সালের ৩১ জুলাই প্রথম এবং ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল দ্বিতীয় সভা হয়েছিল। নির্বাহী কমিটির এই সভাটি দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সূচনা বক্তব্যের পর খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখেন।সভার শুরুতেই আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল্লাহ খান, শিল্পী ভুপেন হাজারিকা, তারেক মাসুদ, রশীদ তালুকদার, মিশুক মুনীর, সাগর সরওয়ার, মেহেরুন রুনি, শওকত জামিল, শিল্পপতি স্যামসন এইচ চৌধুরী, সৌদি কর্মকর্তা খালাফ আল আলী, সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুর পাশাপাশি স্টিভ জবস, জগজিৎ সিং, হুইটনি হিউসটনের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত ৩৮৬ সদস্যের নির্বাহী কমিটির এটি তৃতীয় সভা। এর আগে ২০১০ সালের ৩১ জুলাই প্রথম ও ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল দ্বিতীয় সভা হয়।
Discussion about this post