মো. অলিউল্লাহ সরকার অতুল : কসবা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) সুমন কুমার আদিত্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালত মামলাটির শুনানী শেষে মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত করে এস.আই সুমন কুমার আদ্যিত্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছে। তাকে গ্রেফতার করতে কসবা থানা পুলিশের কাছে গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ পাঠানো হয়েছে।
কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের আবদুর রউফের পুত্র ইমাম হোসেন বাদী হয়ে গত ১৭ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিমের বিচারক মনিরা সুলতানার আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং সি.আর ৮১।
এস.আই সুমন কুমার আদিত্যের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল মামলা হলেও বিভাগীয় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বলছেন; এস.আই সুমন কুমার আদিত্য ছুটিতে থাকায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কসবা থানা সূত্রে জানা গেছে; এস.আই সুমন কুমার আদিত্য গত ১৭ জুন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে একটি সাধারণ ডাইরী করে ৫ দিনের ছুটিতে গেছেন।
এ ছাড়াও এস.আই সুমন কুমার আদিত্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার মাদক ও চোরাচালানীর সাথে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মামলা এজাহার সূত্রে জানা গেছে; ইমাম হোসেনের স্ত্রী তাবাসুম আক্তার ওরফে পিংকিকে গত ২২ জানুয়ারি তারিখে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি ৩০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটিকে সাধারণ ডাইরী করে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে মামলাটি রেকর্ড করতে কসবা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এক মাস ধরে মামলাটি থানায় রেকর্ড না করায় আদালতের নির্দেশে গত ১৩ মার্চ কসবা থানায় মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত হয়। মামলাটি কসবা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) সুমন কুমার আদিত্য তদন্তের দায়িত্ব পান।
এদিকে মামলার স্বাক্ষী আবদুর রহমান ও আমিনুল ইসলাম গত ১৪ মার্চ কাতারে চাকুরীর উদ্দেশ্যে চলে গেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সুমন গত ২৫এপ্রিল তাদেরকে কসবা থানায় উপস্থিতি দেখিয়ে দঃ বিঃ ১৬১ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এস.আই সুমন মনগড়া তথ্য দিয়ে ওই মামলাটির চড়–ন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলার বাদী ইমাম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তার স্ত্রীকে মাস্তানরা তুলে নিয়ে অপহরণ করেছে। এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে থানায় মামলাটি রেকর্ড করার নির্দেশ থাকলেও থানা কর্তৃপক্ষ তা রেকর্ড করেননি। পুনরায় আদালত নির্দেশে থানায় মামলাটি রেকর্ড ভূক্ত হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই সুমন কুমার আদিত্য মামলার বাদীর অনুপস্থিতিতে আসামীদের সাথে গোপন আতাত করে আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিদেশে থাকা স্বাক্ষীদের উপস্থিতি দেখিয়া আদালতে ভূয়া চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
অভিযুক্ত কসবা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) সুমন কুমার আদিত্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন; ইমাম হোসেনের দায়ের করা মামলাটি স্থানীয় ভাবে মিমাংশা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন। এ জন্য তিনি মামলাটির চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। মাদক ও চোরাচালানীর অভিযোগে তিনি বলেন; গাঁজা ও ফেন্সিডিল উদ্ধার করলে তথ্যদাতাদের সোর্স মানি টাকা দিতে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদ হাসান বলেন; এস.আই সুমন কুমার আদিত্যের বিরুদ্ধে যেহেতু জুডিশিয়াল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি ছুটিতে থাকায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শীঘ্রই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Discussion about this post