বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে এম্বাসি কাপ ফুটবল টূর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার কুয়েতের সোররা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ ফুটবল এসোসিয়েশন কুয়েতে আয়োজনে এবং কুয়েতস্থ বাংলোদেশ দূতাবাসের পৃষ্টপোষকতায় প্রবাসীদের সহযোগিতায় চলে এই টূর্নামেন্ট। ২১ দলের অংশ গ্রহনে দীর্ঘ চার মাস খেলা শেষে শুক্রবার খেলার ফাইনাল খেলে সোহাদা স্পোর্টিং ক্লাব বনান খুলনা টাইগার স্পোর্টিং ক্লাব। সন্ধা সাতটায় খেলার উদ্বোধন করেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন । সে সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাকিবুল করিম চৌধুরী, মিনিষ্টার শ্রম আবুল হোসেন, তৃতীয় সচিব আবদুল লতিফ ফকির সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সুধীজনেরা। প্রথমার্ধের খেলা শেষে বাংলাদেশ ফুটবল এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অধ্যবদি তাদের কর্মধারার উপর প্রামান্য চিত্র প্রদর্শ করা হয়। খেলার প্রথমার্ধে ঢিলে ঢালাভাবে খেলা চললেও দ্বিতীয়ার্ধে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে দুই দলের আক্রমণাত্মক খেলা শুরু হয়। কখনো সোহাদা ক্লাবের কাছে আবার কখনো ক্লাব খুলনা টাইগার ক্লাবের গোল করার খুব কাছাকাছি পৌঁছালেও দুর্দান্তভাবে গোলরক্ষকদের প্রতিরোধে গোল দিতে ব্যর্থ হয় দুদলই। দুটি দলই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রদর্শন করেছেন বলে মত দর্শকদের। খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে মাঠে থাকবেন সর্বদা, এমন আয়োজন আরো প্রত্যাশা করেন তারা।
সংগঠনের নেতৃৃবন্দরা সময় সংবাদকে বলেন প্রবাসীদের সহযোগিতা পেয়েছেন বলেই এতবড় একটি টূর্নামেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন। বিত্তবান প্রবাসীরা পাশে থাকলে আগামীতেও এমন টূর্নামেন্টের আয়োজন করবে জানান। বাংলাদেশ ফুটবল এসোসিয়েশন কুয়েতর সভাপতি মোঃ মোরশেদ আলম ভূইয়া, সাধারন সম্পাদক মোঃ কোরবান আলী। খেলার শেষের দিকে একটি দুর্দান্ত শট নিয়ে গোল করেন সোহাদা স্পোর্টিং ক্লাবের সাঈদ । সেই থেকে দুদলের মধ্যে শুরু হয় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, আক্রমণের মাত্রাও বেড়ে যায় উভয়ের মধ্যে। কয়েকবারই বিপজ্জনক আক্রমণ করে খুলনা টাইগার। কিন্তু সোহাদা স্পোর্টিং ক্লাবের গোলরক্ষকের অসাধারণ দক্ষতায় শেষ পর্যন্ত রক্ষা পায়। ১-০ গোলে জয়ী হয় খুলনা টাইগার স্পোর্টিং ক্লাব কে হারিয়ে জয়ের শিরোপা ছিনিয়ে নেয় সোহাদা স্পোর্টিং ক্লাব। দীর্ঘ চার মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল বলে সময় সংবাদকে জানান বিজয়ী দলের ক্যাপটেন । আবেগে আপ্লুত দর্শকদের উৎসাহ পেয়ে। পুরস্কার বিতরনকালে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন বলেন বিজয়ের মাসে বিদেশের মাটিতে এমন সুন্দরভাবে একটি খেলা প্রবাসীরা উপহার দিয়েছেন যা সত্যি অসাধারন। বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম রক্ষায় এমন আয়োজনে প্রবাসীদের পাশে থাকবে দূতাবাস। নির্ধারণী ম্যাচে খেলায় ঢাকা স্পোর্টিং ক্লাব কে ৩-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয় স্থান অধিকার অর্জন করে ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাব। ফাইনালে খুলনা টাইগার স্পোর্টিং ক্লাব কে ১-০ গোলের ব্যবধান পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় সুহাদা স্পোটিং ক্লাব । টূর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ে ভূসিত হন আরিয়ান এবং সেরা গোলরক্ষকের শিরোপা অর্জন করে আব্দুল্লাহ। কুয়েতে প্রায় তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশীর বসবাস। তাদের বিনোদন বলতে যা আছে তার মধ্যে প্রবাসীদের আয়োজনে এই ফুটবল টুর্নামেন্টে একটি।
কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশীরা আগে বিক্ষিপ্তভাবে তাদের খেলাধুলা চালিয়ে আসছিলো। তখন ছিলো না একাত্বতা, কিংবা শৃঙ্খলা। কোন টূর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হলে ইচ্ছা থাকা সত্তেও অনেকে খেলার সুযোগ পেতেন না, আবার অনেকে খেলা দেখার ইচ্ছা থাকলেও তা হয়ে উঠতো না । তার একটাই কারন তখন তাদের কোন একতা ছিলোনা। ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর কিুছ ফুটবল প্রেমী প্রবাসীর উদ্যোগে বাংলাদেশ ফুটবল এসোসিয়েশন গঠিত হয়েছিলো। এই সংগঠনে রয়েছে অসংখ্য স্পোর্টিং ক্লাব যার মধ্যে সুন্দরবন স্পোটিং ক্লাব, আল জাহারা একাদশ, সোহাদা স্পোর্টিং ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা স্পোর্টিং ক্লাব, জে এম স্পোর্টিং ক্লাব, সাতক্ষীরা স্পোর্টিং ক্লাব, আল মাজেদ স্পোর্টিং ক্লাব, রিগ্গা স্পোর্টিং ক্লাব, বিডি টাইগার স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়ান্স স্পোর্টিং ক্লাব, ফেনি সকার ক্লাব, বাংলার আলো স্পোর্টিং ক্লাব, আবহানী স্পোর্টিং ক্লাব, ঢাকা স্পোর্টিং ক্লাব, খুলনা টাইগার স্পোর্টিং ক্লাব, মেঘনা স্পোর্টিং ক্লাব, ইউথ স্পোর্টিং ক্লাব, বৃহত্তর নোয়াখালী স্পোর্টিং ক্লাব অন্যতম।
ক্রীড়া জগতে অবদান রাখায় বেশ কয়েকজন প্রবাসীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি লুৎফর রহমান মোকাই আলী, সংগঠনের প্রদান উপদেষ্টা মোঃ শওকত আলী, আবদুল কাদের মোল্লা, প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ, মাইন উদ্দিন মাইন, হুমায়ুন আলীসহ কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও অসংখ্য প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post