
কুয়েতে বাংলাদেশী মালিকানাধীন একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ অফ কোম্পানির ৩৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে শনিবার রাতে মিলেনিয়াম হোটেল ও কনভেনশন সেন্টারে। ১৯৮৮ সালে অ্যাম্বাসেডর সুপারমার্কেট নামে সুপারমার্কেট ব্যবসা শুরু করলেও ইরাকি আগ্রাসনের কারনে বন্ধ করে পুনরায় ১৯৯১ সালে আবার চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। সেই থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে ধীরে ধিরে খাদ্য পণ্য, পোশাক, পাদুকা, প্রসাধনী , মোবাইল, ঔষধ, আমদানি করে অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ ক্রমাগত সাফল্যের সিঁড়িতে পৌঁছাতে থাকে। এই গ্রুপের কুয়েতে রয়েছে বেশ কিছু সুপারমার্কেট, বিউটি সেন্টার, ফার্মেসী, ট্রাভেল এজেন্সী, মোবাইল শপ। কুয়েতের বাজারে বিদেশি পন্য আমদানী করে বাংলাদেশ ছাড়াও ফিলিপাইন, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, কেনিয়ার কাছে একটি বিজনেস ম্যাগনেটে পরিনত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বক্তব্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন বলেন এটা বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।


বাংলাদেশী এই কোম্পানিটি অতীত থেকে নিজের চেষ্টায় কুয়েতে টেলিকমিউনিকেশন, প্রসাধনী, খাদ্য সামগ্রী আমদানিতে যে অবদান রেখেছে তা প্রশংসনীয় এই ধারা অব্যাহত রাখবে এম্বাসেড গ্রুপ। তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মিসেস তুবা নূর সোনমেজ বলেন অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ আমাদের দূতাবাসের প্রতিচ্ছবি বাংলাদেশ কমিউনিটিতে। আমরা আগামীতে দুই দেশের বাসস্থান, জলবায়ু প্রকৃতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করতে পারব অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ মাধ্যমে। অ্যাম্বাসেডার গ্রুপকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানান তিনি। ভুটানের রাষ্ট্রদূত চিতেম তেনজি বলেন ভুটান বাংলাদেশ রিলেটেড সব ব্যবসা করতে আগ্রহী। অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় ভুটান। কোম্পানিটের এই সফলতার জন্য সম্মাননা জানান তিনি। কুয়েত প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান অ্যাম্বাসেডর গ্রুপের সিইও মুখাই আলী লুৎফর রহমান বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি গর্বের দিন।

আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে, কিন্তু সঠিক দিশা, কঠোর পরিশ্রম এবং আমাদের কর্মীদের সহযোগিতায় আজ আমরা এই সফলতার মাইলফলকে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। সবাই আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে। তারা আমাদের জন্য আইকন, আমাদের অনুপ্রেরণা । বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য বিভিন্ন দেশে বাজারজাতকরণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সাফল্যের পাশাপাশি ভবিষ্যত পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি।


অ্যাম্বাসেডর গ্রুপের ৩৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন, ভুটানের চিতেম তেনজি, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মিসেস তুবা নূর সোনমেজ, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘানা শ্যাম লামসাল, কেনিয়ার রাষ্ট্রদূত মিসেস হালিমা আবদিল মোহাম্মদ, লাওস পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূত বাউন ইন্থাবানদিথ, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত একাপোল পুলপিপাট, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ডঃ ডুক থাং নগুয়েন, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত মিসেস লেনা মারিয়ানা, ফিলিপাইন দূতাবাসের সচিব, বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিষ্টার শ্রম আবুল হোসেন, কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মো. মুনিরুজ্জামান, কাউন্সিলর ইকবাল আকতার, ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাকিবুল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্টে ( বিএমসি) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল আবেদীন, প্রায় বারোটি দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিগন এবং কুয়েতি নাগরিক ব্যাবসায়ী পার্টনার। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুয়েত জাতীয় পেট্রোলিয়াম কোম্পানি (কেএনপিসি) ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সালাম, KOTC ইঞ্জিনিয়ার আফতাব আহমেদ , কুয়েত এয়ারওয়েজের ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ সিনহা, ডা. মনিরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েত এর সভাপতি মঈন উদ্দিন সরকার সুমনসহ অসংখ্য প্রবাসী প্রকৌশলী, ডাক্তার, ব্যাংকার ও তাদের পরিবারবর্গ। ভিন্ন ধর্মী এই অনুষ্ঠানে ছিল বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে শিল্পীদের নাচ গানে এক আনন্দগন পরিবেশের সৃষ্টি হয় অনুষ্ঠানস্থল। সংশ্লিষ্টারা বলছেন এটি নিঃসন্দেহে একটি স্মরণীয় দিন, যেখানে ব্যাবসায়িক সাফল্য ও ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি একত্রিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, পর্দার অন্তরালের মুহূর্ত এবং সিইওর কৃতিত্ব প্রদর্শনকারী একটি ভিডিও কোম্পানির প্রোফাইলসহ উপস্থাপনা করা হয় । বিশেষ স্বীকৃতি পুরষ্কার যেমন বর্ষসেরা কর্মচারী পুরষ্কার, গ্রাহক সেবা পুরষ্কার, নেতৃত্বের উৎকর্ষতা পুরষ্কার, উদ্ভাবন পুরষ্কার, ২০ থেকে ৩৩ বছর চাকরিরত কর্মচারীদের পুরষ্কৃত করা হয়।
Discussion about this post