কুয়েতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিনম্র শ্রদ্ধায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দিবসের উপর বাংলাদেশ থেকে প্রেরিত বাণী সমূহ পাঠ, ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, ভার্চুয়াল আলোচনা এবং উন্মুক্ত আলোচনা ইত্যাদি। মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোঃ আশিকুজ্জামান, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জি এর সভাপতিত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। কোভিড-১৯ এর কারনে স্বাগতিক দেশের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন সীমিত রাখা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোঃ আশিকুজ্জামান, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসএসি, জি দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দদের সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর সাবাইকে সাথে নিয়ে দূতাবাসে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এর পর বাংলাদেশ কমিউনিটি, কুয়েতের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ই আগস্ট সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয় কর্তৃক প্রেরিত বাণী সমুহ পাঠ করেন যথাক্রমে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) মোহাম্মদ আবুল হোসেন,
প্রথম সচিব(পাসপোর্ট ও ভিসা), মোঃ ইকবাল আখতার, প্রথম সচিব(রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান নিয়াজ মোর্শেদ এবং দ্বিতীয় সচিব হাসান মনিরুল মহিউদ্দিন। বাণী পাঠ শেষে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত প্রামান্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
“বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, স্বাধীনতা ও শাহাদত” শিরোনামে ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীর প্রতীক সহ জুমের মাধ্যমে দূতাবাসের হলরুম থেকে সংযুক্ত হন কুয়েত প্রবাসীগন ।আলোচনায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীর প্রতীক তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের উপর অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভমূলক আলোচনা করেন। বক্তব্য শেষে আলোচক কুয়েত প্রবাসীদের আজকের দিবসের উপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনলাইন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোঃ আশিকুজ্জামান, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসএসি, জি।
ভার্চুয়াল আলোচনা শেষে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয় কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন গঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা এসময় ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবারের সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনকরেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোঃ আশিকুজ্জামান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবারের সকল শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বের সকল নিপীড়িত-শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকারআদায়ের মহানায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বন্ধুত্ব পূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি এবং বিশ্ব শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপনে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি শোক কে শক্তিতে পরিণত করে সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়নে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
মান্যবর রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য শেষে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাঁর পরিবারের সকল শহিদদের এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার আত্মার মাগফেরাত এবং বাংলাদেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ সাজেদুল ইসলাম।
Discussion about this post