শেখ আজাদ কামাল টিপু : আবহমানকাল ধরে গ্রাম পুলিশ যাদেরকে চকিদার, দফাদার নামে অভিহিত করা হয়, তারা স্থানীয় ভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা, গ্রামে আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনে ব্যাপক ভুমিকা রেখে আসছে। কিন্তু সমাজের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির সাথে তাদেরকে যুক্ত করতে না পারায় তারা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কার্যকর ভুমিকা রাখতে না পারলেও নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংষতা প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন বন্ধে কার্যকর অবদান রাখতে পারে। বিশেষ করে নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি সংক্রান্ত অপরাধের তথ্য সরবরাহ করা, স্থানীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটিকে বিষয়টি অবহিত করা ইত্যাদির মাধ্যেমে তারা সমাজকে আলোর সন্ধান দিতে পারে। তবে এজন্য গ্রাম পুলিশকে সমাজের মুল ¯্রােত ধারার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ইং চকরিয়া থানা প্রাঙ্গনে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আইএসডিই বাংলাদেশ, চিটাগং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিএসডিএফ), বাংলাদেশ পুলিশ চকরিয়া উপজেলা ও চকরিয়া উপজেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় তৃণমূল পর্যায়ে নারীর প্রতি সকল সহিংসতা রোধে গ্রাম পুলিশের ভূমিকা বিষয়ক মত বিনিময় সভায় উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবু রনজিত বড়–য়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ খালেদ উজ জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল। আইএসডিইর কর্মসূচী কর্মকর্তা শেখ আজাদ কামাল টিপুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিও ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, উপজেলা নারী উন্নয়ন কমিটির সদস্য ও নারী উদ্যোক্তা পরিষদের সভাপতি উম্মে কুলছুম মিনু, সিএসডিএফ’র কর্মসূচী সমন্বয়কারী কামরুন্নাহার শম্পা, আইএসডিই বাংলাদেশ’র কর্মসুচী ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা মহিলা মেম্বার ফোরামের সভাপতি রোকেয়া বেগম বেবি, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারা ইসলাম, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জন্নাতুল বকেয়া রেখা, উপজেলা গ্রাম পুলিশ এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি দফাদার আকবর হোছাইন, সামাজিক উদ্যোক্তা রফিক আহমদ প্রমুখ।
বক্তরা আরো বলেন ইউনিয়ন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটিতে নির্যাতনের অভিযোগ লিখিত ভাবে দায়েরে গ্রাম পুলিশরা অবশ্যই ভূমিকা রাখতে পারে। তবে যে কোন অভিযোগ আগেই গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটিতে দাখিল করার আহবান জানান, যাতে সমস্যাটি স্থানীয় ভাবে সমাধান হয়। নারীর বৈষম্য, আবহেলা, সহিংসতা হ্রাসে সামাজিক কর্মসূচী গুলোতেও গ্রাম পুলিশগণ বিশেষ ভুমিকা রাখতে পারে, তবে এজন্য তাদের অংশগ্রহনের সুযোগ থাকা উচিত। গ্রাম পুলিশকে আরো আধুনিকিায়ন করে তাদেরকে সমাজ পরিবর্তনের মুল চালিকা শক্তির সাথে সম্পৃক্ত করার উপর মত প্রকাশ করা হয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, জন্ম-মৃত্যনিবন্ধন, গ্রামে নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধসহ সমাজকে মাদক মুক্ত করতে এ বাহিনীর ভুমিকা প্রয়োজন এবং তাদের এসমস্ত কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
সভায় চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়নের ১৮০ জন চৌকিদার, দফাদার, থানার এসআই, এএসআইসহ উর্দ্বতন কর্মকতা, এনজিও প্রতিনিধি ও সামাজিক উদ্যোক্তারা অংশগ্রহন করেন।
Discussion about this post