করোনা মহামারীর মধ্যে সরকার বিগত সেপ্টেম্বর ’২০ মাসে উচ্চ মাধ্যমিকে অনলাইনে ভর্তিতে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেন। এর মধ্যে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। কোভিড-১৯ এর কারনে শ্রেণী কক্ষে ক্লাস নেয়া সম্ভব না হওয়ায় সরকার অনলাইনে ক্লাস শুরুর কথা বলছেন। কিন্তু এর মধ্যেই মাসিক ফিস আদায়ের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে ক্লাস শুরু না হবার আগেই মাসিক টিউশন ফিস আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতমাসে ভর্তি হওয়া শির্ক্ষার্থীদের কাছ থেকে জুলাই মাসের টিউশন ফিসসহ আদায় করা হয়। আর এখন আগষ্ঠ-অক্টোবর মাসের টিউশন ফিস আদায়ের জন্য অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মোবাইলে এসএমএস প্রদান ও তাগাদা প্রদান করা হচ্ছে। টিউশন ফিস আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক জিইসি শাখায় জমা দিয়ে শ্রেণী শিক্ষক ও অফিসে অবহিত করার জন্য বলা হচ্ছে।
করোনা কালে সরকার যেখানে এইচএসসি পরীক্ষা নিচ্ছে না। করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অভিভাবকরা আর্থিক ও মানষিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। সেখানে ভর্তির পরের মাসেই মাসিক ফিস আদায়ে তোড় জোরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।
১৩ অক্টৈাবর ২০২০ গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস প্রমুখ করোনা মহামারীকালে কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে এভাবে টিউশন ফিস আদায়ের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এসমস্ত ফিস অর্ধেক মওকুপ ও বাদ বাকিগুলি কিস্তিতে আদায়ের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় অভিভাবকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফিস অর্ধেক মওকুপের দাবি জানিয়ে আসছে। সেখানে সদ্য ভর্তি হওয়া উচ্চ মাধ্যমিকের শির্ক্ষার্থীদের এভাবে টিউশন ফিস আদায়ের জন্য চাপ দেয়া কতটুকু সমুচীন তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা দরকার। আর অতিরিক্ত ভর্তি ফিস আদায়সহ নানা বিষয়ে ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে ইতি পূর্বেও অভিযোগ ছিলো। প্রতিষ্ঠানটি একটি বৃহৎ শিল্পগ্রুপের সিএসআর খাতে দ্বারা পরিচালিত বলে দাবি করলেও মুলত এটি তাদের আরও একটি শিল্পে পরিনত হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক নির্দেশনা থাকলেও মাঠ পর্যায়ে এগুলির কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে তা কোন ভাবেই মনিটর করা হচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অভিভাবকদের কতটুকু সম্পৃক্ত করা হচ্ছে তা এখনও প্রশ্ন সাপেক্ষ? আর শিক্ষা প্রশাসন নাম মাত্র তদারিকর কারনে কিছু প্রতিষ্টান শিক্ষাকে বৃহৎ শিল্প বানিজ্যে পরিনত করেছেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারন শিক্ষার্থীও তাদের অভিভাবকদের। বিষয়টি সরকারের গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
Discussion about this post