মোবারক বিশ্বাস ঃ চলতি বছর পাবনার চাটমোহরসহ অধ্যুষিত চলনবিল অঞ্চলের ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৩৫-৩৮ মণ হারে ভুট্টার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফোটার কথা থাকলেও দাম না পেয়ে তার হতাশ হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, চলনবিল অঞ্চলের ৯ উপজেলায় এ বছর ১৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়। এখন ভুট্টা তোলার কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে তবে কৃষক লাভের মুখ দেখতে পাবে কি না সন্দেহ রয়েছে। মাগুড়া গ্রামের কৃষক বাবলু জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদে খরচ হয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। বর্তমান প্রতিমণ ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা। এক সময় চলনবিল অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষক বোরো ও আমন ধানের আবাদ করতো। কিন্তু খরচ বাদ লাভ তেমনটি না হওয়ায় বিগত ৪-৫ বছর যাবৎ বিস্তীর্ণ বিলের বোরো ফসলের ক্ষেতে ভুট্টা চাষ করায় কৃষক এ ফসলে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছিলেন। স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুট্টা চাষে খরচ কম, সার ও কীটনাশক স্বল্প মাত্রায় প্রয়োগ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহনশীল হওয়ায় এলাকায় ভুট্টার চাষ বছর বছর কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তা ছাড়া চলনবিলের উর্বর দো-আঁশ মাটিতে ভুট্টার আবাদ আশাতীত হওয়ায় কৃষক ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ইতিমধ্যেই চলনবিলের হাট- বাজারে নতুন ভুট্টা কেনা বেচা শুরু হয়েছে। প্রসিদ্ধ ভুট্টার হাট চাঁচকৈর, মির্জাপুর, বিনসাড়া, সলঙ্গা, হান্ডিয়াল, কাছিকাটা, ছাইকোলা, নওগাঁ, নিমগাছীসহ ১৫-২০টি হাটে সদ্য ওঠা ভুট্টা সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছর মৌসুমের শুরুতে সাড়ে ৫০০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা এবং মৌসুম শেষে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি করা হয়েছিল। চাটমোহর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোঃ রওশন আলম জানান, কৃষকেরা বোরো ধানের দাম না থাকায় ক্রমেই ভুট্টা চাষের দিকে ঝুকে পড়ে। তাছাড়া কম খরচের কম প্ররিশ্রমে সহজে ফসল ঘরে তুলা যায় বলে এ অঞ্চলের কৃষকেরা সহজেই এ চাষাবাদ বেছে নিয়েছেন। আগামীতে ভুট্টা আবাদ তুলানামুলক ভাবে বাড়বে। অপরদিকে তাড়াশ উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, চলনবিলে মাটিতে ভুট্টার আবাদ এ অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্য খুলে দিতে পারে। তিনি ভুট্টা চাষে লাভ বেশি থাকায় এবং কৃষকের ঝামেলা কম হওয়ার কারণে ভুট্টা চাষ বিগত বছরের তুলনায় কিছু কিছু উপজেলায় বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন। এ দিকে মৌসুমের শুরুতে ভুট্টার দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষক হতাশ হলেও মৌসুম শেষে দাম বাড়বে এমন আশায় অনেক কৃষক ভুট্টা গোলায় মজুদ করে রেখে দিচ্ছেন।
গ্রামীণ ফোনের ইন্টারনেট স্পীড না থাকায় পাবনার বিপুল সংখ্যক গ্রাহক দূর্ভোগের শিকার।
মোবারক বিশ্বাস ঃ গ্রামীণ ফোনের নিরব প্রতারনার শিকার পাবনার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের হয়রানী এবং দূভোর্গের মাত্রা মারাতœক ভাবে বেড়ে গেছে। বেশ কিছূদিন ধরে গ্রামীণ ফোনের শহর কেন্দ্রীক ইন্টারনেট গ্রাহকেরা লাইন ¯িপ্রড পাচ্ছেন না। ইন্টারনেট কানেক্ট হলেও আপলোড, ডাউনলোড, ই-মেইল আদান-প্রদান এবং ব্রাউজিং করতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কখনো কখনো ওয়েবপেজ ওপেন করাই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে ব্যবহারকারীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাবনা শহরের ব্যবহারকারীরা লাইন ¯িপ্রড কিছুটা পেলেও সদর উপজেলার গাছপাড়া, মনোহরপুর, মালিগাছা, মজিদপুর, টেবুনিয়া, বাড়ইপাড়া, দোগাছী, পুষ্পপাড়াসহ জেলার অন্যান্য উপজেলার চিত্র খুবই ভয়াবহ। এ ছাড়াও কথা বলার জন্যই পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক নেই এসব এলাকায়। গ্রাহকেরা ঘরের মধ্যে বসে কোন কথা বলতে পারেন না । ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় গেলে তখন তারা প্রয়োজন মাফিক কথা বলতে পারেন বলে গ্রাহকেরা অভিযোগ করেন। শহরের গ্রাহকেরা অল্প কিছূ ¯িপ্রড নিয়ে কাজ করলেও গ্রামের গ্রাহকদের গ্রামীণ ফোন ইটারনেটে কাজ করা স্বপ্নের ব্যাপার। ইন্টারনেট ব্যবহারে বিড়ম্বনা থাকলেও গ্রাহকদের বিল ঠিকই গুনতে হচ্ছে। ওয়েবপেজ ওপেন করতে সময়ক্ষেপন হলেও গিগাবাইট আর মেগাবাইট কাটতে গ্রামীন ফোন কোন কালক্ষেপন করছে না। গ্রাহকেরা একাধিকবার গ্রামীন ফোন অফিস ও কাষ্টমার কেয়ার এ অভিযোগ করলেও কোন সুফল তারা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে জানান, কাষ্টমার কেয়ারে গ্রাহকেরা এ ব্যাপারে যোগাযোগ বা অভিযোগ করতে কল করলেই সেখান থেকে মার্জিত এবং সুকন্ঠে জানানো হয়, গদবাধা বাক্যে ‘স্যার কি ভাবে আপনাকে সহযোগীতা করতে পারি,’ স্যরি স্যার’ শোনেন তিনি গ্রাহকেরা অভিযোগ এবং বলেন, স্যার আমাদের ইন্টারনেট এক্সপাট টিমের সঙ্গে কথা বলুন-বলেই লাইন ট্রান্সফার করে দেন স্পেশালাইজড টিমের কাছে। স্পেশালাইজড টিমও শোনেন গ্রাহকেরা বক্তব্য। এরপর তিনি বলেন সাময়িক এই অসুবিধার জন্য দুঃখিত স্যার, কাজ হচ্ছে, আশা করি খুব শিঘ্রই সমস্যাটা দূর হয়ে যাবে। এ পর্যন্তই শেষ! বাস্তবে কোন লাভই হচ্ছে না গ্রাহকদের। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে এ ভাবেই কাজের কাজ কিছূই হচ্ছে না। উপরোন্ত কাষ্টমার কেয়ারে অভিযোগ জানাতে কল করলেই গ্রাহকদের ১০/১৫ মিনিট সময় লেগে যায় এবং ব্যয় হচ্ছে মিনিট হিসেব করে বাড়তি কিছু টাকা। সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের ০১৭৬১-৬৪২৩০২ নম্বরের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী একজন গ্রাহক অভিযোগ করেন ইন্টারনেট কানেক্ট হয়। কিন্তু কোন পেজ ওপেন করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ ব্যাপারে একাধিকবার অভিযোগ করে কোন ফল পাওয়া যায়। একই অভিযোগ করেন ওই এলাকার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আরিফ ও রকি। তারা বলেন গ্রামীন ফোন গ্রাহকদের সাথে মূলত ঃ প্রতারনা করছে। গ্রামীণ ফোনের ইন্টারনেট ব্যবহারে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে নিরব প্রতারনার শিকার হচ্ছে পাবনার অসংখ্য গ্রাহক। গ্রাহকদের নিয়ে গ্রামীন ফোনের নিরব তামাশা বন্ধ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠির ব্যবহার উপযোগী ইন্টারনেট সার্ভিস এবং নেটওয়ার্ক সম্প্রাসারনের জোর দাবী জানিয়েছেন পাবনার গ্রাহকেরা।
পাবনা চাটমোহরের পল্লীতে জমিতে পানি সেচ দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে মহিলাসহ ২০জন আহত
মোবারক বিশ্বাসঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কুকড়াগাড়ী গ্রামের বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দু’পক্ষের সংঘর্ষে মহিলাসহ ২০জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ১৪জনকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার দুপুরে। হাসপাতালে ভর্তিকৃতরা হলো কুকড়াগাড়ী গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৪৫), গোলাম রসুল (৬০), মামুন (৯), মাসুদ (২৫), রিনা খাতুন (১৮), জামেলা খাতুন (৫০), আঃ আলিম (৩০), আজাদ হোসেন (২৫), আয়নাল হোসেন (২০), লোকমান (৩০), লুৎফর সরদার (৩৫), শহিদ সরদার (৪০), হামিদা খাতুন (৪০) ও হাফিজ সরদার (২২)। এলাকাবাসী জানান, সেচ মালিকদের ড্রেন থেকে বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি নেয়াকে কেন্দ্র করে কুকরাগাড়ী গ্রামের শহিদ সরদার ও গোলাম রসুল গং’র মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শহীদ ও গোলাম রসুল আপন চাচাতো ভাই। থানায় কোন মামলা হয়নি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হবে বলে থানার এএসআই খায়রুল ইসলাম জানান।
পাবনা চাটমোহরে বিরল প্রজাতির হনুমান
মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুরে বিরল প্রজাতির একটি হনুমানের আবির্ভাব ঘটেছে। ২/৩ দিন আগে হনুমানটি হরিপুর বুড়িপাড়া গ্রামের মৃত বাজিত প্রাং’র ছেলে আঃ বারেকের বাড়িতে এসে তার বাড়ির তেঁতুল গাছে আশ্রয় নেয়। স্থানীয়দের ধারণা হনুমানটি রাজশাহী এলাকা থেকে দলছুট হয়ে এসেছে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মকবুল হোসেন জানান, হনুমানটি দেখতে প্রতিদিন শ’শ মানুষ আসছেন। হনুমানটির লেজ অনেক লম্বা, মুখ ও পা কালো। স্থানীয় বন বিভাগের লোকজন হনুমানটি ধরার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
Discussion about this post