স্কাউটদেরকে ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তরুন সমাজের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুূল হামিদ। রোববার বাংলাদেশ স্কাউটস-এর ৪৪তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহবান জানান তিনি।
আবদুূল হামিদ বলেন, “আপনাদের তরুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করতে হবে, তাদেরকে বাংলাদেশের বহু দশকের পুরনো সংস্কৃতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। দেশে ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, উগ্রবাদ এবং জঙ্গীবাদের কোন স্থান নাই।”
তিনি বলেন, দেশের তরুনদেরকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্কাউটিং যথার্থ প্লাটফরম। দেশের নতুন প্রজন্মকে স্কাউটিং-এর ছাতার নিচে আনার লক্ষ্যে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরকে ‘মুক্তদল বছর’ হিসেবে ঘোষনা করায় তিনি বাংলাদেশ স্কাউটের উচ্ছসিত প্রশংসা করেন। তিনি সমাজের সর্বস্তরে স্কাউটিং-এর সুফল পৌঁছে দিতে প্রত্যেক এলাকায় ‘ওপেন স্কাউটিং গ্রুপ’ গঠনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
বাংলাদেশে স্কাউটিং ছড়িয়ে দিতে বর্তমান সরকার সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ‘কাবিং এক্সপানসন প্রজেক্ট’ এবং ‘হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট থ্রু স্কাউটিং প্রজেক্ট’-এর আওতায় সরকার সারাদেশের অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও সমমানের বিদ্যালয়, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কাব্ ও স্কাউট টিম গঠন করছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এসব কর্মসূচি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু করতে আন্তরিক ভাবে কাজ করার আহবান জানান। তিনি বলেন, এটা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে দেশের শিশু ও তরুনদেরকে আত্ম নির্ভরশীল ও সুশিক্ষিত জাতি গঠনে সহায়তা করবে।
রাষ্ট্রপতি দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে স্কাউট সদস্যদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ঘূর্নিঝড়, বন্যার সময় স্কাউটদের কার্যক্রম এবং শীতকালে শীতার্ত জনগনের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধের প্রশংসা সবাই করেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য স্কাউট সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ভয়াবহ মাদকাসক্তি দেশের তরুদেরকে ধ্বংস করছে এবং সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করছে।
হামিদ বলেন, তিনি জানতে পেরেছেন যে, জাপানে অনুষ্ঠিত ২৩তম বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরিতে বাংলাদেশ স্কাউটস-এর ৪৩৬ জন সদস্য অংশগ্রহন করেছে এবং কয়েকজন স্কাউট নেতার দায়িত্ব পালন করেছে।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি এটা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করেছে এবং আশা করি আমাদের স্কাউটরা বৈশ্বিক পর্যায়ে আরও অবদান রাখবে।”
রাষ্ট্রপতি ‘সিলভার টাইগার’, ‘সিলভার হিলশা’, ‘প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট’ ও ‘প্রেসিডেন্টস স্কাউট’ পুরস্কার লাভকারিদের অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশ স্কাউটস সূত্রে জানা গেছে, ৯ জন ‘সিলভার টাইগার’, ১৭ জন ‘সিলভার হিলশা’, দুইজন ‘প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট’ ও ১২২ জন ‘প্রেসিডেন্টস স্কাউট’ পুরস্কার লাভ করেছেন।
বাংলাদেশ স্কাউটস- এর সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্কাউটস- এর জাতীয় কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান।
সূত্র: বাসস
Discussion about this post