ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ঘর পুড়া গরু সিঁধুর দেখলেই ভয় পাই। গ্রাম বাংলার এই প্রবাদ বাক্যটিই যেন সত্যি হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস পূর্বাঞ্চলে। টর্নেডোতে বিধ্বস্ত হয় ১৫টি গ্রাম।এখন আকাশে সামান্য কালো মেঘ দেখলেই ওই এলাকার মানুষের মাঝে শঙ্কা দেখা দেয় না জানি আবার কি হয়। গত বুধবার সন্ধ্যায় পূর্ব আকাশে কালো মেঘ ও সামান্য বাতাসের গতি বাড়লে টর্নেডোতে বিধ্বস্ত আমোদাবাদ, টেংড়াপাড়া ও সিঙ্গারবিল এলাকার কিছু সংখ্যক মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছুটা-ছুটি শুরু করে। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দালানকোঠাসহ ত্রাণের তাঁবুর মধ্যে আশ্রয় নেয়। কেউ আবার গ্রামের পাশ দিয়ে ভয়ে যাওয়া তিতাস নদীর দিকে ছুটে আত্মরক্ষাতে। পরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসলে মানুষ ঘরে ফিরে। আমোদাবাদ গ্রামের সদারানী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আইছে শুইন্যা ছোট পুলাডারে লইয়্যা দৌর দিছিলাম। পরে ত্রান যে দেয় বেটারা সামনে আইস্যা বলে কিছু হইব না। পরে ঘরে ফিরা আয়। দুবলা গ্রামের সাত্তার মিয়া বলেন, চৈত্রের আকাশটা ঘুমোট হলে গ্রামের মানুষের মনে আতঙ্ক দানা বাধে। নিজেদের প্রস্তুত করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য। আসলে ভাই প্রকৃতির ওই গজবের কথা এখনও মানুষ ভুলতে পারে নাই। এদিকে টর্নেডো বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায় গ্রামের মানুষ এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেনি।সবার মনে অজানা আতঙ্ক। সরকারিভাবে দূর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রান-সামগ্রী না পৌছলেও এলাকার মানুষ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে অসহায় মানুষের মাঝে ত্রান-সামগ্রী বিতরণ করছেন। আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি কাউছার ভূইয়া টর্নেডোতে বিধ্বস্ত পৌরশহরের টেংড়াপাড়ায় থালা বাসন মগ স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিতরণ করেন। একই এলাকাই আখাউড়া পৌরসভা মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে দুই বান করে টিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা প্রদান করেন। একই দিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দূর্গত এলাকায় ত্রান-সামগ্রী বিতরণ করেন।
এ দিকে, টর্নেডো দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করতে শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া। আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশন জানান, নেত্রী দূর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে চিনাইর মাঠে জনসভায় ভাষণ দিবেন।
Discussion about this post