সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অবৈধভাবে ডেসটিনির কার্যকলাপ বন্ধে হয়ে যাচ্ছে এ খবরে দেশব্যাপী তীব্র উৎকন্ঠা ও উদ্বেগ এর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শুধু মাত্র ডেসটিনির কার্যক্রম বন্ধ না করে এর সাথে জড়িত লক্ষ লক্ষ আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করে অবিলম্বে ডেসটিনির অবৈধ কার্যক্রম এর সাথে জড়িত হোমড়া-ছোমড়াদের বিরুদ্ধে কঠিন ও দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি প্রদানের দাবী জানিয়েছেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও মহানগর কমিটির নেতৃবন্দ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে ডেসটিনি নানা ধরনের মুনাফামুখী ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে আর এ কাজে তারা ব্যবহার করেছে ক্ষমতাসীন সরকারের কিছু ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তিদেরকে। তারা তাদের পরিচয়কে একবার এমএলএম, একবার সমবায়ী, একবার এনজিও, একবার ব্যবসায়ী আবার মিডিয়া কর্ণধার এভাবে বিভিন্ন পরিচয়ে পরিচয় ধারন করে মুলত জনগনকে প্রতারিত করেছেন এবং ব্যবসার ঢাল হিসাবে এটিকে চালিয়েদিয়েছেন। যা একটি সভ্য দেশে কোনভাবেই চলতে পারে না। একাজে তারা সরকারের কিছু কর্তাব্যাক্তিকে অলংকারিক পদ দিয়ে মুলত তাদেরকেই পুতুল হিসাবে ব্যবহার করেছে, যা মারাত্মক অপরাধ। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন একটি প্রতিষ্ঠানের চরিত্র পরিস্কার হওয়া দরকার, এটি কি অলাভজনক? নাকি ব্যবসায়িক? ব্যাংকের অনুমতি না নিয়ে অবৈধ ভাবে ব্যাংকের মতো লেনদেন আর আমানত সংগ্রের জন্য কমিশন এজেন্ট নিয়োগ প্রদান করেছেন। ডেসটিনি মুলত সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে এমএলএল এর নামে কিছু লোক মুনাফা অর্জন করে দিনে দিনে কোটিপতি বনে গেছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন ডেসটিনির মতো অবৈধ কোম্পানীগুলি দেশের সম্ভাবনাময় সক্ষম তরুন সমাজকে অনুৎপাদনশীল কাজে যুক্ত করে নৈতিক মনোবল নষ্ঠ করে দিয়ে জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। দেশ বঞ্চিত হয়েছে বিশাল সম্ভাবনা থেকে, যারা জাতিকে আগামী দিনে নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর ডেসটিনির এর চক্র এখন স্কুল পর্যায় পন্ত ঢুকে পড়েছে। ফলে আগামী প্রজন্মকে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার পরিবর্তে নিজেরা অপরাধী চক্রে তালিকাভুক্ত করেছে। নেতৃবৃন্দ আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে অলংকারিক পদ প্রদান করে একটি চক্র, দেশের প্রচলিত আইনকে অমান্য করে নামে বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে এমএলএম এর নামে অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম করে বিদেশী কিছু লোককে সামনে নিয়ে মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন ইতিপুর্বে এরকম ইউনিপে২ইউ, যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক), আইটিসিএল, আর্থ-ফাউন্ডেশন, প্রভাতীসহ বিভিন্ন মাল্টিপারপাস ক্রেডিট সোসাইটি নামে দেশের সর্বত্র মানুষকে বনায়ন, হাউজিং এর প্লট দেয়ার নামে আমানত সংগ্রহ করে পরবর্তীতে উদাও হয়ে যায়। সরকারীভাবে ব্যবস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয় মাত্র। কিন্তু এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানের হোতাদের কোন বিচার না হওয়ায় সাধারন ভোক্তারা তাদের ন্যায্য আমানত পর্যন্ত ফেরৎ পায় না। আর এর সাথে জড়িতরা ভিন্ন নামে আবারও একই ধরনের প্রতারনাকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। এজন্য অনেককে রাস্তায় মাঠে আন্দোলন করতে হয়, অনেককে আবার সবকিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়। ডেসটিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক জায়গাসহ সারাদেশে বনায়নের প্লট বিক্রি করে জনগন থেকে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছে, এখন যদি এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে সাধারন জনগনের আমানত গুলি খোয়া যাবে। যুবকও অনুরুপ ভাবে সাধারন জনগনের সঞ্চয় নিয়ে টিভি চ্যানেল, পত্রিকা, রিয়েল স্টেট প্রতিষ্ঠানসহ নানামুখী কর্মকান্ডশুরু করলেও গ্রহাকরা তাদের সঞ্চিত আমানত ফেরৎ পায়নি। সরকারী নিয়মের বেড়াজালে এর হোতারা আইনের ফাঁকে পার পেয়ে যাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন অবিলম্বে ডেস্টিনির উদ্যোক্তাদের খুঁজে বের করে এ ধরনের অবৈধ ব্যাংকিং, মাকেটিং এর সাথে জড়িতদের যথাযথ বিচার করা না গেলে প্রতি বছর বছর এরকম আরও হাজারো ডেসটিনির জন্ম হবে প্রকারান্তরে সাধারন মানুষ তাদের অনেক কষ্ঠের সঞ্চয় হারাবেন।
বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটি সদস্য এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের ভারপ্রাপ্ত জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব মহানগর নেতা অধ্যক্ষ দবিরউদ্দীন খান, আবদুল ওয়াহাব চৌধুরী, হাজী ইকবাল আলী আকবর, রাশেদ খান মেনন, উম্মেকুলসুম আরজু, হাজী আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা ছালে আহমদ, অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, কল্যাণী দেব চৌধুরী, শিক্ষক নেতা লকিয়ত উল্লাহ, অঞ্চল চৌধুরী, কাজী ইউসুফ চৌধুরী, শাহাদৎ হোসেন, দেলুয়ার হোসেন, নারী নেত্রী শাহনাজ পারভীন লুনা, সায়মা হক, দীপিকা বড়–য়া, আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, হারুন গফুর ভুইয়া প্রমুখ।
প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম ক্যাব বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রাম। ফোনঃ ০১১৯০২১৮৪৫৮
Discussion about this post