মোঃ হাবিবুর রহমান খান, কুমিল্লা: দাউদকান্দিতে গাড়ি চাপায় স্কুল ছাত্র নিহত ॥ শতাধিক গাড়ি ভাংচুর ॥ রাস্তায় অগ্নিসংযোগ ॥ ২ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ গতকাল বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগরে চট্টগামী একটি কাভার্ডভ্যানের চাপায় এক স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে। শিক্ষার্থী, পুলিশ ও এলাকাবাসীরা জানায়, সকাল আনুমানিক ৮ টার সময় শহীদনগর এম এ জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ও স্থানীয় ঢাকারগাঁও গ্রামের নাজির মিয়ার পুত্র আলাউদ্দিন (১৩) স্কুলে যাওয়ার সময় রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে কাভার্ডভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন শতাধিক বিভিন্ন যানবাহন ভাংচুর করে। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা টায়ারে আগুন লাগিয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। শিক্ষার্থীরা স্কুলের বেঞ্চ দিয়ে মহাসড়কে বেড়িকেট সৃষ্টি করে। এ খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অবরোধ কারীদের রাস্তা থেকে সড়তে ও গাড়ি ভাংচুর থেকে বিরত থাকতে আহ্বান করলেও বিক্ষুদ্ধরা রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরবর্তিতে অতিরিক্ত র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি ভয়াভহ অবস্থা বিরাজ করলে এসময় কুমিল্লা যাওয়ার পথে একটি সেনাবাহিনীর বাস থেকে সেনাবাহিনারা রাস্তায় নামলে শিক্ষার্থীরা ভয়ে দ্রৌড়ে পালিয়ে যায়। পরক্ষনে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা আবারো রাস্তা অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাংচুরের সময় প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী, চালক, হেলপার ও সাংবাদিক আহত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনোয়ারুল নাসের অবরোধকারীদের সঠিক তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠু বিচার এবং তাৎক্ষনিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রাজস্ব তহবিল থেকে এক লক্ষ দশ হাজার টাকা এবং কাভার্ডভ্যানের মালিক থেকে ক্ষতিপূরণ দুই লক্ষ টাকা প্রদানের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ারুল নাসের জানান, নিহত স্কুল ছাত্রের দাফনের জন্য রাজস্ব তহবিলের এক লক্ষ দশ হাজার টাকার মধ্যে নগদ ১০হাজার টাকা তাৎক্ষনিক ভাবে প্রদান করা হয়েছে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট সাইফুল ইসলাম জানান, অবরোধের কারনে মহাসড়কে যে যানজট সৃষ্টি হয়েছে তা স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। মহাসড়কজুরে অতিরিক্ত র্যাব, থানা পুলিশ, জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশ কাভার্ডভ্যানটি আটক করেছে।
চান্দিনায় সয়াবিন তেল ভর্তি ট্্রাকসহ ৩ ডাকাত গ্রেফতার
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনায় সয়াবিন তেল ভর্তি ট্্রাকসহ ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ। সার্জেন্ট মোঃ আনোয়ার জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার নাওতোলা নামকস্থানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামগামী একটি সয়াবিন তেল ভর্তি ট্্রাক সহ ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো নাটোরের ইব্রাহিমপুর গ্রামের মোঃ মহিউদ্দীনের পুত্র মোঃ রসুল(৩৮) ও বড়বাড়িয়া গ্রামের আতাহারের পুত্র জামাল (৩০) এবং অজ্ঞাত একজন। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুত্তি চলছে বলে পুলিশ জানায়।
কুমিল্লায় মাদক সেবনের দায়ে ১০ যুবক আটক
কুমিল্লায় সীমান্ত এলাকায় মাদক সেবনের দায়ে ১০ জনকে আটক করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করেছে। পুলিশ জানায়- কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার নেতৃত্বে সেকেন্ডে অফিসার এস আই সাদেকুর রহমান, এসআই সামছুজ্জামান, এসআই শাহজাহান, এসআই জসিম উদ্দিন, এসআই পুলক চন্দ্র রায়, এ এসআই গোতম, এএসআই মিদন মিয়া, এ এসআই রহমানসহ সঙ্গীয় ফোর্স গতকাল বুধবার থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালীণ সময় কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার চাঁন্দপুর ব্রীজ, টিক্কারচর ব্রীজ, গোলাবাড়ি, শাহপুরসহ ভারতীয় সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক ও গাজা সেবনের দায়ে ৯ যুবককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- কোতয়ালী মডেলথানাধীন অশোকতলার তারা মিয়ার পুত্র সোহাগ (২২), একই এলাকার সোনাগ মিয়ার পুত্র জাকির হোসেন (২০), চকবাজার এলাকার মান্নান মিয়ার পুত্র জুয়েল (২০), শুভপুর এলাকার মিজান মিয়ার পুত্র মোঃ সুমন (২৪), সংরাইশ এলাকার মোঃ খলিল মিয়ার পুত্র মোঃ রফিক (২৬), নোয়াপাড়া এলাকার হারুনুর রশিদের পুত্র সোহাগ (২২), নিশ্চিন্তপুর এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের পুত্র মোঃ সোহেল (২০), নোয়াপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের পুত্র ফাহাদ (২২), বুড়িচং উপজেলার রামপুর এলাকার আবদুল গনির পুত্র মাসুম (২১)। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার কোতয়ালী মডেল থানায় পুলিশ আইনে ৩৪ ধারায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং- ৬৯ ও ৭০। গ্রেফতারকৃতদের গতকাল দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার জানান- কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে মাদক পাচার ও মাদক সেবীদের সংখ্যা অধিক। এ জন্য মাদক পাচার প্রতিরোধ ও মাদক সেবীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছি।
কুমিল্লায় গাজা ও মোটরসাইকেলসহ ৩ জন আটক
গাজা ও মোটরসাইকেলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১টায় নগরীর সংরাইশ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত ১টায় কোতয়ালী মডেল থানার অধীনে চকবাজার ফাঁড়ির টিএসআই নুর নবী নেতৃত্বে হাবিলদার জামাল উদ্দিন অভিযান চালিয়ে সংরাইশ এলাকায় ৫ কেজি গাঁজা ও মোটর সাইকেলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। আটককৃতরা হচ্ছেন- সংরাইশ এলাকার বাহার মিয়ার পুত্র মোঃ সোহাগ (২২), সদর দক্ষিণ উপজেলার দিশাবন্দ কাজী বাড়ী এলাকার আবদুল হালিমের পুত্র স্বপন (২২), সংরাইশ এলাকার মৃত নুরু মিয়ার পুত্র মোঃ হাসান (২৬)। আটককৃতদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী ও সদর দক্ষিণ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে চকবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ টিএসআই নুরুনব্বী এ প্রতিবেদককে জানান।
কুমিল্লা নোয়াপাড়ায় চাঁদার দাবিতে প্রবাসী’র উপর সন্ত্রাসী হামলা
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দক্ষিণ দুর্গাপুর এলাকার নোয়াপাড়া এলাকায় চাঁদা দাবিতে প্রবাসীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় চালিয়ে গুরুতর আহতের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় গতকাল বুধবার এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়- দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর দেশে এসে বাড়ি নির্মাণ কাজ করতে গেলে এলাকার স্থানীয় চাঁদাবাজরা দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী নোয়াপাড়া এলাকার হাজী মোঃ নুরুল ইসলামের পুত্র মোঃ মনির হোসেনের নিকট চাঁদা দাবী করে আসছে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর শাসনগাছা থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে আড়াইওরা এলাকায় রিক্সার গতিরোধ করে ৫/৭ জন চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী মনির হোসেনের নিকট পুনরায় চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে দা, ছেনি, রড দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। চাঁদাবাজরা মনির হোসেনের বিভিন্ন শরীরে কুপিয়ে, রড দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় চাঁদাবাজরা তার কাছে থাকা ক্যাশ ৮২ হাজার টাকা, গলায় থাকায় ৮ গ্রামের একটি স্বর্ণের চেইনসহ প্রায় ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। মনির হোসেনের চিৎকারে এলাকাবাসী দৌড়ে এসে তাকে চাঁদাবাজদের কবল থেকে উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালের জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার ৩ জনকে আসামী করে অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে অন্তর্ভূক্ত করে একটি মামলা এজাহারভুক্ত করা হয়। মামলার আসামীরা হচ্ছে- মৃত মানিক মিয়ার পুত্র মোঃ আব্দুল ছালাম (৩০), মদন ড্রাইভারের পুত্র মোঃ মোশাররফ হোসেন মোহল লাল ও কাজী মোসলেম মিয়ার পুত্র মোঃ মিনহাজ (২৮)।
Discussion about this post