কালের কণ্ঠ: গত ৩০ বছরে বেসরকারি খাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকে পরিণত হয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল)। বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের এক তৃতীয়াংশই (প্রায় চল্লিশ হাজার কোটি টাকা) আসে এ ব্যাংকের মাধ্যমে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ইসলামী ব্যাংকের অনন্য ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করলেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। সম্প্রতি কালের কণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দেশে রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে এক সময় বেসরকারি ব্যাংকগুলো তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তখন হুন্ডিওয়ালাদের বিরুদ্ধে আমরা বিভিন্ন দেশের বাঙালি কমিউনিটির মধ্যে সচেতনতা তৈরি করি, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করি। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের তাবৎ বাঙালি কর্মীদের সংগঠিত করে ইসলামী ব্যাংক রেমিট্যান্স বাজার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।’ রেমিট্যান্সের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক দেশের শিল্পায়নেও প্রাণসঞ্চার করেছে বলে জানালেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, দেশের প্রধান প্রধান শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আমরা অর্থায়ন করেছি। আকিজ গ্রুপ, দেশের সর্ববৃহত হোম টেক্সটাইল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপ, এস আলম, আবুল খায়ের গ্রুপ, বিআরবি গ্রুপ, শ্যামলী পরিবহন, প্যাসিফিক ফার্মাসিউটিকালসসহ বড় বড় বহু প্রতিষ্ঠান আমাদের গ্রাহক। বিনিয়োগে কিংবা আমানতের ক্ষেত্রে এই ব্যাংকে কোনো ধরনের বৈষম্য নেই বলে দাবি করেন তিনি। বিশ্বের শীর্ষ এক হাজার ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। আবদুল মান্নান বলেন, ‘এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বের ব্যাংক খাতে বাংলাদেশের গৌরব বাড়াতে ভূমিকা রেখেছি। আর এখন কেউ কেউ ইসলামী ব্যাংককে ‘মৌলবাদের অর্থনীতি’ হিসেবে আক্ষা দিচ্ছেন যা খুবই দুঃখজনক। ‘ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রমের সঙ্গে মৌলবাদের কোনো যোগসূত্র নেই। আমরা ধর্মীয় ব্যাংক হিসেবে কাজ করছি না। ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গেও আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’ আবদুল মান্নান বলেন, কল্যাণমুখী কার্যক্রমের একটি লক্ষ্য নিয়ে ১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করে ইসলামী ব্যাংক। এটা সফল হওয়ায় অনেক ব্যাংকই এখন ইসলামী পদ্ধতির ব্যাংকিংয়ে এসেছে। দুটি ব্যাংক প্রচলিত ধারা থেকে ইসলামী পদ্ধতিতে রূপান্তর হয়েছে। সারা দুনিয়াতে এ ধারার ব্যাংকিং চালু হচ্ছে। বিভিন্ন বহুজাতিক ব্যাংকও এখন ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এই ধারার ব্যাংকিং একটি সফল ব্যাংকিং পদ্ধতি, কোনো ধর্মীয় বা মতাদর্শভিত্তিক ব্যবস্থা নয়। তাই ইসলামী ব্যাংক কোনো বিশেষ ধর্মের ব্যাংক নয় বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘পুঁজিবাদ চর্চার ক্ষেত্রে আমরা যেমন এর উদ্ভাবকের জাত বিচার করি না। বিবেচনা করি এর মধ্যে কোনো কল্যাণ আছে কি না। সেভাবে, আমরা ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাংকিং অংশ হিসেবে। ধর্মীয় মতাদর্শ (ডকট্রিন) হিসেবে নয়।’ আবদুল মান্নান বলেন, বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের আমানত গ্রাহকের সংখ্যা ৭৩ লাখ। সংগৃহীত আমানতের পরিমাণ ৪১ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১২ সালে আমানত গ্রাহক বেড়েছে ১৯ লাখ, আমানত বেড়েছে সাত হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনিয়োগ, আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্য ও রেমিট্যান্স আহরণসহ ব্যবসায়িক সব সূচকেই অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকটির বর্তমান বিনিয়োগ ৩৯ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক শতাব্দী প্রাচীন আর্থিক ম্যাগাজিন ‘দি ব্যাংকার’ বিশ্বের এক হাজার শীর্ষ ব্যাংকের তালিকায় প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। ‘কল্যাণমুখী ব্যাংকিং ধারার প্রবর্তক’ ইসলামী ব্যাংকের এই স্লোগানও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর লুৎফর রহমান সরকারের দেওয়া। ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর লুৎফর রহমান এ ব্যাংক সম্পর্কে যতটা জেনেছেন তার আগে এতটা জানার সুযোগ ছিল না। আবদুল মান্নান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর লুৎফর রহমান সরকার গভর্নর হওয়ার আগে ১৯৮৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে ইসলামী ব্যাংকের বিপক্ষে কথা বলেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি এই ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী হন। এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি সাত বছর এ ব্যাংক চালিয়েছেন। এই ব্যাংক থেকে গিয়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হয়েছিলেন। গভর্নর হওয়ার পর তিনি বলতেন, ‘আমি সারা জীবন ব্যাংকিংয়ের যে আদর্শকে লালন করেছি, প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তা পাইনি। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকে আমি সে ধরনের ব্যাংকিং ধারা দেখতে পেয়েছি।’ আবদুল মান্নান আরো বলেন, ‘এ ব্যাংক সম্পর্কে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ব্যাংক, কোনো বিশেষ দল, মত, পথ, শ্রেণী, পেশা বা গোষ্ঠীর ব্যাংক নয়। এই ব্যাংক জনগণের জন্য কাজ করছে। ব্যাংকটি শুরুর সময় এতে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৭০ শতাংশ। এখন বিদেশি অংশীদারদের বিনিয়োগ ৬৩ শতাংশে নেমে এসেছে। বাকি ৩৭ শতাংশ বিনিয়োগের মধ্যেও কোনো দলের অংশীদারি নেই। আবদুল মান্নান জানান, ইসলামী ব্যাংকের প্রাথমিক বিনিয়োগের ৭০ শতাংশ বিদেশি শেয়ার ছিল ১৩টি প্রতিষ্ঠান ও দুজন ব্যক্তির কাছে। এর মধ্যে বড় একটি অংশই ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি)। তারাই প্রথম এ দেশে এসে এখানকার ব্যাংকিং খাতের ওপর জরিপ করে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করতে এগিয়ে আসে। বর্তমানে এখানে তাদের সাড়ে ৭ শতাংশ ছাড়াও দুবাই ইসলামী ব্যাংক, কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস, বাহারাইন ইসলামী ব্যাংক এবং লুক্সমেবার্ক ইসলামী ব্যাংকের কাছেও শেয়ার রয়েছে। কুয়েতের তিনটি মন্ত্রণালয়ও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যে সকল বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ ব্যাংকের শেয়ার কিনেছে তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জেপি মর্গানও রয়েছে। আবদুল মান্নান জানান, বাংলাদেশ সরকারেরও ৫ শতাংশ শেয়ার ছিল এ ব্যাংকে। বর্তমানে এ ব্যাংকের সর্বোচ্চ শেয়ার রয়েছে সরকারি সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছে। ব্যক্তি হিসেবে সর্বোচ্চ শেয়ার রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক নূরে আলম সিদ্দিকীর কাছে। ইসলামী ব্যাংকে জামায়াতে ইসলামীর শেয়ার সম্পর্কে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলাম বা অন্য কোনো দলের কাছে এই ব্যাংকের কোনো শেয়ার নেই। ব্যক্তি হিসেবে ৬০ হাজার লোকের কাছে ৩৭ শতাংশ শেয়ার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের পরিচালনা পর্ষদেও এ দলের কেউ কখনো ছিলেন না। ইসলামী ব্যাংক রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থায়ন করে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যাংকটির শীর্ষ নির্বাহী বলেন, ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হয় সম্পূর্ণ পেশাদারত্বের ভিত্তিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে, দেশের সব আইনের মধ্যে থেকে আমরা বিনিয়োগ করি। সেখানে দল, মত, ধর্ম, শ্রেণী, পেশা, লিঙ্গ কোনো কিছুই বিবেচনা করা হয় না। সংখ্যালঘুদের মধ্যেও আমাদের প্রচুর বিনিয়োগ আছে। আশ্চর্য হলেও সত্য, আমাদের প্রথম বিনিয়োগ গ্রাহক ছিলেন একজন অমুসলিম। বর্তমানে এ ব্যাংকের হাজার হাজার অমুসলিম গ্রাহক রয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে জামায়াত-শিবির কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘অনেক সময় এ ধরনের অভিযোগ আসে। বিজ্ঞপ্তি ছাড়া আমরা কখনোই কোনো নিয়োগ দেই না। এ ছাড়া নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীকে বাছাই করা হয়। বাছাই প্রক্রিয়া এতটাই স্বচ্ছ যে এখানে যোগ্যতা না থাকলে কোনোভাবেই নির্বাচিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিয়োগ পরীক্ষায় কৃতকার্য না হওয়ায় আমার নিজের ভাতিজাকেও আমি এখানে চাকরি দিতে পারিনি।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মান্নান জানান, ইসলামী ব্যাংকের সাড়ে ১২ হাজার কর্মীর মধ্যে মুসলমান ছাড়া অন্য কোন সম্প্রদায়ের অংশ গ্রহণ নেই। নারী কর্মী রয়েছেন ৫০০ জন। তবে নতুন করে যেসব নিয়োগ হচ্ছে সেখানে অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের নিয়োগের বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অনেক আগে ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়নের একটি অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি পরিষ্কার করতে গিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, ইসলামের নামে যারা বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে, তারা ইসলামের বড় ধরনের ক্ষতি করছে। তাদের মাধ্যমে ইসলামের কোনো উপকার কোনো কালেই হয়নি। এটা নিষিদ্ধ। মুসলিম সমাজে তারা বিভাজন তৈরি করেছে। আমরা কোনো অবস্থাতেই জেনে শুনে বুঝে কখনো কোনো জঙ্গি লোকের সংশ্রব সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ দেইনি। এই ব্যাংকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিলকে তাল করার একটি প্রবণতা দেখা যায়।’ সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের কয়েকটি এটিএম বুথে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তারা যদি জানতেন, ইসলামী ব্যাংক কী এবং এই দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এই ব্যাংকের অবদান কতটুকু তাহলে আমি নিশ্চত এই ছেলেরা ইসলামী ব্যাংক রক্ষার জন্য কাজ করতেন, ভাঙচুরকে কোনো অবস্থাতেই সমর্থন করতেন না। তারপরও অভিযোগ আসছে কেন_এ প্রশ্নের জবাবে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি এটি একটি ভুল ধারণা। যারা এ অভিযোগ করেছেন, তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন, এ ব্যাংকের মালিকানা বা ব্যবস্থাপনায় কোথাও কোনো দলীয় বিষয় খুঁজে পাবেন না। এর কোনো সুযোগই এখানে নেই। আমাদের ব্যাংকের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো সংশ্রব বা সম্পর্ক নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যখন প্রথম ইসলামী পদ্ধতিতে ব্যাংকিং শুরু করি, তখন অনেকেই বলেছিলেন অন্যান্য ব্যাংক সরাসরি সুদের ব্যবসা করে, ইসলামী ব্যাংক একটু ঘুরিয়ে করে। কাজটা একই। তাঁরা আমাদের কাছে এসেছেন, তাঁরা দেখেছেন যে তাঁদের ধারণা সঠিক নয়। ‘প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থায় টাকাকে পণ্যের মতো বেচাকেনা করা হয়। অথচ দুনিয়ার কোনো অর্থনীতিবিদ টাকাকে পণ্য বলেননি। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের দর্শন হচ্ছে_আমরা টাকাকে বেচাকেনা করব না। পণ্যের বেচাকেনা করব। প্রকৃত মালামাল (রিয়েল গুডস) নিয়ে আমরা কারবার করব। সেটা অংশীদারত্বের ভিত্তিতে হোক কিংবা বেচাকেনা পদ্ধতিতে হোক কিংবা ইজারা বা ভাড়া ভিত্তিতেই হোক।’ এভাবেই ইসলামী ব্যাংকের ধারার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন আবদুল মান্নান। ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল অনুসরণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণের মডেলটি কোনো ধর্মীয় আদর্শের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়নি। আমরা দেখলাম এই প্রক্রিয়ায় সহজে অনেক মানুষের কাছে পেঁৗছানো যায়। এটা দেখে আমরা এই মডেলকে অনুসরণ করেছি, তবে ইসলামী পদ্ধতিতে। ক্ষুদ্র ঋণের ৮৫ শতাংশ ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। দেশের ১৬ হাজার গ্রামে ব্যাংকটি কাজ করছে। ইসলামী ব্যাংক সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়নের বিষয়টি সচেতনভাবে বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগ করে বলে জানান আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘গত ৩০ বছরে আমরা তামাকে এক পয়সাও বিনিয়োগ করিনি।’ আমানতকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ (৭৩ লাখ আমানতকারী ও ছয় লাখ বিনিয়োগ গ্রাহক)। হিসাব খোলা এবং হিসাব বন্ধের বিষয়টি স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে। এর ব্যত্যয় এখন পর্যন্ত ঘটেনি। কিছু কিছু পত্রিকায় লেখা হয়েছে, দু-একজন গ্রাহক ঘোষণা দিয়ে হিসাব বন্ধ করছেন। তাঁদের আবেগকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু তারা যদি আমাদের ভেতরে ঢুকে দেখতেন, তবে তাঁদের ধারণা পাল্টে যেত। ব্যাংকের আর্থিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আর্থিকভাবে খুবই সুসংহত এ ব্যাংক। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক পরিচালনার ফলে ব্যাংকটি আন্তব্যাংক লেনদেন বাজার থেকে ধার করে না। সিআরআর ও এসএলআর দুটোতেই বরাবরাই আমরা স্বাচ্ছন্দ্য অবস্থানে রয়েছি। বর্তমানে আমাদের মুদ্রার মজুদ ১৩ শতাংশের উপরে রয়েছে। যেখানে ৬ শতাংশ থাকলেই হয়। এ ছাড়া ব্যাংকটির পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে। তাই এ ব্যাংকের গ্রাহকদের ঘাবড়ানোর কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’ দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসলামী ব্যাংকের বিদেশি উদ্যোক্তারা উদ্বিগ্ন কি না_এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের পরিচালনা পর্ষদের সভা হয়েছে, সেখানে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের, কুয়েত, সৌদি আরবসহ অন্য অংশীদারদের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। আমাদের ২০১২ সালের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দায়িত্বশীল মহলের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁরা যেন এমন কোনো ঈঙ্গিত না দেন বা ভিত্তিহীন কোনো কথা না বলেন যাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ব্যাংক নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়। কারণ দেশের ভেতরের লোকদের সহজে বোঝানো যাবে, কিন্তু বিদেশের করেসপনডেন্ট, আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পক্ষ যদি ইসলামী ব্যাংকের ব্যাপারে এ সব অপপ্রচার আমলে নিয়ে এর ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সেটা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। দলাদলির ক্ষেত্রে যাই ঘটুক না কেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল মহল সচেতন ভূমিকা পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
http://www.bd-pratidin.com/?view=details&type=single&pub_no=1012&cat_id=1&menu_id=1&news_type_id=1&index=13&archiev=yes&arch_date=24-02-2013
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম: http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=de7841abc5af8fb48bc6e5bdd655ca27&nttl=20130222073424176225
© 2023 banglarbarta.com All Right Reserved. Designed and Developed by WEBSBD
Login to your account below
Remember Me
Please enter your username or email address to reset your password.
- Select Visibility -PublicPrivate
Discussion about this post