মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন (সেলিম) ইউএসএ নিউজ, নিউইয়র্ক : নিউজার্সির বাঙালী অধ্যুষিত প্যাটারসনে গত ৩০ জুন উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো প্রবাসী মেলা ও সাংকৃতিক উৎসব। নিউজার্সিতে বাঙালিদের প্রাণের উৎসব প্রবাসী এ মেলায় কয়েক হাজার বাংলাদেশী অংশ নেন। মেলায় ভীন দেশীদের উপস্থিতিও ছিলো লক্ষণীয়। প্রবাসী বাঙালী কল্যাণ সমিতি (প্রবাকস) প্যাটারসনের সেন্ট মেরিস চার্চের পার্কিং লটে আয়োজন করে বর্ণাঢ্য এ উৎসবের। মেলা আয়োজনের মাধ্যমে আমেরিকায় জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম সহ মূলধারার কাছে চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয় বাঙালী সংস্কৃতিকে।
মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্যাটারসন সিটির মেয়র জেফরি জোনস। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কীনোট স্পকিার হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিউজার্সী থেকে নির্বাচিত ইউএস সিনেটর বব মেনেন্দেজ। প্যাটারসনে এ প্রথমবারের মতো কোন মেলায় কোন ইউএস সিনেটর উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখলেন। ইউএস সিনেটর বব মেনেন্দেজ তার বক্তব্যে বাংলাদেশের যে কোন ব্যাপারে ইউএস সিনেটে তার প্রয়োজনীয় সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি মেলা অনুষ্ঠানকে চমৎকার আখ্যায়িত করে এর আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
অনষ্ঠানে স্টেট সিনেটর নেলি পো‘র পক্ষ থেকে প্রবাকসকে সাইটেশন প্রদান করেন স্টেট সিনেটর অফিসের কর্মকর্তা ক্যাথি কে।
প্রবাকস সভাপতি বুস্তান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ও একুশে টেলিভিশনের যুক্তরাষ্ট্রের চীফ কো-অর্ডিনেটর দেওয়ান বজলুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, হ্যালডন মেয়র ডমিনিক স্ট্যাম্পন প্রসপেক্টপার্ক মেয়র মোহাম্মদ খায়রুল্লাহ, প্যাটারসন ২ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলম্যান মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ফয়সাল প্রমুখ। বক্তারা প্যাটারসনে এ সুন্দর আয়োজনের জন্য প্রবাসী বাঙালী কল্যাণ সমিতি (প্রবাকস) এর কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান। মেলায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্যারেন্টস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোশারফ হোসেন, আভার প্রেসিডেন্ট মেহের চৌধুরী, লীগ অব আমেরিকার সেক্রেটারী শাহীন চৌধুরী, বাংলা টিভির পরিচালক মীর শিবলী, ইটিভির বিজনেস এক্সিকিউটিভ জসীম চৌধুরী প্রমুখ।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন শামীম, পারেক চৌধুরী, বিশ্বজিত দে বাবলু, এ কে মজুমদার, আজিজুর রহমান রানা, জাবেদ খান, এনায়েত করিম খোকা, জায়েদ চৌধুরী, মোশাররফ আলম, মতিউর খন্দকার, রেজাউল করিম, রনি চৌধুরী, আনোয়ার চৌধুরী প্রমুখ।
মেলা মঞ্চে বাংলাদেশী শিল্পীরা লোকসঙ্গীত, নৃত্য, সহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। দেশ ও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা নাচে গানে মাতিয়ে রাখেন আগত দর্শক-শ্রোতাদের। বিখ্যাত বাউল শিল্পী ফকির সাহাবুদ্দিন, ফারজানা পপি, শাহ মাহবুব এর গান দর্শকরা প্রাণভরে উপভোগ করেন। এ ছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশন করেন আবদুল আলীম, শামীম আহমদ সহ স্থানীয় শিল্পীরা। গভীর রাত পর্যন্ত দর্শক শ্রোতারা মন্ত্র মুগ্ধের মতো উপভোগ করেন অনুষ্ঠানমালা।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন শারমিন রেজা ইভা । মেলার মিডিয়া পার্টনার ছিল একুশে টেলিভিশন। মিডিয়া কাভারিজের দায়িত্বে ছিলেন একুশে টেলিভিশনের রিজিওনাল চীফ রিপোর্টার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন (সেলিম)।
মেলায় ছিল মজাদার খাবার, দেশীয় পিঠা, শাড়ী, গয়না সহ বিভিন্ন রকমের ষ্টল। স্টল গুলোতে ছিলো উপছে পড়া ভীর। প্রচুর বেচা-কেনায় স্টল মালিকরাও ছিলো বেজায় খুশি। সামারের প্রচন্ড তাপ দাহকে উপেক্ষা করে দুপুর থেকেই দূর দূরান্ত থেকে মেলাতে আসতে থাকে মেলা প্রিয় বাঙালীরা। সন্ধ্যে নাগাদ কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় বিশাল মাঠটি। মেলায় ছিল আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্রও। সবাই কে অবাক করে মোহাম্মদ রমা নামের এক আফগানী র্যাফেল ড্র’র প্রথম পুরস্কারটি জিতে নেন।
প্রবাসী এ মেলার স্পন্সর ছিলো শেফা ফার্মেসী, টটোয়া সুপার মার্কেট, ইউনিয়ন সুপার মার্কেট, বাংলা টাউন এবং কামাল আহমদ ও পারভনি আউয়াল। স্পন্সররা র্যাফেল ড্র বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
রিপোর্ট : মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন (সেলিম)
ইউএসএ নিউজ অনলাইন, নিউইয়র্ক।
Discussion about this post