মোশাররফ হোসেন শুভ, ময়মনসিংহ ব্যুরো:- পাহাড়ী ঢলের পানি নিয়ন্ত্রন করে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া ও নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরের ৭টি ইউনিয়নের ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল করে দেশের অর্থনৈতিক ও খাদ্য ভান্ডরের এক বিশাল প্রকল্প একটি কুচক্রি মহলের কারনে বেস্তে যেতে বসেছে। মহলটি দেশীয় অশ্রে সজ্জিত হয়ে গভীর রাতে পাহারাদারকে বেঁেধ রাবার ড্যাম কেটে দিয়েছে। এব্যাপারে নেতাই নদী রাবার ড্যাম সমবায় সমিতির সভাপতি বাদী হয়ে ধোবাউড়া থানায় মামলা দায়ের করেছে। জানাগেছে, গত ২৪ মার্চ রাত আনুমানিক ২টায় ১০/১১ জনের একদল সন্ত্রাসী দল রামদা, কিরিচ, ছোড়া, হলঙ্গা, লাঠি সহ দেশীয় অশ্রে সজ্জিত হয়ে রনসিংহপুর গ্রামে নেতাই নদীর রাবার ড্যাম এর বিভিন্ন স্থানে রামদা ও কিরিছ দিয়ে কেটে ফেলে। এসময় তারা নৈশ্য পহরী তারা মিয়াকে বেধে রাখে। নৈশ্য পহরী ডাক চিৎকার করতে চাইলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয় । জানাগেছে, রাবার ড্যাম স্থাপন করে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার ১নং দক্ষিন মাইজপাড়া, ২নং গামারীতলা, ৩নং ধোবাউড়া, ৮নং পুরাকান্দুলিয়া, গোসগাঁও ইউনিয়নের অংশিক ও নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ১নং কুল্লাপাড়া, ৭নং গাও কান্দিয়া ইউনিয়নের ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হচ্ছে । গামারীতলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মমতাজুর রহমান জানান, রাবার ড্যাম স্থাপনের পর ৫ হাজার হেক্টরের উপর জমিতে পানি দিয়ে ফসল ফলানো হচ্ছে। উজানের চাহিদা মেটানোর পর এমনিতেই ভাটিতে পানি দেয়া হয়। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল রাবার ড্যাম কেটে দেশের সম্পদের বিশাল ক্ষতি করে দিয়েছে। ২নং গামারীতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আ: ওয়াহেদ তালুকদার জানান, দেশের এই সম্পদের উপর কৃষক নির্ভরশীল। যারা এ গৃন্য জগন্য কাজটি করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। সরকারের ৫/৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হওয়া রাবার ড্যামটি ব্যবহার করে অল্প খরচে কৃষক অধিক ফসল ফলান। আগে ৫/৭ হাজার টাকা ব্যায় করে ১ একর জমিতে পানি সেচ দেয়া হতো। বর্তমানে মাত্র ২ শত টাকা ব্যায় করে ১ একর জমিতে অনায়াসে ফসল ফলাতে পাড়ছে। তিনি তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্বে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারে উচ্চ মহলের দৃষ্টি কামনা করেন। মাঝহারুল ইসলাম খান জানান, পাহাড়ী ঝরনা হতে পানি আসে । সেই পানি ব্যবহার করার জন্য সরকার একটি সুন্দর ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: আজিজুল হক খান জানান, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই একটি মহল এমন ন্যক্কার জনক কাজ করতে সাহস করেছে। সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্বে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। নেতাই নদী রাবার ড্যাম সমবায় সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম খান জানান, জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে রাবার ড্যাম আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। যারা গভীর রাতে এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ভভিষ্যতে আরো বড় ঘটনা ঘটাতে পারে। পাহারাদার তারা মিয়া জানান, গভীর রাতে বেশ কয়েক জন লোক এসে আমোকে হাত পা বেধেঁ রাবার ড্যাম কেটে ফেলে । আমি ডাক চিৎকার করতে চাইলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। রাবার ড্যামটি না কাটার জন্য আমি তাদের হাতে পায়ে ধরেছি। তারা আমার কথা রক্ষা করেনি। মাইদুল হক খান জানান, সরকারের সাড়ে ৫কোটি টাকা ব্যায়ে প্রতিষ্ঠিত বিশাল এ প্রকল্পটি ব্যাবহার করে ২ লাখ মানুষ সুবিধা পাচ্ছে । অধিক ফসল উৎপাদন করে দেশের খাদ্য সমস্যা মিটাচ্ছে। একটি মহল এর রোষানলে পড়ে দেশের একটি বিরাট প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে। হারুন অর রশিদ খান জানান, রাবার ড্যাম থাকায় হাজার হাজার একর জমিতে ফসল ফলে। এটি কেটে দেয়ায় ব্যাপক এলাকার ফসল নষ্ট হবে। এব্যাপারে নেতাই নদী রাবার ড্যাম সমবায় সমিতির সভাপতি মো: আব্দুল সাত্তার বাদী হয়ে নজর আলী নজর, কামাল হোসেন, আ: রশিদ, সুজন মিয়া, আবুল বাশার, বদির মিয়া, আবু বক্কর, দুদু মিয়াকে আসামী করে ধোবাউড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে যথাযত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি ধোবাউড়া উপজেলার চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন জােিনয়েছেন। বিষয়টি অবহতি করে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সহ বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি প্রেরন করেছেন। এ ব্যাপারে ধোবাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আলিমুজ্জামান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যৌথ ভাবে পদক্ষেপ নিলে সমস্যার সমাধান হবে। রাবার ড্যামে কে বা কারা ৩/৪টি স্থানে কাটাকাটি করেছে। ১টি স্থানে বড় কাটার চিন্থ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামী ধরার চেষ্টা চলছে। সরকারী সম্পদ নষ্ট যাতে না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সর্বাত্বক প্রচেষ্টা থাকবে।
Discussion about this post