হাট থেকে কেনা ধান বিএডিসির মোড়কে ভরে বীজ হিসেবে বাজারজাতকরণের অভিযোগ
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার টেবুনিয়া বিএডিসি বীজ খামারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্র্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খামারের উৎপাদনের নামে বিভিন্ন হাট বাজার থেকে কেনা ধান বিএডিসির মোড়কে প্যাকেটজাত করে উন্নতমানের বীজ হিসেবে বিএডিসির ডিলারদের মাধ্যমে সরবরাহ করায় কৃষকরা ভেজার বীজ কিনে প্রতারিত ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এ কারণে কৃষকরা কাংখিত ফসল ফলাতে পারছে না। ব্যাহত হচ্ছে দেশের খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিতরণ কার্যক্রমে দুর্ণীতির মাধ্যমে খামারের কতিপয় কর্মকর্তা ও স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী বীজ ব্যবসায়ী কোটিপতি বনে গেছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, টেবুনিয়া কৃষি ফার্মের উপ-পরিচালক জামিলুর রহমান, বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক আনন্দ চন্দ্র, বীজ প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আশরাফ সিদ্দিকী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ডা: হাবিবুর রহমান হাবিব, কাউসার হোসেন, আলতাফ হোসেন ও লিয়াকত হোসেন যোগসাজশ করে দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগে প্রকাশ। টেবুনিয়ার পূবালী ব্যাংকে ডা. হাবিবুর রহমানের নামে একাউন্ট রয়েছে। উল্লেখিত একাউন্ট এর লেনদেন তদন্ত করলে অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি বেড়িয়ে আসবে বলে সুত্র জানায়।
সুত্র জানায়, টেবুনিয়া বীজ উৎপাদন খামারের কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোনের অধীন কৃষি খামারে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করণ করে বিএডিসির ডিলারদের মাধ্যমে সারাদেশে বিতরণ করা হয়। এ অঞ্চলের কৃষকরা বিএডিসির সরবরাহকৃত এই বীজ উন্নত ও ভাল মনে করে জমিতে রোপন করে অধিক ফলন পাওয়ার আশায়। কিন্ত রোপন করার পর কৃষকের সেই আশার গুড়ে বালু পড়ে। বীজ উৎপাদন খামারের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানায়, টেবুনিয়া বীজ উৎপাদন খামারের কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোনের অধীনে চলতি বছর ইরি – বোরো মৌসুমে ২ হাজার ৩‘শ টন ধান বীজ সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার পরিমান ধান বীজ উৎপাদনের জন্য এ জোনের অধীনে এক হাজার একর জমিতে ধানের চাষাবাদ হওয়ার কথা। কিন্ত কাগজে কলমে যে পরিমান জমিতে ধান বীজ উৎপাদনের কথা উল্লেখ করা হয় বাস্তবে সে পরিমান জমিতে বীজ উৎপাদনের আবাদ করা হয় না। ফলে কন্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোন এলাকায় আবাদকৃত জমিতে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয় স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় দুর্নীতিবাজ বীজ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে হাট বাজার থেকে নিম্নমানের ধান ক্রয় করে। সুত্র আরও জানায়, কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোন এলাকার জমিতে বীজ উৎপাদনের আবাদ ও বীজ প্রক্রিয়াজাতের জন্য রয়েছে সুনির্দিষ্ট নিয়ম পদ্ধতি। নিয়ম অনুযায়ী কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোন অফিসের ৭ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদ মর্যাদা কর্মকর্তা কর্তৃক মাটি পরীক্ষা করার মাধ্যমে বীজ উৎপাদনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়। তারপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিয়ে তৈরী হয় একটি ব্লক বা স্কীম। স্কীমের আওতাভুক্ত জমি মালিকদের নিয়ে গঠন করা হয় একটি সমিতি বা দল। সমিতির সদস্যদের ভেতর থেকে একজনকে স্কীম ম্যানেজার নির্বাচিত করা হয়। এই স্কীম ম্যানেজার তার স্কীমের সদস্যদের জমিতে বীজ উৎপাদন বিষয়ে কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোন অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। নিয়মানুযায়ী স্কীমের আওতাভুক্ত জমি মালিকরা কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোন অফিসের পরামর্শের বাইরে জমি আবাদ করতে পারেন না। তাদের জমিতে বীজ উৎপাদনে চাষাবাদের জন্য কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোন অফিস কর্তৃক বীজ সারসহ যাবতীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়। মৌসুমী আবাদ শেষে উৎপাদিত ফসল বীজ উপযোগী করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় বিএডিসির নিজস্ব চাতালে কণ্ট্রাক গ্রেয়ার্স জোন অফিসের কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে। তারপর তা বীজ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় খামারের ভেতরই অবস্থিত বীজ প্রত্যায়নকারী সরকারী কর্মকর্তার অফিসে। বীজ প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রত্যায়িত এবং বীজ হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার পর তা নেয়া হয় বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ গোডাউনে। সেখানে খামারে উৎপাদিত এসব বীজ জমা নেয়া হয় স্কীমের আওতাভুক্ত জমির মালিকদের নামে। কারণ স্কীমের বাইরে আবাদকৃত জমির ফসল বিএডিসির গোডাউনে বীজ হিসেবে গ্রহণ করার নিয়ম নেই। কণ্ট্রাক গ্রোয়ার্স জোনের স্কীম বা ব্লকের অধীন জমির মালিক কর্তৃক উৎপাদিত বীজ গোডাউনে নেয়ার পর বিএডিসির ট্রেডমার্ক মুক্ত মোড়কে প্যাকেটজাত করা হয়। এরপর এ সব বীজ বিএডিসির ডিলারদের মাধ্যমে সারাদেশে বাজরজাত করা হয়। টেবুনিয়া বীজ উৎপাদন খামারে এসব নিয়ম নীতি অনুসরনে ব্যাপক দুর্নীতির নেয়া হচ্ছে। দুর্নীতি মাধ্যমে অসাধু কর্মকর্তা ও প্রভাশালী ব্যবসায়ীরা অবেকেই ইতোমধ্যে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন। অপর দিকে এদের দুর্নীতির কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে লাখ লাখ কৃষক পরিবার। ব্যহত হচ্ছে দেশে খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। বর্তমানে টেবুনিয়া বীজ উৎপাদন খামার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে হারিয়ে ফেলছে তার অতীত ঐতিহ্য। অথচ এসব দুর্নীতিবাজদের কিছুই হচ্ছে না। তারা চলছে দাপটের সাথে। রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অবস্থা দেখে মনে হয় এ যেন মগের মুল্লুক। এসব দেখার কেউ নেই ; এদের ধরারও কেউ নেই।
এ ব্যাপারে টেবুনিয়ার কৃষি বীজ খামারের উপপরিচালক জামিলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক শুনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
পাবনা ঈশ্বরদীতে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের পর হত্যা
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা ঈশ্বরদীর সাড়া ঝাউদিয়া গ্রামের একটি আখ ক্ষেতে শনিবার দুপুরে এক শিশুকে ধর্ষনের পর হত্যা করেছে কে বা কারা। নিহত শিশুর নাম মিষ্টি খাতুন (৭)। সে সাঁড়া ঝাউদিয়া গ্রামের মোস্তাক হোসেনের মেয়ে এবং সাঁড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। মিষ্টির পরিবার জানায়, শুক্রবার বিকাল থেকে শিশুটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজা খুজির পরেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর এলাকায় মাইকং করেও তাকে পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ঐ গ্রামের একটি পাট ক্ষেত থেকে এলাকাবাসীর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মিষ্টির লাশ উদ্ধার করে। ঈশ্বরদীর থানার এএসআই আখতার হোসেন জানান, এলাকার কতিপয় উচ্ছংখল ছেলেরা শিশুটিকে ধর্ষণ করার পর নিজেদের রক্ষা করতে হত্যা করে ফেলে রেখে চলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা হয়েছে।
পাবনা বেড়ায় পুলিশের হাতে ডাকাত গ্রেফতার
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা বেড়া থানা পুলিশ তারেক (৩০) নামে এক ডাকাতকে শনিবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৬টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই সরকার জানান, শনিবার দিনগত রাত ১২ টায় হাটুরিয়া বাজার থেকে তারেককে গ্রেফতার করা হয়। সে দীর্ঘদিন পলাতক জীবন যাপন করছিল। তারেক বেড়া উপজেলা হাটুরিয়া এলাকার তয়জাল হোসেনের ছেলে।
Discussion about this post