পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনায় শান্তিুপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হচ্ছে। ছোটখাট দু-একটি ঘটনা ছাড়া জেলায় বিশেষ কোন খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদী দল বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীর ডাকে সারাদেশ ব্যাপী সকাল-সন্ধা স্বতঃফুর্তভাবে হরতাল পালিত হচ্ছে। জেলায় হরতাল চলাকালে দুপুর সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার ক্যালিকো কটন মিল এলাকায় হরতালকারীরা পিকেটিং করাকালে পাবনায় আইন শৃংখলাবাহীনি সদস্যরা পিকেটারদের হটিয়ে দিতে সেখানে অগ্রসর হয়। এ সময় পিকেটাররা মহাসড়ক থেকে নেমে গ্রামের দিকে যেতে থাকে। আইনশৃংখলাবাহিনীও পিকেটারদের পিছু নেয়। পিকেটাররা দৌড়ে একটি মাঠের মধ্যে অবস্থান নিলে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে ল্য করে ৬ রাউন্ড গুলি বর্ষন করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর আইনশৃংখলাবাহিনী জহিরপুর মহেন্দ্রপুর,রাজাপুর নিরিহ গ্রামবাসীদের ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে। পুলিশ তল্লাশির সময় কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর ও মহিলাদের মারপিট করে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। রাজাপুর গ্রামের ডাঃ মোঃ ফখরুদ্দিনের বাড়ি, শাহাদত, আঞ্জু ও আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে প্রবেশ করে রাইফেল ও বুট দিয়ে দরজা ও বাড়ির বেড়া ভাংচুরসহ বাড়িতে প্রবেশ করে মহিলাদেরকে লাঞ্চিত করে। প্রশাসনের আক্রমনে ২মহিলা আহত হয় বলে এলাকাবাসী জানায়। এ ছাড়া পুলিশের ছোড়া গুলিতে মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে মুকাই(৪০) নামে এক কৃষক আহত হয়। পুলিশি গ্রেফতারের ভয়ে মুকাইকে স্থানীয় একটি কিনিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। আইনশৃংখলা বহিনী রঞ্জু(১৫) ও হৃদয়(১৫) নামে একটি বেসরকারী টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের ৩য় পর্বের দুই ছাত্রকে বেদম প্রহার করে। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় গ্রামবাসীর প্রতিরোধেরে মুখে ছেড়ে দেন। পুলিশের পিটুনিতে ঐ দুই ছাত্র গুরত্বর আহত হন। এদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর হঠাৎ গ্রামে প্রবেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজাপুর, জহিরপুর,মহেন্দ্রপুর ও দিয়ার রাজাপুর গ্রামের হাজার হাজার নারী পুরুষ লাঠি, ঝাটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যদের চারদিকে ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি এবং কাউকে গ্রেফতার করা হবে না মর্মে এলাকাবাসীকে শান্ত করার পর তারা সেখান থেকে ফিরে আসেন। এরপর গ্রামের মহিলারা ঝাটা, লাঠি, বটি ও কাচি নিয়ে úাবনা-নগরবাড়ি মহাসড়কের ক্যালিকো কটন মিলের সামনে অবস্থান গ্রহণ করে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তারা বলেন, খুনি হাসিনা আমাদের ছেলেদের গুলি করে পাখির মত হত্যা করছে। আবার আমাদের গ্রামে এসে নিরিহ সাধারন জনগণকে ধরে নিয়ে যেতে চাই।
তাই আমরা এসব জুলুম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় নামছি। এ সময় উপস্থিত মহিলারা ইসলামকে রা ও হাসিনার সরকারের পতনের জন্য শ্লোগান দেয় এবং তারা ঝাটা ও সেন্ডেল উচিয়ে আইনশৃংখলাবাহিনীর প্রতি ঘৃনা প্রদর্শন করেন। অবস্থার বেগতিক হলে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা সেখান থেকে শহর অভিমুখে চলে আসতে বাধ্য হন। দুপুর ২টা পর্যন্ত মহিলারা রাস্তায় অবস্থান করতে থাকলে স্থানীয় প্রধানদের অনুরোধে মহিলারা রাস্তা থেকে সড়ে আসেন। আরো জানা যায়, আইনশৃংখলা বাহিনী গ্রামে প্রবেশের পুর্বে বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে প্রশানের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর ঘোষনা েিদত পারেনি বলে মহিলারা জানান। ফলে একটি বড় ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা থেকে তারা মুক্তি পেয়েছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমেভাব বিরাজ করছে। গ্রামবাসী এও বলছে পুলিশ বিনা কারনে এবার গ্রামে প্রবেশ করে হয়রানি করার চেষ্টা করলে আমরা সর্ব শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। এদিকে শহরের বাংলাদেশ ঈদগাহর সামনে যুবলীগের কতিপয় সদস্যরা সেখানে জিয়াউর রহমানে ছবি ও স্থাণীয় নেতৃবৃন্দের ব্যনার ফেষ্টুন ও স্থানীয় ছাত্রদল অফিস ভাংচুর করলে সেখানে আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আইনশৃংখলা বাহিনী সেখানে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। জেলার কোন বাস টার্মিনাল থেকে গাড়ি ছেড়ে যায়নি এবং আসেনি। সরকারী অফিস আদালত খোলা থাকলেও উপস্থিতি ছিল চোখে না পড়ার মত। শহরে দোকানপাট বন্ধ ছিল। পাবনা ঈশ্বরদী থেকে ট্রেন সময়সূচী অনুযায়ী ছেড়ে যায়। তবে আতংকে মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। জেলার বেশিরভাগ বাসিন্দা বেসরকারী সব টিভি চ্যানেলের দিকে দেশের পরিস্থিতির নজর রাখছিল। পাবনা শহরে হরতালের প-েবিপে মিছিল হয়েছে। গুরত্বপূর্ণস্থানে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের টহল জোরদার ছিল।
Discussion about this post