পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা ঈশ্বরদীতে আবারো একটি তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনের ইয়ার্ডে এই দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রেল সূত্র জানায় তেলবাহী ওই ট্রেনটি খুলনা থেকে পার্বতীপুর যাচ্ছিল। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংসন স্টেশনের ইয়ার্ডে দুর্বল রেল লাইনের কারনেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল সূত্র জানিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সুমন হোসেন জানান, ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশন ইয়ার্ডের মধ্যস্থানে লাইনচ্যুত হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগস্থল ঈশ্বরদী রেলগেট দিয়ে সব ধরনের ট্রেন চলাচল এবং রেলগেট বন্ধ হয়ে পড়ায় উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রায় ২ ঘন্টা পর বিকল্প পথে রেল ও সড়ক পথের ট্রেন ও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা সূজিত কুমার বিশ্বাস ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন কলকাতা থেকে ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আউটার সিগনালে ২ ঘন্টা থামিয়ে রাখা হয়। দুর্ঘটনা কবলিত তেলবাহি ট্রেন উদ্ধারের পর ওই ট্রেনটিকে বিকল্প লাইনে ঢাকা পাঠানো হয়। এছাড়া ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহী ও খুলনা অভিমুখী একাধিক লোকাল ও আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলও বিঘিœত হয়েছে বলে রেলওয়ের বিস্বস্থ সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাবনা ঈশ্বরদীর খাদ্য গুদামে চাউল সরবরাহে অনিয়মতান্ত্রিক ৮০৫ টন বরাদ্দ দানের অভিযোগ
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ সরকারের চলতি বোরো চাউল সংগ্রহ অভিযানে পাবনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় হতে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ঈশ্বরদীর প্রায় ১২টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চাউল সরবরাহের বরাদ্দের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই মিল-খোলার বিপরীতে-২ বার, মিল-খোলার অস্তিত্ব নেই এমন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ৮০৫ মেট্রিক টন চাউল গুদামে সরবরাহের জন্য বরাদ্দ দান করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় হতে ১৩.০৪.৭৬০০.০০৮.৪৫.০০১.১২ নং স্মারকে গত ২৭ শে মে তারিখে প্রেরিত তালিকার মাধ্যমে আদেশ দেয়া হয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বরাদ্দের তালিকা বিশ্লেষণ করে চাউল কল মালিক গ্র“প সূত্র জানান, তালিকার ১৭ নং ক্রমিকের মানিকনগর এলাকার মেসার্স রতন ট্রেডার্স এর মালিক মোঃ নজরুল ইসলাম একই মিল-খোলা দেখিয়ে ১১১ নং ক্রমিকে আবারও মেসার্স নজরুল ইসলাম চাউল কলের বিপরীতে যথাক্রমে ৬৭.১৯৫ এবং ৪৬.৯৪৪ মেট্রিক টন চাউল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। জেলা খাদ্র নিয়ন্ত্রক অফিস একই প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অনৈতিক ভাবে দু’টি মিল লাইসেন্স এবং ফুডগ্রেণ লাইসেন্স প্রদান করেছে। ২৩৭নং ক্রমিকে পিয়ারাখালী এলাকার মেসার্স আলহাজ্ব চাউল কলের নামে ৩৯.৫৮০ মেঃটন চাউল বরাদ্দ দেয়া হলেও মিলের কোন অস্তিত্ব খঁজে পাওয়া যায়নি। একইভাবে অস্তিত্বহীন দিয়ার বাঘইল এলাকার প্রোগ্রেসিভ রাইস মিলের জন্য ৭৩.৬৩৮ মেঃটন চাউল সরবরাহের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২৯৪ ক্রমিকের চরমিরকামারী এলাকার মেসার্স মোহাম্মদ আলী চাউল কলের অনুকূলে ৪৬.৯৪৪ মেঃটন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ আলী সরদার অনেক আগে ইন্তেকাল করার পর তার পুত্র শাজাহান আলী নাম পরিবর্তন করে। তালিকার ৪০৫নং ক্রমিকে আবারও এই মেসার্স মোহাম্মদ আলী চাউল কলের মিল-খোলার বিপরীতে মালিক শাজাহান আলীর নামে ৭৩.৬৩৮ মেঃটন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জানা যায়, শাজাহান আলী নিজের মিল খোলা বেপারীর নিকট ভাড়া দিয়ে অন্য একটি চাতালে মজুরের কাজ করেন। মেসার্স হোসনে আরা রাইস মিল মালিক শাহীন মালিথার একই মিল-খোলার বিপরীতে তালিকায় ৩১৮ ও ৪১০ নং ক্রমিকে ৩৯.৫৮০মেঃটন করে দুই দফায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২টি করে লাইসেন্স প্রদান করা নিয়ম বর্হিভূত হলেও অসৎ উদ্দেশ্যে অফিসের সাথে যোগসাজেশ করে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ২টি করে মিল ও ফুড গ্রেণ লাইসেন্স বানিয়ে দিনের পর দিন জালিয়াতি করে চলেছে। তালিকার ৪১৬ ও ৪১৭ নং ক্রমিকে দিয়াড় সাহাপুরের আশরাফ চাউল কল এবং চর সাহাপুরের সাত্তার চাউল কলকে ৭২.৭১৮ এবং ৬৯.০৩৬ টন বরাদ্দ দেয়া হলেও মূলতঃ এই মিলের এবং মালিক সাজেদুল ইসলাম ও ইমদাদুল হক নামে কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৩৬২নং ক্রমিকে চরমিরকামারী এলাকার মেসার্স আল-আমিন চাউল কলের অনেক আগে মিল ও লাইসেন্স ছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এখন সেখানে প্রাণ গ্র“প প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কে বা কারা এই মিলের নামে লাইসেন্স নবায়ন পূর্বক ৭৩.৬৩৮ মে:টন বরাদ্দ গ্রহণ করে চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে। মানিকনগরের সাত্তার চাউল কলের পূর্বে অস্তিত্ব থাকলেও এখন নেই। এই প্রতিষ্ঠানকে ৩৯.৫৮০ মেঃটন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৫১১ নং ক্রমিকে কামালপুরের চাচা-ভাতিজা চাউল কলের মিল আছে কিন্তু চাতাল নেই। অনিয়মতান্ত্রিভাবে এই প্রতিষ্ঠান ৩৯.৫৮০ টন বরাদ্দ গ্রহণ করে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। কৈকুন্ডা’র মেসার্স আতিয়ার রহমান চাউল কলের নামে ৫২৪ নং ক্রমিকে ৪৬.৯৪৪ মেঃটন চাউল বরাদ্দ দেয়া হলেও এই প্রতিষ্ঠানের চাতাল ছিল কিন্তু ধান সিদ্ধ করার বয়লার ছিল না। ৫২৯ নং ক্রমিকের মেসার্স মোল্লা রাইস মিলের পূর্বে মিল-খোলা ছিল কিন্তু এখন নেই। মালিক ওমর আলী জানেন না তার লাইসেন্স কে বা কারা নবায়ন করে ৩৯.৫৮০ টন চাউল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। জানা যায়, মিলের লাইসেন্স এবং ফুড গ্রেণ লাইসেন্স জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় হতে সরেজমিনে পরিদর্শন ও যাচাই-বাছাই পূর্বক প্রদান করার কথা। অথচ একই মিল-চাতালের পক্ষে নিয়ম না মেনে একাধিক লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দ আদেশ প্রদানের পূর্বে মিল চাতালের অস্তিত্ব ও ক্যাপাসিটি নির্ধারণের জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রধান করে স্থানীয় খাদ্য গুদামের প্রধান ও উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছিল। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় হতে চাউল সংগ্রহের জন্য বরাদ্দে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। সূত্র জানায়, এই কমিটি ও পাবনা জেলা অফিসের সাথে যোগসাজেশ করে পুকুর চুরির ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। কমিটির সদস্য তৎকালীন উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক বর্তমানে সাঁথিয়াতে কর্মরত ফজলুর রহমান সেল ফোনে জানান, ‘সময় কম থাকার কারণে পাঁচ শতাধিক চাতালে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা সম্ভব হয়নি।’ অর্থাৎ অফিসে বসেই যাচাই-বাছাই এবং ক্যাপাসিটি নির্ধারণ করা হয়েছে। জানা যায়, এব্যাপারে উপজেলা চাউল কল মালিক গ্র“পের একটি প্রতিনিধিদল ২ দফায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে অভিযোগ জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুর রকিবের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চাউল কল মালিক গ্র“প লিখিত ভাবে কোন অভিযোগ দেয়নি। এ ব্যাপারে তিনি ২টি প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ বাতিল করেছেন বলে জানান। অভিযোগের তালিকা পেলে তিনি আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। উপজেলা চাউল কল মালিক গ্র“প সুত্র জানায়, এসব ভূয়া বরাদ্দ প্রাপকরা বেশীর ভাগই মুলাডুলি সিএসডি গুদামে চাউল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বস্তা সংকটের কারণে বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো চাউল সরবরাহ করতে না পারলেও এসব জালিয়াতি প্রতিষ্ঠান গুদামের সাথে যোগসাজেশ করে বস্তা নিয়ে নিয়মিত চাউল সরবরাহ করছে। সূত্র জানায়, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময় প্রত্যেকের ছবি যুক্ত করতে হয়। এই ছবির সূত্র ধরে তদন্ত করলে জালিয়াতির সাথে জড়িতদের ধরা যাবে। জনৈক চাউল কল মালিক জানান, এই দূর্ণীতির সাথে জেলা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ও জড়িত। অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে জেলার বৃহত্তম চাউল উৎপাদনকারী এলাকা ঈশ্বরদী হতে গুদামে সরকারের চাউল সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আটঘরিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময়
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় নিজ কার্যালয়ে আটঘরিয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আটঘরিয়া প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবাদত আলী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মিয়া, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সভাপতি এইচ কে এম আবু বকর সিদ্দিক, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল গফুর মিয়া, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো. তৈয়াব আলী, সদস্য আরিফ আহমেদ ও সৈয়দ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। উক্ত মতবিনিময় সভায় আটঘরিয়া উপজেলার উন্নয়ন, আইনশৃংখলা, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হয়। এছাড়াও আটঘরিয়াবাসীর জন্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়ে বাস্তবায়নের দিকে এগুচ্ছে বলে ইউএনও সাংবাদিকদের জানালেন।
মৎস্য সপ্তাহে আটঘরিয়ায় রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা ফরমালিনের কুফল নিয়ে আলোচনা সভা
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ মৎস্য সপ্তাহের অংশ হিসাবে গতকাল মঙ্গলবার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে চিত্রাংকন ও কুইজ প্রতিযোগিতাসহ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন একদন্ত ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন। মৎস্য সংরক্ষন আইন ও ফরমালিন ব্যবহারের কুফল সম্বন্ধে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মৎস্য অফিসার রওশন আলম, একদন্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। অপরদিকে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ১ম সাদিয়া (৭ম), ২য় ঝরনা (৭ম) ও ৩য় আফসানা (৭ম) এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় ১ম রাসেল হোসেন (৯ম), ২য় উজ্জল হোসেন (৯ম) ও ৩য় রবিন হাসান (৯ম) স্থান অধিকারীদেরকে পুরস্কৃত করা হয়।
ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবে বার্ষিক বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের বার্ষিক বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই বিশেষ সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিন আহমেদ। সভায় সাধারণ সম্পাদকের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ কিরণ। এছাড়া সদস্য যাচাই বাছাই উপ-কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপন ও অনুমোদন, নতুন সদস্য তালিকা অনুমোদন, গত ১ বছরের আয়-ব্যায়ের হিসাব উত্থাপন ও অনুমোদনসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
পাবনা ঈশ্বরদী ইপিজেডে উৎপাদিত রহিম আফরোজের ‘গ্লোবাট ব্যাটারী’ জাপানের বাজারে রপ্তানির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা ঈশ্বরদী ইপিজেডে উৎপাদিত রহিম আফরোজের ‘গ্লোবাট ব্যাটারী’ জাপানের বাজারে রপ্তানির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঈশ্বরদী ইপিজেডে রহিম আফরোজের নিজস্ব প্ল¬্যান্টে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উক্ত কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত শিরো শাদোসীমা। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারী ইশুহারু সিনতো, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বোস এইচএসবিসি’র সিইও এন্ড্রু টিলকে, রহিমআফরোজ গে¬াব্যাট এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন এবং ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজনীন হোসেনসহ সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, রহিমআফরোজ গ্লে¬াব্যাট লিঃ অ্যাডভান্স টেকনোলজি মেইনটেন্যান্স ফ্রি অটোমোটিভ ব্যাটারী প্রস্তুত করে আসছে। ব্যাটারী শিল্পের নেতৃত্বদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি এবার প্রথমবারের মতো জাপানের বাজারে ব্যাটারী রপ্তানী করছে। এর মাধ্যমে বিশ্ব বাজারে রপ্তানীকৃত দেশের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ এ দাঁড়ালো। প্রতিষ্ঠানটি এ যাবৎ ৯,২০,০০০ অটোমেটিভ ব্যাটারী ৪৪ টি দেশে রপ্তানী করেছে যার মূল্যমান ৪০ মিলিয়ন ডলার। কোম্পানিটি এখন এশিয়া মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ এবং ইউরোপ ও দক্ষিন আমেরিকার অধিকাংশ দেশেই ব্যাটারী রপ্তানী করছে। তাছাড়াও কোম্পনীটি ভারত চীন ও থাইল্যান্ডের বাজারে নিয়মিত ব্যাটারী রপ্তানী করে থাকে। সিঙ্গাপুর ও দুবাইতে এটি ইতিমধ্যেই শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাটারী শিল্পে এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ৫০ বছর নেতৃত্ব প্রদানের অভিজ্ঞতা যার ফলে এশিয়ার বাজারেও নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে এটি এখন বিশ্ব বাজারের দিকে সম্প্রসারিত হয়েছে।
পাবনা চাটমোহরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার চাটমোহরে চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের শিশু কন্যা ভাদড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী (১০) কে একই গ্রামের আব্দুল হকের লম্পট ছেলে জাইদুল ইসলাম (২৫) গত রবিবার সবার অগোচরে ধর্ষনের চেষ্টা করে। দীর্ঘক্ষন শিশুটির উপর পাশবিক নির্যাতন করার একপর্যায়ে শিশুটির গগন বিদারী চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পালিয়ে যায় লম্পট জাইদুল। শিশুটিকে প্রথমে চাটমোহর ও পরে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে শিশুটির মুখে কীটনাশক বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যারও চেষ্টা করা হয়। এলাকার এক শ্রেণীর টাউট প্রচার চালায় শিশুটি বিষপানে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। এব্যাপারে মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আজিজুল হক এবং সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, আমরা বিষয়টি শুনেছি, কাজটি জঘন্য। এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুল ইসলাম জানান, দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনা চাটমোহর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার চাটমোহর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা তাসলিমা খাতুনের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা বোঁথড় গ্রামের অভিভাবক মোঃ জহির আলী লিখিত অভিযোগে জানান, তার মেয়ে সুমাইয়া খাতুন ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুলে সম্প্রতি অন্যান্য ছেলেমেয়েরা সুমাইয়াকে মারধর করে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য গতকাল মঙ্গলবার সকালে কিছু অভিভাবক স্কুলে যায়। এসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আজিজুল হক স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি নাকি বাজার করতে গিয়েছিলেন। অভিভাবকরা এ ব্যাপারে অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কথা বলতে গেলে সহকারি শিক্ষিকা তাসলিমা খাতুন তাদের সাথে চরম অসৌজন্য মূলক আচরন করেন এবং অপমানজনক কথাবার্তা বলেন। অভিভাবকদের অভিযোগ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের মেয়ে তাসলিমা খাতুন স্কুলে যোগদান করার পর থেকেই নিয়মিত পাঠদান না করে গল্প গুজবে মেতে থাকেন। উপজেলা পরিষদের পাশেই অবস্থিত এই স্কুলে সঠিকভাবে পাঠদান না হলেও কর্মকর্তাদের কোন পদক্ষেপ নেই। অভিভাবকরা অভিযোগ করেন সহকারি শিক্ষিকা তাসলিমা খাতুনের ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ করেন না। এব্যাপারে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি খন্দকার বজলুল করিম খাকছার জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি মাত্র। স্কুলে গিয়ে জেনে তারপরে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধান শিক্ষক খন্দকার আজিজুল হক বলেন, আমি তিন মিনিটের জন্য বাজারে গিয়েছিলাম। এসে বিষয়টি জানলাম। উভয়পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু অভিভাবকরা কোন কিছু না শুনেই চলে গেলেন। এখন আমি কি করতে পারি। সদর ক্লাষ্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারি শিক্ষা অফিসার আলহাজ্ব ওসমান গনিকে একাধিকবার মোবাইল করেও পাওয়া যায়নি। তবে তাকে বিষয়টি এক সাংবাদিক অবগত করেছেন বলে জানা গেছে।
ঈশ্বরদীতে স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করার বখাটের ৪ মাসের জেল
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা ঈশ্বরদীতে স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করায় মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালত রকি (১৯) নামের এক বখাটেকে ৪ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড দিয়েছেন। রকি চর সাহাপুর গ্রামের ওহিদুল ইসলামের ছেলে। থানা, স্কুল শিক্ষক ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চরসাহাপুর শেখ মেহেরউল¬াহ নিন্মমাধ্যমিক (প্রস্তাবিত উচ্চ মাধ্যমিক) বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে রকি প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ উত্যক্ত করতো। বিষয়টি ওই ছাত্রী স্কুলের শিক্ষক ও পরিবারের নিকট বলে দেয়। প্রতিদিনের মত ওই ছাত্রী মঙ্গলবার সকালে স্কুলে আসার পথে রকি স্কুল থেকে প্রায় ২শ গজ দুরে তার পথ আটকে ধরে। শিক্ষক ও এলাকাবাসী গিয়ে ওই বকাটেকে আটক করে থানায় খবর দেয়। ঈশ্বরদী থানার এসআই ছকমল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে আটক রকিকে এনে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইয়েদ এ জেড মোর্শেদ আলীর ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করেন। উভয় পক্ষের নিকট শুনে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালত ওই আদেশ দেন। পরে থানা পুলিশ তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
উত্তর বঙ্গের সর্ব বৃহৎ মাছের আড়ৎ চলনবিলের মহিষলুটিতে………. দেশীয় প্রজাতির মাছ ক্রয়-বিক্রয় করে বছরে প্রায় ১২০ কোটি টাকা আয়
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ চলনবিল অধ্যূষিত উত্তর বঙ্গের সর্ব বৃহৎ দেশীয় প্রজাতির মাছের আড়ৎ চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার মহিষলুটিতে অবস্থিত। ২০০১ সালে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক নির্মানের ফলে এ অঞ্চলের মৎস্যচাষী, মৎস্যজীবি, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক জেলেদের ভাগ্য খুলে দেয়। প্রতিদিন চলনবিল থেকে শিকার করা দেশীয় প্রজাতির মিঠাপানির মাছ বিক্রি করে ন্যায্য মুল্য পাওয়ার পাশাপাশি চলনবিলের মাছ দেশের বিভিন্ন শহরে মাছের চাহিদা পুরন করে থাকে। এ ছাড়া চলনবিলের মাছ কেনা-বেচায় মহিষলুটি মাছের আড়ৎ দেশের মধ্যে অন্যতম সু-স্বাদু দেশীয় মাছ পাওয়ার একটি ক্ষেত্র। মধ্য চলনবিলে এই আড়ৎটিকে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য বিভাগের হিসেবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ টন মিঠাপানির মাছ বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাজার মুল্য প্রায় ৩০-৩৫ লাখ টাকা। তবে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের মতে, মৎস্য বিভাগের হিসেবের চাইতে অনেক বেশী টাকার মাছ বিক্রি হলেও সুযোগ-সুবিধার অভাবে এই বৃহৎ দেশীয় প্রজাতির মাছের আড়ৎটি থেকে এ অঞ্চলের মৎস্য ব্যবসায়ী, মৎস্য চাষী এবং এ কাজের সাথে জড়িত আরো প্রায় ২ হাজার লোকের আয় বাড়তে পারতো। অবস্থান ঃ হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দক্ষিনে মহিষলুটি মাছের আড়ৎ অবস্থিত। সিরাজগঞ্জ গোল চত্ত্বর হতে ১৮ কিলোমিটার মহাসড়ক ধরে পশ্চিমে এবং বনপাড়া গোল চত্ত্বর থেকে ২৫ কিলোমিটার পূর্বদিকে আসলে মহিষলুটি মাছের আড়তে আসা যাবে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, চাটমোহর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার জলসীমায় মহিষলূটি মাছের আড়ৎ মধ্য স্থলে হওয়ায় চলনবিল থেকে পাওয়া মিঠাপানির বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ নৌ ও সড়ক পথে স্বল্প সময়ে আনা সম্ভব। ফলে প্রায় ৭০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেনীর মৎস্যচাষী এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক জেলেদের শিকার করা মাছ এই আড়তে বিক্রি হয়ে থাকে।
চলনবিলের মাছ ঃ দেশের সর্ব বৃহৎ বিল চলনবিল এলাকায় ৫-৭ শত বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৬-৭ মাস পানি থাকে। আর এ পানি থেকেই শিকার করা হয় বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় সুস্বাদু মাছ। এরপরও রয়েছে মাছ চাষের উপযোগী প্রায় অর্ধলক্ষাধিক ছোট-বড় পুকুর। তা ছাড়া সারা বছরই ডোবা, নালা, খাল, বিল ও চলনবিলের পানি থেকে মাছ শিকার করা হয়ে থাকে। এ অঞ্চলে এবং দেশের বিভিন্ন শহরে চলনবিলের মাছের নামডাক রয়েছে। বিশেষ করে চলনবিলের কৈ মাছের দেশ জোড়া খ্যাতি রয়েছে। এ ছাড়া সিং, মাগুড়, পাবদা, সোল, বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, মৃগেল, বাচা, গজার, গুজা,বাইম, গুচই,পুটি, ট্যাংড়া, বাতাসি,মলা, ঢেলা ও পুকুরে চাষ করা বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৪০-৪৫ প্রকার মাছ মহিষলুটি মাছের আড়তে পাওয়া যায়। বছরে ৬-৭ মাস অধিক পরিমানে চলনবিলে মিঠাপানির দেশীয় প্রজাতির মাছ বিপুল পরিমানে পাওয়া যায়। আর দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হলে স্বাভাবিক ভাবেই দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাচুর্য্য দেখা যায়। আড়তের যত কথা ঃ ২০০৪ সালে তাড়াশের মহিষলুটিতে দেশীয় প্রজাতির মাছের আড়ৎটি গড়ে ওঠে। মুলতঃ হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক নির্মানের ফলে আড়ৎটি বৃহৎ পরিসরে দেশীয় প্রজাতির মাছের তীর্থস্থানে রুপ নেয়। আর উত্তর বঙ্গের বৃহৎ দেশীয় প্রজাতির মাছের আড়ৎটি সাত সকালে জেগে ওঠে। ২০১০ সালে প্রায় ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২টি মৎস্য অবতরন কেন্দ্র নির্মান করা হয়।এই অবতরন কেন্দ্রের শেডেই ঠাসাঠাসি করে চলে মাছ ক্রয়-বিক্রয় যজ্ঞ। মহিষলুটি মাছের আড়তে রয়েছে ৭৫-৮০ জন মাছের আড়ৎদার। যাদেরকে স্থানীভাবে ‘কাঁটাওয়ালা’ বলা হয়। আড়ৎদার মিঠু জানান, শুধুমাত্র তার কাঁটা বা দাড়িতে গড়ে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার মাছ কেনা-বেচা হয়ে থাকে। এ ছাড়া চলনবিল এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক জেলেদের শিকার করা মাছ এবং পুকুরে চাষ করা বিভিন্ন প্রজাতির মাছে ভরে ওঠে আড়ৎটি। আড়তে প্রায় ২ হাজার লোক যেমন, কুলি, শ্রমিক, কয়াল, বরফ মিলের লোকজনে এখান থেকে প্রতিদিন আয় রোজগার করে থাকেন। প্রচার প্রচারনায় ও মাছের নামডাকের কারনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেমন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ঢাকা, জামালপুর,রংপুর, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া সহ অনেক জেলার মৎস্য ব্যবসায়ীরা মাছ কিনতে আড়তে আসেন। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান জানান, প্রতিদিন ৭০-৮০টি পিকআপ ভর্তি মাছ দেশের বিভিন্ন শহরে চলে যায়। ভোর ৫টা থেকে মাছ কেনা-বেচা শুরু হলেও এর স্থায়ীত্ব সকাল ৯টা পর্যন্ত। প্রায় শতাধিক বড় মাপের মাছের পাইকার লাখ লাখ টাকার মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে থাকেন। আড়তে যত সমস্যা ঃ প্রথম দিকে খোলা আকাশের নিচে মাছ বিক্রি হলেও আড়ৎটির গুরত্ব ভেবে সরকার ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২টি মৎস্য অবতরন কেন্দ্র নির্মান করে। তারপরও প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ টন মাছ বিক্রির জন্য যে মাপের শেডের দরকার তা এখনো গড়ে ওঠেনি। আড়তদার মোসলেম উদ্দিন জানান, ব্যাংক না থাকায় টাকা পয়সা নিয়ে পাইকাররা শংকিত থাকেন। মহিষলুটি মাছের আড়তে প্রতিদিন গড়ে হাজার দেড়েক ছোট বড় যান বাহন আসলেও গাড়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা না থাকায় ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত না হওয়ায় বরফ পেতে বেশী টাকা ব্যয় করতে হয়। আবার মৎস্য হিমাগার না থাকায় মূল্যবান মাছ সংরক্ষন করা সম্ভব হয় না। মুলতঃ মধ্যরাত থেকেই পাইকাররা মহিষলুটি মাছের আড়তে আসলেও আবাসিক সমস্যা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকেন। ঢাকার গাবতলী থেকে আগত পাইকার আব্দুর রাজ্জাক জানান, মহিষলুটি মাছের আড়ৎ অনেক বড় হলেও সুযোগ সুবিধা কম। আর এ জন্য ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ সবিধার অভাবে এ ব্যবসায় বেশী বিনিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। আড়ৎ উন্নয়নের কথা ঃ চলনবিলের সর্ব বৃহৎ দেশীয় প্রজাতির মাছের আড়ৎ মহিষলুটিতে প্রতি বছরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়ে থাকলেও স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, এর চেয়ে আরো বেশী টাকার মাছ কেনা বেচা হয়ে থাকে। এখানে আড়ৎ প্রতিষ্ঠার ফলে যেমন মাছের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হয়েছে তেমনি চলনবিলের সু-স্বাদু দেশীয় প্রজাতির মাছ বিভিন্ন এলাকার মানুষের চাহিদা পুরন করতে পারছে। তবে সুযোগ সুবিধা বাড়লে আরো বেশী টাকা মাছ বিক্রি করে আয় করা সম্ভব। তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম আকতার জানান, আড়ৎটির উন্নয়নে মৎস্য বিভাগ তৎপর রয়েছে। আগামীতে স্থান সংকুলানের জন্য একাধিক শেড নির্মান করার পরিকল্পনা রয়েছে। আড়ৎদার আব্দুল মান্নান জানান, ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, গাড়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় শেড নির্মান, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারন করলে বর্তামনে ২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান থাকলেও তা বেড়ে যাবে।
বর্ষার শুরুতেই চলনবিলে নির্বিচারে ছোট মাছ নিধন শুরু হয়েছে
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ চলনবিল অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছোট মাছ নিধন শুরু হয়েছে। বর্ষা পুরোপুরি না আসলেও বৃষ্টির পানিতে সকল মাছ ডিম ছেড়েছে। জানা গেছে, দেশীয় মাছের জন্য বিখ্যাত চলনবিলে ইতোমধ্যে ছোট মাছ ধরা শুরু হয়েছে। বর্তমান চলনবিলে দেশীয় প্রজাতির সদ্য জন্ম নেওয়া ছোট ছোট মাছ বোয়াল, শোল, কই, মাগুর, পুটি, টাকি, টেংরা,বাতাসী, গুচি, বাইম,চিংড়িসহ প্রায় ৩০-৩৫ প্রজাতির দেশীয় ছোট মাছ রয়েছে। আর অসাধু কিছু মাছ শিকারী চলনবিলের বিভিন্ন পয়েন্টে বাদাই জাল, জালি, হেসী, খরা,বাসন,ধুন্ধি, মই জাল, এমন কি নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়েও এই সকল ছোট মাছ নির্বিচারে নিধন করে চলেছে। ছোট মাছের বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এ মৌসুমে ব্যবসা করতে মাছ শিকারীরা তৎপর। চলনবিলের তাড়াশ সদর বাজারসহ অন্ততঃ মাছ বিক্রি হয় এমন প্রায় ২০-২৫ হাট ও বাজারে প্রকাশ্যে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ দেদার্চ্ছে বিক্রি হচ্ছে। প্রকাশ্যে চলনবিলের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, গুরুদাসপুর, সিংড়া উপজেলার বিস্তীর্ন বিলের বিভিন্ন জলাশয়ে ছোট মাছ শিকার করছে। রাতের অন্ধকারে বেশীর ভাগ ছোট মাছ শিকার করে সকালে তা বাজারে তোলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা। আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে ছোট মাছ বিলে প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। তিনি তার উপজেলায় লোকবল কম থাকা সত্ত্বেও ছোট বা পোনা মাছ নিধন বন্ধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপর দিকে একাধিক মাছ শিকারীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছোট মাছ নিধন তাদেরও কাম্য নয়। কিন্তু বিশাল চলনবিল অঞ্চলে মৎস্য নির্ভর জেলে পরিবারগুলোর বিকল্প কোন আয়ের সুযোগ নাই। ফলে রুটি রুজির তাগিদেই তাদেরকে মাছ ধরতে হয়।
ভাঙ্গুড়ায় তৃণমুল পর্যায়ে দলকে সু-সংঘটিত করতে বিএনপির সভা
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ তৃণমুল পর্যায়ে দলকে আরও সু-সংঘটিত করতে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা দিলপাশার ষ্টেশন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুর মোজাহিদ স্বপন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল আজিজ,সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক সরদার জাফর ইকবাল হিরোক,দপ্তর সম্পাদক প্রভাষক আবু সাইদ,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান,ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই,সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম,ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল কাশেম,হাবিবুর রহমান, প্রমুখ।
পাবনা ভাঙ্গুড়া ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ ও প্রস্তাবিত বড়াল-মন্ডতোষ ইউনিয়ন বাস্তবায়নে সমাবেশ অনুষ্ঠিত
পাবনা থেকে মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ১ নং ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের অপসারণ ও প্রস্তাবিত বড়াল-মন্ডতোষ ইউনিয়ন পরিষদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত সোমবার বিকালে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বোয়ালমারী স্কুল মাঠে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আজিজল হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন,ভাঙ্গুড়া পৌর মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রহমান প্রধান,সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন,যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম মিঠু, ছাত্রলীগ নেতা সরদার আবুল কালাম আজাদ, ছাত্রলীগ নেতা তারেক হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন,জালাল উদ্দিন মাষ্টার,ফারুক আহমেদ, আবুল বাশার প্রমুখ। সভায় বক্তারা ওই চেয়ারম্যানকে দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতালোভী আখ্যায়িত করে তার অপসারণের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার পৌর শহরে মিছিল, ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং ইউপি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কর্মসূচী ঘোষণা দেন।
Discussion about this post