মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলার রেলবাজারে অনুষ্ঠিত তিন দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলায় শেষ দিন মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে গানে গানে দর্শক মাতালেন ক্লোজআপ তারকা রিংকু। চাটমোহর রেলবাজার চত্বরে গত পহেলা বৈশাখ এই মেলা শুরু হয়। মেলার শেষদিন রাতে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে স্থানীয় শিল্পী বর্ষা, সুমন, আশা খন্দকার, মাসুদ রানা সঙ্গীত পরিবেশন করে। শেষে ক্লোজআপ শিল্পী রিংকু গানে গানে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন। মেলায় হাজার হাজার দর্শকের সমাগম ঘটে।
পাবনায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা রাস্তার উদ্বোধন করলেন সদর এমপি প্রিন্স
মোবারক বিশ্বাস ঃ গতকাল বুধবার দুপুরে পাবনা শহরের বাংলা বাজার এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়নে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১.৫ কিলোমিটার পাকাকরন রাস্তার উদ্বোধন করলেন পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স। পাবনা- ৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স প্রধান অতিথি হিসেবে গতকাল দুপুর দেড়টায় ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে রাস্তাটির পাকাকরণ উদ্বোধন করেন। সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিপ্তরের সার্বিক তত্বাবধানে বাংলাবাজার- কলা বাগান সুইচ গেট – মজনু মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটারের রাস্তাটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। রাস্তা উদ্বোধন শেষে এক সংক্ষিপ্ত পথ সভায় এমপি প্রিন্স বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার জনগনের সরকার। জনগনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিই হলো এ সরকারের প্রধান লক্ষ্য। দীর্ঘদিন এ রাস্তাটি কাঁচা থাকায় এলাকাবাসির যাতায়াতে চরম অসুবিধা হতো। বাংলাবাজারবাসী ও ন্যাশনাল একাডেমীর কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের দাবীর প্রেক্ষিতে জনগনের অসুবিধার কথা চিন্তা করেই রাস্তাটি পাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং এলাকাবাসিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সম্পূর্ণ চাঁদাবাজমুক্ত রেখে কিভাবে রাস্তাটি সুন্দর করে তৈরি করা যায়। এজন্য সবাইকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ভাল উদ্দেশ্য থাকলে সব সময় ভাল কাজ করা সম্ভব হয়। এমপি প্রিন্স বলেন, বর্তমান বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের আমলে গ্রাম গঞ্জে রাস্তাঘাট পাকা হওয়ায় যোগাযোগের দিক দিয়ে শহর আর গ্রাম পার্থক্য করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে জনগনের আর্থ সামাজিক অবস্থারও উন্নতি হয়। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ইয়ার মোহম্মদ নাসিম, যুবলীগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধান, কামরুজ্জামান রকি, হীরক হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের রবিউল ইসলাম রবি, শেখ রাসেল আলী মাসুদ, আবুল কালাম আজাদ, ওলামালীগের মাওলানা আব্দুস শাকুর, হাসান আলী, ইয়াজিদ, গেদা, মোয়াজ্জেম, হীরক, পাবনা সদর উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল আজম বকুল ও ঠিকাদার জিন্নাত আলী জিন্নাহ। এর আগে এমপি গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স আরিফপুর দোহারপাড়া মহল্লাবাসিদের সাথে এক সংক্ষিপ্ত জনসংযোগে মিলিত হন।
পাবনা চাটমোহরে ডায়রিয়ার প্রকোপে গরমে জনজীবন দুর্বিসহ
মোবারক বিশ্বাস ঃ গ্রীস্মের শুরুতেই প্রচন্ড গরম ও তাপদাহে চাটমোহরসহ আশপাশের উপজেলার জনজীবন বিপর্যন্থ হয়ে পড়েছে। ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি-জ্বরসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে চাটমোহরে ৫ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। শতাধিক ব্যক্তি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গতকাল বুধবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১৩জন চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। এরা হলেন, কাজীপাড়ার ইয়াজ উদ্দিন (৭৬), হান্ডিয়ালের শাহিনের ছেলে শাকিব (১১মাস), ভাদরার নাসিরের ছেলে সিয়াম (২), ধরইলের সাফাতের স্ত্রী সেলিনা (২৫), কাটেঙ্গার সিতার আলীর ছেলে সিয়াম (৪ মাস), মূলগ্রামের প্রভাতি রানী (৪০), ছাইকোলার বাবুর ছেলে মাহমুদ (৬ মাস), পৈলানপুরের মানিকের ছেলে অন্তর (১), শাহাসগরের আবু সাঈদের মেয়ে সাথী (১২), রামনগর গ্রামের সুজন (১৪), দাঁথিয়া কয়রাপাড়ার ওবায়দুলের ছেলে সৌরভ (১), পার্শ্বডাঙ্গার আজমতের মেয়ে নুরাইয়া (৩) ও রেলবাজারের রুহুলের ছেলে স্বাধীন (দেড় বছর)। প্রতিদিনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এদিকে প্রচন্ড গরমে মানুষজন অস্থির হয়ে পড়েছে।
পাবনা চাটমোহরে হিট ষ্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু গরমে জনজীবন দূর্বিসহ
মোবারক বিশ্বাস ঃ বৈশাখের তাপদাহ ও প্রচন্ড গরমে পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলের জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। একে তো বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং, অপরদিকে গ্রীস্মের তাপদাহে নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। আকাশে মেঘের দেখা মিললেও বৃষ্টি নাই। তবে ঝড়ো বাতাস বইছে মাঝে মাঝে। প্রচন্ড গরমে পাবনার চাটমোহর উপজেলায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মাঠ থেকে কাজ সেরে বাড়িতে এসে হিটষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের সেনগ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে আবুল হায়াত (৩২) এবং বাড়িতে কাজ করতে করতে হিটষ্ট্রোকে মারা যান পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের সজনাই গ্রামের মোঃ জিন্নাহর স্ত্রী মাহমুদা বেগম (৪০)। এছাড়া অন্তত ১০ জন অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলায়।
পাবনা চাটমোহরে অগ্নিকান্ডে ২ লাখ টাকার ক্ষতি
মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার চাটমোহরে গত মঙ্গলবার দুপুরে এক অগ্নিকান্ডে একটি বাড়ির সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন গৃহকর্তা। জানা গেছে, এদিন দুপুরে উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কালীবাড়ি গ্রামের গনেশ সাহার ছেলে তাপস সাহার বাড়ির চুলার আগুন থেকে অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত হয়। নিমিষের মধ্যে বাড়ির তিনটি ঘরসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ হয় তাপস সাহা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাবনা চাটমোহরে অপহৃত গৃহবধূ উদ্ধার ॥ কেউ গ্রেফতার হয়নি
মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনার চাটমোহর থানা পুলিশ গতকাল বুধবার সকালে অপহৃত গৃহবধূ মাসুরা খাতুন সাথী (২২) কে জেলার ফরিদপুর উপজেলা সদর থেকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধারকৃত গৃহবধূ হলো চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বৃ-গুয়াখড়া গ্রামের আরিফুল ইসলামের স্ত্রী। চাটমোহর থানার এসআই মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, গত ৩১ মার্চ ফরিদপুর উপজেলার বায়রাপাড়া গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন (২৫) গং সাথীকে অপহরণ করে। এরপর বিভিন্ন স্থানে রেখে গৃহবধু সাথীকে ধর্ষন করে রুহুল আমিন। ঘটনার ৫দিন পর সাথীর স্বামী চাটমোহর থানায় রুহুলসহ ৬জনকে বিবাদী করে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩, তাং-০৫/০৪/১২ ইং। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার ভোরে অভিযান চালিয়ে সাথীকে ফরিদপুর থানাপাড়া থেকে উদ্ধার করে। পরে তার ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়। এ ঘটনায় রুহুলসহ অন্যরা পলাতক। একাধিক সূত্র জানায়, রুহুলের সাথে সাথীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরেই ১ সন্তানের জননী সাথী রুহুলের সাথে পালিয়ে যায়। সাথীর ১০ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
পাবনা ঈশ্বরদীর পতিরাজপুরের আদিবাসী পল্ল¬¬ীতে এখনো যায়নি বিদ্যুৎ ভোটের আগে সবাই আসে ভোট নিতে
মোবারক বিশ্বাসঃ পাবনা ঈশ্বরদীর মত প্রথম শ্রেনীর ও উন্নত উপজেলা শহরের মাত্র তিন-চার কিলোমিটার দূরত্বের একটি গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ পৌছেনি, পুরো গ্রামে একটিও স্যানেটারী পায়খানা নেই কিংবা সেখানে কোন বয়স্ক ভাতা-বিধবা ভাতার কার্ড পৌছেনি, একথা শুনে বিশ্বাস না করারই কথা। এলাকায় স্যানেটারী পায়খানা না থাকার কারণে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা রাস্তার পাশে মলমূত্র ত্যাগ করে এতে রোগ জীবানু ছড়ায়।মলমূত্র ত্যাগের জন্য যেতে হয় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ফার্মের ক্ষেতে। সেখানে মহিলা-পুরুষ একত্রে মলমূত্র ত্যাগ করে। কিন্তু বিশ্বাস না হলেও গতকাল বুধবার সরেজমিনে ঈশ্বরদী মুলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে বিশ্বাস না করে পারা যায়নি। জানা গেছে, সমাজের নুন্যতম সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ওই গ্রামের ৭২টি পরিবারে শিশুসহ সাড়ে ৬’শ নারী-পুরুষের বসবাস। অথচ সামান্য কিছু দূরেই মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এখানে এই মানুষদের খোঁজ খবর নিতে কোন মেম্বর কিংবা চেয়ারম্যান তো দূরে থাক চৌকিদাররাও এদের খোঁজ নেয়না। তাদের চলাচলের জন্য নেই কোন রাস্তা-ঘাট। কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়া মুশকিল হয়। বর্ষায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে এই এলাকার মাটির রাস্তা।ঈশ্বরদী শহর থেকে মাত্র ৫ কলোমিটার দূরের এই গ্রামের মাত্র সামান্য দূরে রয়েছে বিদ্যুৎ লাইন। কিন্তু আদিবাসীদের মহল্ল¬¬¬ায় এখনো বিদ্যুৎ পৌছায়নি। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক প্রকৌশলী উৎপল কুমার সাহা বলেন, সাধারণতঃ কোন প্রজেক্ট ছাড়া আমরা লাইন সম্প্রসারণ করতে পারিনা। তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি, খোঁজ নিয়ে দেখবো সমস্যা কোথায়। পতিরাজপুরের ষাটর্ধ শ্রীমতি বালা, সন্তোষ, মুকন্ত সরদার, নরোদ, অন্ন বালা, রামচন্দ্র, অশোকা রাণী, তুলশি বালা, অঞ্জনা, মিলাসহ আরও বেশ কিছু বৃদ্ধ পুরুষ ও মহিলারা অভিযোগ করে বলেন, তাদের বয়স ষাট-সত্তর হলেও মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়নি। এ সময় দিলু সরদার নামে এক বৃদ্ধ অভিযোগ করে বলেন, তিনি অনেক আগে একটি বয়স্ক ভাতার জন্য এলাকার মেম্বারদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন লাভ হয়নি।
এসব বিষয়ে মুলাডুলি ইউনিয়নের ৭,৮ও ৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বর নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ শুনে বলেন, আমি এবারই প্রথম নির্বাচিত হয়েছি। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন করে কোন বয়স্ক ভাতা বা অন্য কোন ভাতার কার্ড আসেনি। যদি কেউ মারা যায় তার সার্টিফিকেট ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেওয়ার পর চেয়ারম্যান তার ইচ্ছে মতো অন্য একজনকে নতুন ভাবে ওই কার্ডটি দিয়ে থাকেন।উজ্জীবন সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামে ঈশ্বরদীর একটি বে-সরকারী সংস্থা বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা বিষয়ক এক কর্মসূচিতে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকায় ১০০ জন শিশু আছে তারা স্কুল কি জানেনা। আদিবাসী পল্ল¬¬¬ীতে কোন ধরনের স্কুল না থাকায় তারা লেখা পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। বেশ কয়েকজন অভিভাবক এ প্রতিনিধিকে বলেন, ইতি পূর্বে পাশ্ববর্তী একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকজন ছেলে-মেয়েকে ভর্তি করা হলেও সেখানকার মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীরা আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে বসতে দিত না। এমন কি টিউবয়েলের পানি পর্যন্ত স্পর্ষ করতে দিতনা। বাধ্য হয়ে অভিভাবকরা তাদের ছেলে-মেয়েদের ওই স্কুলে আর লেখাপড়া করায় নি। পতিরাজপুর আদিবাসী পাড়ায় একটি মন্দির আছে, যেখানে আদিবাসীরা পূজা অর্চনা করে থাকে। কিন্তু মন্দির ঘরটি ভেঙ্গে চুরে ব্যবহারের অযোগ্য হলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বর কিংবা কোন প্রতিষ্ঠান সেটি মেরামত করতে এগিয়ে আসেনি। অনেক কষ্ট করে নিজেদের অর্থ দিয়ে কোন মতে সেটি নির্মাণ করেছেন। এই আদিবাসী পাড়ার এসব নানান বিষয়ে কথা বলার সময় ওই এলাকার ওয়ার্ড মেম্বর মোঃ আলাউর ইসলাম নশু বলেন, আমি নতুন মেম্বর আদিবাসী পাড়ার এই মানুষ গুলো আমার খুব আপন মানুষ। তারা আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আমাদের মুলাডুলি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ভালো না হওয়ায় এসব এলাকায় উন্নয়ন ঘটেনি। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার নির্বাচিত হওয়ার পর আদিবাসীদের কোন খোঁজ নেয়নি। আদিবাসী পাড়ার সরদার শ্রী ভবেশ চন্দ্র সরকার অভিযোগ করে বলেন, আমরা সংখ্যালঘু হওয়ায় আমাদের খবর নেওয়ার কোন মানুষ নেই। আমরা আমাদের ভাষায় নয়, বাংলা ভাষায় শিশুদের লেখাপড়া শেখাতে চাই। কিন্তু কোন স্কুল না থাকায় সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে এই গ্রামে ভোট নেওয়ার জন্য অসংখ্য ভদ্র লোকদের আনাগোনা হয়। কিন্তু ভোট শেষ হলেই আমাদের খবর নেয় না কেউ। পতিরাজপুর আদিবাসী পাড়ার এসব নানান অভিযোগ সম্পর্কে মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সেলিম মালিথা ওই এলাকার সমস্যা ও অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সীমিত সম্পদ, চাহিদা বেশি তাই হয়তো ওই এলাকার কোন উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। এর আগে আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম তখন তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। এরপর দীর্ঘ নয় বছর অন্য একজন চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনি আদিবাসী পল্ল¬¬¬ীর মানুষদের সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল। এবার নতুন ভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর দুই ঈদে আমি নিজে আদিবাসীদের জন প্রতি ১০ কেজি করে চাউল দিয়েছি। আদিবাসীদের চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় বিদ্যুতের জন্য সুপারিশ করেছি। আগামীতে তাদের দুঃখ কষ্ট এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করবো।
পাবনা আতাইকুলায় ২ বাড়ী ভস্মিভূত। ১২লাখ টাকার ক্ষতি
মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা সাঁথিয়া উপজেলাধীন আতাইকুলা থানার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দাপুনিয়া গ্রামে ২ বাড়ী আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে নগদ অর্থসহ ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জানা যায় গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে দাপুনিয়া গ্রামের মহির খার ছেলে ইসমাইলের রান্নাঘর থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়। মহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ইসমাইল ও তার ভাই ওসমানের ৬টি ঘর পুঢ়ে ছাই হয়ে যায়। ঘরে থাকা নগদ ২লাখ ৬০হাজার টাকাসহ ধান-চাউল, কালাই-মসুর, আসবাবপত্রসহ ১২লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার জানায়।
বৃত্তি প্রাপ্তিতে পাবনা ইসলামিয়া মাদরাসা দেশের দ্বিতীয় স্থানে
মোবারক বিশ্বাস ঃ ২০১১ সালের জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) বৃত্তি পরীক্ষায় পাবনা ইসলামিয়া মাদরাসা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। শাহ ওলী উল্লাহ ও সুরুজ আলী বৃত্তি পেয়েছে ট্যলেন্টপুলে এবং জেনারেলে পেয়েছে ৫ জন। তারা হলো, আল আমিন, হুজ্জাতুল্লাহ, সাব্বির সরকার সজিব, হাফিজুর রহমান ও সুলাইমান হুসাইন। এছাড়া দাখিলে পেয়েছে শরিফুল ইসলাম এবং আলিমে পেয়েছে এম,এ আল মামুন। শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফলে মাদরাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইকবাল হুসাইন ও উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল লতিফ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের শিক্ষকদের আন্তরিকতা, ছাত্রদের প্রচেষ্টা এবং অভিভাবকদের দায়িত্বশীল ভুমিকার কারনে ছাত্রদের এই সুনাম বয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। আমরা আশা করি আগামীতেও আমাদের শিক্ষার্থীরা এর চেয়েও ভাল ফল বয়ে আনবে। এর জন্য চাই সবার দোয়া ও সার্বিক সহযোগিতা। মাদরাসাটি গত দাখিল পরীক্ষায়ও দেশের দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলো। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিযোগিতায় দেশের সেরা হওয়ায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মাসে অত্র মাদরাসার ছাত্রদের পুরস্কৃত করেছেন। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রীও কয়েকবার ছাত্রদের পুরস্কৃত করেন। এসব ফলাফলে গভর্নিং বডির সদস্যরা ছাত্র ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
পাবনা সাঁথিয়ায় চিকেন পক্সের পাদুর্ভাব
মোবারক বিশ্বাস ঃ সারাদিন ভ্যাবসা গরমে চিকেন পক্সের পাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। অভিবাবকরা উদ্দীগ্নে রয়েছে। জানা যায় সাথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের রাশেদুল (৭), লাকী খাতুন (৬), ইলা খাতুন (৭), রতœা খাতুন (৭), লতা(৬) চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়েছে। ঐ গ্রামের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা মোছাঃ শিম্পা খাতুন জানান এ রোগে শিশুরা আক্রান্ত হওয়ায় প্রত্যেক অভিভাবক উদ্দিগ্ন রয়েছে।
পাবনায় সড়ক দূ’র্ঘটনায় নিহত ২ আহত ৬
মোবারক বিশ্বাস ঃ পাবনা সাঁথিয়া উপজেলায় মঙ্গলবার সন্ধায় নসিমন উল্টে খাদে পড়ে গেলে ২ জন গরু ব্যবসায়ী নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছে। নিহতরা হলেন, উপজেলার সুন্দরকান্দি গ্রামের সন্তোষ প্রামাণিকের ছেলে আনসার আলী (৪০) ও রাঙামাটি গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে ইসহাক আলী (৫৫) । সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হক জানান, রাতে সাঁথিয়া-বেড়া সড়কের কোনাবাড়িয়া এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি গরু বোঝাই নসিমন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে নসিমনের যাত্রী ৬ গরু ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবণতি হলে আনসার ও ইসহাককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তাদের মৃত্যু হয়। আহত অপর ছয়জন হলেন, ছকির, ইসমাইল, মালেক, হাসান, উকিল, ও রতন বেড়া উপজোর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন । এ ব্যাপারে বেড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ ১৯ এপ্রিল সাঁথিয়ার ঐতিহাসিক ডাববাগান দিবস একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের এক মাইলফলক
মোবারক বিশ্বাস ঃ আজ ১৯ এপ্রিল । ঐতিহাসিক পাবনার সাঁথিয়ার ডাববাগান দিবস। একাত্তরের ১৯ এপ্রিলের ডাববাগানের যুদ্ধ আজও ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি। ডাববাগানের এই যুদ্ধ ছিল একাত্তরের এক মাইলফলক। নগরবাড়ীঘাট ছেড়ে পশ্চিম দিকে কাশিনাথপুর পেরিয়ে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের (বর্তমান নাম শাহীদনগর) ডাববাগান নামক স্থানে একাত্তরের ১৯ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সম্মুখ প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। একাত্তরের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার পর থেকেই সমগ্র বাঙালি জাতি স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের আরও সংগঠিত করে সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। হানাদার বাহিনী কর্তৃক বন্দি হবার প্রাক্কালে একাত্তরের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতা ঘোষণার পর তার আহবান ও নির্দেশে বাঙালিরা দেশব্যাপী পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলে। ঢাকা থেকে আসা পাক হানাদার বাহিনী উত্তর জনপদের এই স্থানে মুক্তিসেনাদের সম্মুখে প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। মুক্তিসেনাদের পক্ষে এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন ইপিআর সুবেদার গাজী আলী আকবর। (বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার শান্তিডাঙ্গা গ্রামে)। এ যুদ্ধে বেশির ভাগ যোদ্ধা ছিলেন বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী আনসারসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা। এই রাস্তা দিয়ে পাকসেনারা নগরবাড়ী থেকে বগুড়া যাবার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে মুক্তিসেনারা ডাববাগানে অবস্থান নেয়। প্রথমত পাকসেনারা সম্মুখ যুদ্ধে টিকতে না পেরে ব্যাপক ক্ষতি স্বীকার ও হতাহতের পর পিছু হটে নগরবাড়ী ফিরে যায়। যুদ্ধে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। চূর্ণ হয় তাদের শক্তি, ধ্বংস হয় তাদের মনোবল। এদিকে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয় ইপিআর হাবিলদার মমতাজ আলী, হাবিলদার আঃ রাজ্জাক, নায়েক হাবিবুর রহমান, সিপাহী এমদাদুল হক, সিপাহী ঈমান আলী, সিপাহী রমজান আলীসহ আরও অনেক ইপিআর সদস্য। পাক বাহিনী ওই সকল শহীদ ইপিআর সদস্যদের দেহ এসিড ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। ডাববাগানের এ যুদ্ধ দুপুরে শুরু হযে দিনভর চলে। সম্মুখ যুদ্ধে পরাজয় বরণের পর পিছু হটে যাওয়া পাকবাহিনী নতুন করে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। শক্তি বৃদ্ধি করে রাতের বেলায় আবার আক্রমন করে। এবার পাক বাহিনীর বিশাল শক্তির কাছে টিকতে না পেরে মুক্তিসেনারা পিছু হটে যায়। পাকসেনারা এবার গ্রামবাসীর উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। একে একে পুড়িয়ে দেয় ডাববাগানের পার্শ্ববর্তী গ্রাম রামভদ্রবাটি, কোড়িয়াল, বড়গ্রাম, সাটিয়াকোলা প্রভৃতি গ্রাম। নির্বিচারে গুলি চালায় নিরীহ গ্রামবাসীর উপর। লোকজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে এনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে শ’শ’ স্বাধীনচেতা গ্রামবাসীকে। এদের মধ্যে করমজার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আফাজ ডাক্তার, আঃ লতিফ, শেখ কাজেম আলী, খোয়াজ শেখ, পিয়ার মন্ডল, জাকের আলী শেখ, সৈয়দ আলী মোল্লা, জগনারায়ণ বিশ্বাস প্রমুখ। যে গাব গাছটির কাছে নিয়ে এসে গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়েছিল,সে গাব গাছটি এখনও কালের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে। আরও আছে সেই ডাববাগান। এলাকাবাসী জায়গাটির নতুন নামকরণ করেছে ‘শহীদ নগর’। একাত্তরের ১৯ এপ্রিলের সেই ভয়াল রাতের কথায় শহীদনগরবাসী ফিরে যায় সেদিনের স্মৃতিতে। খুঁজে পেতে চায় সে সব শহীদ ভাইদের যাদের তাজা রক্তে ভিজে গেছে গ্রামের মেঠো পথ। শহীদ নগরে রয়েছে ইপিআরদের ‘গণকবর’। এখানে ঘুমিয়ে আছে শ’শ’ মুক্তিপাগল গ্রামবাসী। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকে স্মরণীয় করার জন্য বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এখানে “বীর বাঙালি”নামে একটি ‘ স্মৃতি সৌধ’ গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে দিবসটি পালনের জন্য দিনব্যাপী কর্মসূচীর গ্রহণ করা হয়েছে।
Discussion about this post