নজরুল ইসলাম মিন্টু বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : কাহালু উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ও উপজেলার রোস্তমচাপড় গ্রামের রফিকুল আলমের পুত্র নাইমুল ইসলাম নাইম (১৩)কে অপহরন করে মুক্তি পণের টাকা না পেয়ে তাকে হত্যার পর লাশ ইট ভাটায় পুড়ে ফেলেছে অপহরনকারীরা। পুলিশ ইট ভাটার মালিক সহ ৪ জনকে গত সোমবার রাতে গ্রেফতার করেন। পুলিশ জানান, গত ৫ এপ্রিল সকালে স্কুল ছাত্র নাইম বাড়ী থেকে স্কুলে আসার পথে কাহালু চারমাথা এলাকা হতে তাকে অপহরন করা হয়। ঐদিনেই নাইমের পিতা রফিকুল ইসলাম কাহালু থানায় একটি জিডি করেন। জিডিনং ১৮৯ তাং ০৫/০৪/১২ইং। অভিযোগ পাওয়ার পর বগুড়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডলের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় উক্ত বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে কাহালু বাজার হতে প্রথমে পৌর এলাকার উলট্র গ্রামের শাহজাহান আলীর পুত্র শাহাদত (১৮)কে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত শাহাদতের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মূল তথ্য বেরিয়ে আসে। শাহাদত জানান সে নিজে ও তার সহযোগী উলট্র গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র জাকারিয়া (২৪), আব্দুল হামিদের পুত্র জামাল (১৮), আলিমুদ্দিনের পুত্র ডালিম (২০) ও উপজেলার রোস্তমচাপড় গ্রামের জাহিদুরের পুত্র শাকিল (১৮) গত ৫ এপ্রিল সকালে কাহালু চারমাথা হতে নাইমকে অপহরণ করে কাহালু চারমাথা এলাকায় জাকারিয়ার দোকান ঘরে আটকে রেখে তার পিতার নিকট ৫ লক্ষ টাকা মুক্তি পণ দাবী করে। কিন্তু মুক্তি পণের টাকা না পেয়ে ঐদিন বিকেলে তারা নাইমের মূখে টেপ পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে নাইমের লাশ বস্তায় ভরে আসামী জাকারিয়াদের ইট ভাটার চিমনীর মধ্যে ফেলে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামী শাহাদতের দেওয়া তথ্য মোতাবেক কাহালু চারমাথা এলাকায় আসামী জাকারিয়ার উক্ত দোকান ঘর হতে নাইমের স্কুল ব্যাগ, বই, টিফিন বক্স, পানির বোতল উদ্ধার করে। রাতে পুলিশ আসামী জাকারিয়ার পিতা ইট ভাটার মালিক আব্দুল মান্নান (ভাটা) ও তার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩০) ও রোস্তমচাপড় গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র আনিছার (৪৫) কে গ্রেফতার করেন। এদিকে ঘটনায় মঙ্গলবার কাহালু উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও শিক্ষর্থীরা নাইমের খুনিদের ফাসির দাবী মিছিল বের করে। মিছিল শেষে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী সালেহ মুস্তানজির এর কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেন এবং তিন দিনের কর্মসূচী ঘোষনা করেন। অপরদিকে নাইমের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তার বাড়ীতে নেমে আসে শোকের ছায়া। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার পিতা মাতার কান্না কেউ থামাতে পারছেনা। এঘটনায় এলাকাবাসী বগুড়া-নওগা মহাসড়ক প্রায় ২০ মিনিট ধরে অররোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। এ ঘটনায় নাইমের পিতা রফিকুল আলম বাদী হয়ে কাহালু থানায় ১০ জনকে আসামী করে ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বগুড়ায় ট্রাক চাপায় স্কুলছাত্র নিহত
নজরুল ইসলাম মিন্টু বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ী আমতলী এলাকায় মঙ্গলবার সকালে ট্রাকের চাপায় মাছুদ রানা (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় অপর দুই ছাত্র আহত হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় প্রায় তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত রানা উপজেলার রামনগর এলাকার গিয়াস উদ্দিনের পুত্র এবং ফুলবাড়ী জমির উদ্দিন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। আহতরা হলো- রানার সহপাঠী একই এলাকার আপেল ও মোমিন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, সকাল সোয়া ৭টার দিকে ওই তিন ছাত্র প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল। পথে ফুলবাড়ী আমতলী বেইলি ব্রিজের কাছে একটি ট্রাককে বিন্দু টেডার্স নামে আরেকটি বালু বোঝাই ট্রাক (নম্বরঃ বগুড়া-ড-১১-১২৯৬) ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে রানা সহপাঠী আপেল ও মোমিনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেও নিজে ট্রাকের নিচে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রাকচালককে আটক করে শাস্তির আশ্বাস দিলে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। অভিযুক্ত ট্রাকটি পরে এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তবে এ সময় চালক বা হেলপারকে গ্রেফতার করা যায়নি। এসআই আব্দুল মজিদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হবে।
Discussion about this post