মোবারক বিশ্বাস ঃ আজ ৬ এপ্রিল বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা পাবনার মেয়ে সুচিত্রা সেন ওরফে রমাদির ৮২তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, পাবনা প্রেসক্লাব, পাবনা টাউন গার্লস হাই স্কুলসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে কেক কাটা, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বৃহত্তর পাবনার সিরাজগঞ্জ মহুকুমার ভাঙাবাড়ী গ্রামে নানীর বাড়ীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা করুনাময় দাশগুপ্ত ও মা ইন্দিরা দেবী। পাঁচ ভাই ৩ বোনের মধ্যে সুচিতা ওরফে রমা ছিলেন তৃতীয়। ১৯৫২ সালে তিণি শেষ কোথায় ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে জড়িত হন। তবে এই ছবি আলোর মুখ দেখেনি। ১৯৫৩ সালে তিনি সাত নম্বর কয়েদীর মাধ্যমে দর্শকদেও মনে ঝড় তোলেন। তার শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দেবী চৌধূরানী। তিনি একে একে সাত নম্বর কয়েদী, সাড়ে চুয়াত্তর, কাজরী, সদানন্দের মেলা, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ চৈতন্য, অ্যাটমবম্ব, ওরা থাকে আধারে, ঢুলি, মরনের পরে, অন্নদা মন্দির, গৃহ প্রবেশ, শাপমোচর, হারানো সুর, সবার উপরে, চন্দ্রনাথ, একটি রাত, জীবন তৃষ্ণা, রাজলক্ষী শ্রীকান্ত, ইন্দ্রানী, সূর্যতোরণ, চাওয়া পাওয়া. দ্বীপ জেলা যাই, সাজঘর, সাজের প্রদীপ, বলয় গ্রাস, মেজো বউ, ভালবাসা, পথে হল দেরী, অগ্নিপরীক্ষা প্রিয় বান্ধবীসহ ৫৩ টি ছবি। সত্তরের দশকের শেষের দিকে স্বামী দিবানাশ সেনের মৃত্যু, উত্তম কুমারের তিরোধান, বন্ধু ভাবাপন্ন নায়ক সঞ্জিব কুমারের অকাল প্রয়ান, ভারত নেত্রি ইন্দিরা গান্ধিকে হত্যা , একটি পুত্র সন্তানের জন্ম ও তার অকাল মৃত্যু বিশেষ করে মেয়ে মুনমুন সেনের চলাফেরা তার জীবনকে বিষিয়ে তোলে। বিতৃষ্ণা হয়ে পড়ে মানষের উপর। ফলে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান তিনি। এদিকে পাবনার মেয়ে সুচিত্রা সেনের জন্মুদিনকে ঘিরে পাবনাবাসীর মধ্যে অন্যরকম এক আনন্দ বিরাজ করছে। এর আগে ২০০৯ সাল থেকে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে প্রতি বছর চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সুচিত্রা সেনের পাবনার বাড়ীতে শৈশব ও কৈশরের অনেকটা সময় কেটেছে। তিনি পড়তেন পাবনা টাউন গার্লস স্কুলে। অষ্টম অথবা দশম শ্রেণীতে পড়াকালিন রমাদি বাবার সঙ্গে ভারতে চলে যান। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রমাদি বা সূচিত্রা সেন এখনও পাবনাকে এবং তার বাড়ীটিকে মনে রেখেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কয়েকজন বাঙালীকে রমাদি বলেছিলেন পাবনায় তার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তিনি পাবনায় আসার আশা ব্যক্ত করেন। ২০০১ সালে বাড়িটি দেখতে এসেছিলেন রমাদির পিসতাতো ভাই-বোন সুজাতা সেনগুপ্ত, পরমা সেনগুপ্ত, অলক সেনগুপ্ত, দিলিপ সেনগুপ্ত। তারা সে দিন বলেছিলেন রমাদির জন্মগৃহে এসে তারাও ধন্য। একইভাবে পাবনায় সুচিত্র সেনের বাড়ীটি দেখতে এসে অথবা বাড়ীটিতে প্রবেশ করে যে কেউ নষ্টালজিতে আক্রান্ত হতে বাধ্য। তাইতো পাবনাবাসী সুচিত্রা সেনের বাড়ীটি স্মৃতির মনিকোঠায় আগলে রাখতে চায়Ñ যে ভাবে ছবিতে সুচিত্রা উত্তমকে অনেকভাবেই আগলে রাখতে চেয়েছিলেন।
Discussion about this post