বাংলা সাহিত্যের মহা কবি……..”ফররুখ আহমদ” এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও জীবণী…… ১৯১৮ জন্ম ঃ ১০ই জুন পবিত্র রমজান মাস; গ্রাম ঃ মাঝআইল, মাগুরা, যশোর। পিতা-মাতার দ্বিতীয় পুত্র। বাবা-মায়ের দেয়া নাম সৈয়দ ফররুখ আহমদ। কবি পরে নিজের নাম থেকে ‘সৈয়দ’ শব্দটি বাদ দেন। রমজান মাসে জন্ম বলে দাদি কবিকে ‘রমজান’ বলে ডাকতেন। পিতা ঃ পুলিশ-অফিসার খান সাহেব সৈয়দ হাতেম আলী। মাতা ঃ রওশন আখতার।
১৯৩৬ খুলনা জেলা স্কুল ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। সম্পাদক ছিলেন স্কুলের শিক্ষক কবি আবুল হাশেম।
১৯৩৭ ‘রাত্রি’ শীর্ষক কবিতা প্রকাশিত হয় মোহাম্মদ হাবীবুল্লাহ (বাহার) সম্পাদিত ‘বুলবুল’ পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১৩৪৪)। এ-মাসেই ‘পাপ-জন্ম’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। ‘মোহাম্মদী’ পত্রিকায় (আষাঢ়, ১৩৪৪)। অন্যান্য প্রকাশিত গল্প ‘বিবর্ণ’, ‘মৃত বসুধা’, ‘যে পুতুল ডলির মা’, ‘প্রচ্ছন্ন নায়িকা’ লেখেন ১৩৪৪-৪৬ সময় পরিসরে। প্রাথমিক শিক্ষার সূচনা নিজ গ্রামের পাঠশালায়। পরবতর্ীতে কলকাতা মডেল এম.ই. স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। স্কুল-জীবনে শিক্ষক ছিলেন কবি গোলাম মোসত্মফা, কথা-সাহিত্যিক আবুল ফজল, কবি আবুল হাশিম প্রমুখ। সাহিত্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় কবি আহসান হাবীব, কথাশিল্পী আবু রুশ্দ, কবি আবুল হোসেন, কবি সৈয়দ আলী আহসান প্রমুখের সঙ্গে। কলকাতা রিপন কলেজে ভর্তি। বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু, প্রমথনাথ বিশী-এঁদের পান শিক্ষক হিসেবে। এ-সময় বুদ্ধদেব বসু-সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় কবির গুচ্ছ-কবিতা।
১৯৩৮ এফ. আহমদ নামেও তাঁর কিছু রচনা প্রকাশিত হয় মাসিক ‘মোহাম্মদী’ পত্রিকায়। কবি দার্শনিক আল্লামা ইকবাল-এর ইনত্মেকাল। কবি লেখেন ইকবালকে নিবেদিত কবিতা ‘স্মরণী’। মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন সম্পাদিত মাসিক সাহিত্য পত্র ‘সওগাতে’ প্রথম কবিতা ‘আধাঁরের স্বপ্ন’ ছাপা হয় (পৌষ, ১৩৪৪)। ১৯৪৭ (বাংলা ১৩৫৪) পর্যনত্ম কলকাতা থেকে প্রকাশিত সওগাতে এবং অন্যান্য পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখেছেন।
১৯৩৯ আই.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা, দর্শনে অনার্স নিয়ে বি.এ. ক্লাসে ভর্তি। সুভাষ মুখোপাধ্যায়, ফতেহ লোহানীকে পেলেন বন্ধু হিসেবে। শুরু হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪০ স্কটিশ চার্চ কলেজ ছেড়ে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স নিয়ে বি.এ. ক্লাসে কলকাতা সিটি কলেজে ভর্তি হন। ‘কাব্যে কোরআন’ শিরোনামে ‘মোহাম্মদী’ ও ‘সওগাতে’ বেশ কিছু সূরা-র স্বচ্ছন্দ অনুবাদ প্রকাশিত হয়।
১৯৪১ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগ সম্মেলনে গৃহীত ঐতিহাসিক ‘লাহোর প্রসত্মাবে’র প্রেক্ষিতে কবি-র মতাদর্শগত পরিবর্তন। কবি তাঁর মুরশিদ বিশিষ্ট আলেম অধ্যাপক আব্দুল খালেকের সংস্পর্শ লাভ করেন। কবি তাঁর মুরশিদের দ্বারা বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হন। বাম ধারার মতাদর্শ থেকে ক্রমান্বয়ে ইসলামী চিনত্মা-চেতনায় পুরাপুরি উদ্বুদ্ধ হযে ওঠেন।
১৯৪২ বিয়ে হয় খালাতো বোন সৈয়দা তৈয়বা খাতুনের (লিলি) সঙ্গে। বিয়ে উপলক্ষে কবি, লিখলেন ‘উপহার’ শীর্ষক একটি কবিতা। কবিতাটি প্রকাশিত হয় ‘সওগাত’ (অগ্রহায়ণ, ১৩৪৯) পত্রিকায়।
১৯৪৩ কলকাতা আই.জি. প্রিজন অফিসে চাকরিতে যোগদান করেন। ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে’র সপ্তম অধিবেশনে কবি আবৃত্তি করেন, ‘দল-বাঁধা বুলবুলি’ ও ‘বিদায় শীর্ষক কবিতা। শুরু হয় ‘সাত সাগরের মাঝি’, ‘সিরাজাম মুনীরা’, ‘কাফেলা’ প্রভৃতি কাব্যের অনত্মর্গত কবিতার রচনা। ফররুখ এ-সময় রচনা করেন ১৩৫০-এর মন্বনত্মর বিষয়ক কবিতাগুচ্ছ।
১৯৪৪ কবির প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘সাত সাগরের মাঝি’ প্রকাশিত। সুকানত্ম ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘আকাল’-এ সংকলিত ‘লাশ’ শীর্ষক কবিতা। পিতা : সৈয়দ হাতেম আলীর ইনত্মেকাল ঃ ১০ নভেম্বর ১৯৪৪।
১৯৪৫ পি.ই.এন. আয়োজিত রাইটার্স কনফারেন্স-এ বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কাজী আবদুল ওদুদ ফররুখ-কাব্যের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কবি আব্দুল কাদির ও রেজাউল করীম-সম্পাদিত কাব্য-মালঞ্চে সংকলিত হয় কবিতাত্রয় ‘শিকার’, ‘হে নিশানবাহী’ ও ‘সাত সাগরের মাঝি’। সংকলনের ভূমিকায় গুরুত্ব লাভ করে ফররুখ কাব্য-প্রসঙ্গ। ‘মোহাম্মদী’ পত্রিকার সম্পাদনা বিভাগে যোগদান করেন। একটি অপ্রীতিকর ঘটনার দরুণ প্রায় বছরখানেক পর ‘মোহাম্মদী’ অফিসের চাকরিতে ইসত্মফা দেন।
১৯৪৬ ‘আজাদ করো পাকিসত্মান’ কাব্য-পুসত্মিকা প্রকাশিত। সর্বভারতীয় দাঙ্গার প্রেক্ষিতে লেখেন দাঙ্গা-বিরোধী গুচ্ছকবিতা। কলকাতা বেতারে আবৃত্তি করেন, ‘নিজের রক্ত’ শীর্ষক কবিতা। প্রসঙ্গত, আকাশবাণীর গল্পদাদুর আসরেও কবি অংশগ্রহণ করতেন। জলপাইগুড়িতে একটি ফার্মে অল্প কয়েক দিন চাকরি করেন।
১৯৪৭ ‘মোহাম্মদী’ অফিসের চাকরিতে ইসত্মফা দানের পর থেকে কবি বেকার জীবন-যাপন করেছেন। এ বছরেই কবি আব্দুল কাদির-রচিত ‘নবীন কবি ফররুখ আহমদ’ নিবন্ধটি কলকাতা বেতারকেন্দ্র থেকে সমপ্রচারিত হয়। কলকাতা ছেড়ে চলে আসেন শ্বশুরবাড়ি দুর্গাপর, যশোরে। ‘পাকিসত্মান ঃ রাষ্ট্রভাষা ও সাহিত্য’ শীর্ষক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় (সওগাত, আশ্বিন, ১৩৫৪)। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান। অর্জিত হলো ৪৭-এর স্বাধীনতা। ১লা সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের সূচনাকারী প্রতিষ্ঠান ‘তমদ্দুন মজলিশে’র জন্ম। ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত প্রবন্ধ ও কবিতা রচনা করেন।
১৯৪৮ কলকাতা থেকে সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকা বেতারে অনিয়মিত শিল্পী হিসেবে যোগদান। বেতারের প্রয়োজনে কবি এখান থেকে নিয়মিত গান রচনা শুরু করেন। আধুনিক, দেশাত্মবোধক, হাম্দ-নাত প্রভৃতি গানের পাশাপাশি কথিকা, নাটিকা, গীতিনাট্য, গীতিনক্শা_ এসবও রচনা করেন। পঞ্চাশের দশক থেকে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘কিশোর মজলিশ’ পরিচালনা শুরু। গদ্যনাটিকা ‘রাজরাজড়া’ প্রকাশিত (পরবতর্ীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিনীত_ মুনীর চৌধুরী প্রমুখ এই নাটকে অভিনয় করেন)।
১৯৪৯ কার্জন হলে অনুষ্ঠিত ইকবাল-জয়নত্মী বর্জন-তরুণ লেখকদের আমন্ত্রণ না করার প্রতিবাদে।
১৯৫০ ‘সিরাজাম মুনীরা’ প্রকাশিত। ঢাকা রেডিওর নিজস্ব শিল্পী হিসেবে বহাল হলেন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে সালাম, জব্বার, রফিক, শফিকের শাহাদতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাইরে, ঢাকা বেতারেই প্রথম প্রতিবাদ ধ্বনিত। সোচ্চার হলেন ফররুখ। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইসলামী সাংস্কৃতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ।
১৯৫১ ফররুখ আহমদকে (পনেরো জন শিল্পীসহ) ছাঁটাই করা হলো। বেতারশিল্পীদের সতেরো দিনব্যাপী ধর্মঘটের প্রেক্ষিতে ফররুখ (অন্যান্য শিল্পীসহ) চাকরিতে পুনর্বহাল।
১৯৫২ সিপাহী বিপ্লব শতবার্ষিকী সংগঠনের সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ। এ-উপলক্ষে কবিতা ও গান রচনা।
১৯৫৩ ঢাকা বেতার থেকে ‘নৌফেল ও হাতেম’ কাব্যনাট্য প্রচারিত। এই নাটক প্রযোজনা করেন ও নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন খান আতাউর রহমান।
১৯৬০ প্রেসিডেন্ট পুরস্কার ‘প্রাইড অব পারফরমেন্স’ লাভ করেন। এ বছরই বাংলা একাডেমীর পুরস্কার প্রাপ্তি (কবিতা) ও একাডেমীর ফেলো নির্বাচিত হন। বাংলা একাডেমী উদ্যাপিত নাট্য-সপ্তাহে ‘নৌফেল ও হাতেম’ মঞ্চস্থ।
১৯৬১ কাব্য নাট্য ‘নৌফেল ও হাতেম’ প্রকাশিত। এ সময়ে সরকারী সফরে উত্তর ও দক্ষিণ বাংলা ব্যাপকভাবে পরিভ্রমণ করেন। অধ্যাপক মুহম্মদ আব্দুল হাই-এর সভাপতিত্বে ঢাকা হলে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা-বাসরে প্রাণঢালা সংবর্ধনা পেলেন কবি। ফররুখ সাহিত্য-প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন সৈয়দ আলী আহসান, মুনীর চৌধুরী, আহসান হাবীব, আবুল হোসেন, শামসুল হুদা চৌরুরী প্রমুখ। মানপত্র পাঠ করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। ফররুখের কবিতা আবৃত্তি করেন কবি শামসুর রহমান, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, বদরুল হাসান, সালমা চৌধুরী ও শবনম মুশতারী। আব্দুল আহাদের পরিচালনায় ফররুখ-সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফরিদা ইয়াসমীন, আব্দুল লতিফ, আফসারী খানম, বিলকিস নাসিরুদ্দীন, রওশন আরা বেগম, ফজলে নিজামী প্রমুখ।
১৯৬৩ ‘মুহূর্তের কবিতা’ প্রকাশিত। এ বছরই ফারুক মাহমুদ-সম্পাদিত ‘ধোলাই কাব্য’ গ্রন্থে কবির ছদ্মনামে লেখা ব্যঙ্গ-কবিতা সংকলিত। সাহিত্য সপ্তাহ উদ্যাপিত হয়। এ উপলক্ষে চর্যাপদ থেকে ফররুখ আহমদের কবিতা পর্যনত্ম আবৃত্তির আয়োজন করা হয়। এতে কবির ‘ডাহুক’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
১৯৬৫ শিশু-কিশোর কবিতা সংকলন ‘পাখির বাসা’ প্রকাশিত। পাক-ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কবি রচনা করেন ‘জঙ্গী জোয়ান চল বীর’, ‘শহীদের খুনরাঙা কাশ্মীর’, ‘জেহাদের ময়দানে চল যাই’ প্রভৃতি উদ্দীপনামূলক গান।
১৯৬৬ ‘হাতেম তা’য়ী’ প্রকাশিত। এ বছর ‘পাখির বাসা’ কাব্যের জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার ও হাতেম তা’য়ী কাব্যের জন্য আদমজী পুরস্কার পান। শেষবারের মতো ঢাকার বাইরে, অগ্রজ সৈয়দ সিদ্দিকী আহমদের সঙ্গে দেখা করতে ফরিদপুরে গমন। ফিরে এসে লিখলেন ‘বৈশাখ’, ‘পদ্মা’, ‘আরিচার-পারঘাটে’ প্রভৃতি সাড়া-জাগানো কবিতা। স্বৈরাচারী আইয়ুবী শাসনের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার-প্রদত্ত ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ খেতাব প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯৬৮ শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ ‘হরফের ছড়া’ প্রকাশিত।
১৯৬৯ শিশু-কিশোর কাব্যগ্রন্থ ‘নতুন লেখা’ প্রকাশিত। সুনীলকুমার মুখোপাধ্যায় প্রণীত গবেষণা গ্রন্থ ‘কবি ফররুখ আহমদ’ প্রকাশিত। ফররুখ আহমদের উপর রচিত এটাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ। প্রখ্যাত শিল্পী মোসত্মফা আজীজ এ বছর (২৯ জুলাই) কবির একটি পোট্রর্েট অাঁকেন। দেশব্যাপী শুরু হয় ঊনসত্তরের গণআন্দোলন।
১৯৭০ ছড়াগ্রন্থ ‘ছড়ার আসর’ (প্রথম ভাগ) প্রকাশিত হয়। দীর্ঘ দুই দশকেরও অধিক কালব্যাপী কবি ঢাকা বেতারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ বছরই ঢাকা বেতারের মুখপত্র পাক্ষিক ‘এলানে’র (বর্তমান বেতার বাংলা) নভেম্বর (১ম পক্ষ) ১৯৭০ সংখ্যার প্রচ্ছদ ও প্রসঙ্গ কবি ফরুখ আহমদ প্রসঙ্গ গুরুত্ব লাভ করে।
১৯৭১ কবি ঢাকা বেতারে শেষবারের মতো কবিতা আবৃত্তি করেন। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভু্যদয়।
১৯৭৩ স্বাধীনতা-পরবতর্ীকালে চাকরির ক্ষেত্রে কবি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন। এ সময়ে ‘ফররুখ আহমদের কি অপরাধ’ (গণকণ্ঠ, ১ আষাঢ় ১৩৮০) শীর্ষক তীব্র, তীক্ষ্ন প্রতিবেদন লেখেন আহমদ ছফা। এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা কেন্দ্রের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে কবির চাকরি পুনর্বহাল।
১৯৭৪ কবির স্নেহভাজন অধ্যাপক মুহম্মদ মুতউর রহমানের অনুরোধে শেষবারের মত স্বকণ্ঠে ‘সিরাজাম মুনীরা’ কবিতা আবৃত্তি করেন। কবির বাসায় মাওলানা আলাউদ্দীন আল্-আযহারীর উপস্থিতিতে মুহম্মদ মতিউর রহমান আবৃত্তিটি টেপ করেন এবং সে বছর সীরাতুন্নবী অনুষ্ঠানে তা প্রচারের ব্যবস্থা করেন। সামাজিক ও দৈনন্দিন নানাবিধ কারণে কবির মন ও শরীর ভেঙে যায়। এ বছর জুন মাসে (আষাঢ় ১৩১৮) লেখেন তাঁর সর্বশেষ কবিতা ঃ দুর্ভিক্ষ বিষয়ক কবিতা ‘১৯৭৪ (একটি আলেখ্য)’। এ ছাড়া লেখেন হাম্দ-নাত, গাদ্দাফী প্রাসঙ্গিক একগুচ্ছ কবিতা, তরজমা করেন মাওলানা শফিউদ্দিন (দাদাজী)-কে নিবেদিত একটি দীর্ঘ উদর্ু ক্বাসিদা। ১৯ অক্টোবর, শনিবার, সন্ধ্যেবেলা (রমজান মাস) ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকায় ইনত্মেকাল। শাহজাহানপুরে কবি বেনজীর আহমদের বাসস্থান ও মসজিদ সংলগ্ন আমবাগানে মরহুমের লাশ দাফন। পরবতর্ীকালে বেনজীর আহমদের মৃতু্যর পর তাঁর লাশও পাশাপাশি দাফন করা হয়।
১৯৭৬ ‘ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা’ প্রকাশিত।
মরণোত্তর পুরস্কার
১৯৭৭ একুশে পদক।
১৯৭৮ স্বাধীনতা পুরস্কার।
১৯৭৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশন পুরস্কার।
১৯৮০ জুন মাসে বাংলা একাডেমী কতর্ৃক ‘ফররুখ আহমদ রচনাবলি’, ১ম খণ্ড প্রকাশিত।
১৯৮১ জুন মাসে বাংলা একাডেমী কতর্ৃক ‘ফররুখ আহমদ রচনাবলি’, ২য় খণ্ড প্রকাশিত।
১৯৮২ ঢাকায় ‘ফররুখ একাডেমী’ প্রতিষ্ঠিত। প্রাতিষ্ঠানিক ফররুখ চর্চার শুরু।
১৯৮৩ আনত্মর্জাতিক মাতৃভাষা উদ্যাপন কমিটি কতর্ৃক অন্য নয়জন বিশিষ্ট ভাষা-সৈনিকের সাথে ‘ভাষা-সৈনিক সংবর্ধনা ও পুরস্কার (মরণোত্তর)’ প্রদান।
Discussion about this post