প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম- নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম যেখানে হু হু করে বেড়ে গিয়ে সাধারন মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে, সেখানে সরকারী উদ্যোগে বিদ্যুতের ১৫কোটি সাধারন জনগনের স্বার্থ চিন্তা না করে আর এক দফা মুল্য বৃদ্ধি প্র¯Íাবকে যুক্তিযুক্ত মনে করে সায় দেয়া এবং সয়াবিন সহসকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের একতরফা মুল্যবৃদ্ধিতে নিজেকে নিস্কৃয় করে রেখে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরÿনে কাজ করায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেশন কমিশন ও ট্যারিফ কমিশনকে অবিলম্বে পুর্ণগঠন করে অবিলম্বে যোগ্যলোকদেরকে নিয়োগের দাবী জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী সংগঠন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও মহানগর কমিটি। সম্প্রতি এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের বিদ্যুতের মুল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ পত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন ভুর্তকি হ্রাসের অজুহাতে আকস্মিক ভাবে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধি চলমান জীবনযাত্রার মুল্যবৃদ্ধি মধ্যবিত্তসহ সাধারন জনগনের জীবন যাপনে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার দ্রব্যসামগ্রী ও জীবনযাত্রার উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার ১৫কোটি ভোক্তার জন্য ভুর্তকি না দিয়ে গুটিকয়েক ব্যবসায়ীদের জন্য ভুর্তকি দিবে এটাই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সকল দ্রব্যসমাগ্রী ও সেবা সার্ভিসের আরেক দফা আগুন ধরাবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভোক্তাদের স্বার্থ চিন্তা না করে ভুর্তকি হ্রাস, সিস্টেম লস, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ’র পরামর্শে ১ এপ্রিল’১২ থেকে বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে হঠকারী ও দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে এ প্রক্রিয়াকে হতাশাজনক ও সরকারের গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর স্বার্থ সংরক্ষণের বর্হিপ্রকাশ বলে অবিলম্বে এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ও কমিশন পুর্নঃগঠনের জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ আরও অভিযোগ করেন বিদ্যুৎ বিভাগের কান্ড জ্ঞানহীন ম্যারাথন লোডশেডিং, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে উপরি আদায়, মিটার নস্ট ইত্যাদি বলে গড় বিল আদায়, মিটার টেম্পারিং, ট্রান্সফরমার বানিজ্য, জুনের আগের অধিক বিল করে গ্রহাকের উপর বিলের বুঝা চাপিয়ে টার্গেট পুরণ, অধিকন্তু চুক্তিভিত্তিক ভাড়াটিয়া মিটার রিডারদের মাধ্যমে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আদায়, ডিজিটাল মিটার স্থাপনের পর আবার নতুন করে যোগ হয়েছে বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধি। সরকার বিদ্যুৎ বিভাগের চুরি বন্ধ না করে, সেবার মান না বাড়িয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ও ডিজিটাল মিটারের নামে নতুন মিটার স্থাপনে গ্রাহককে বাধ্য করার বিদ্যুৎ বিভাগের সিদ্ধান্তকে অপরিপক্ষ ও জনস্বার্থ বিরোধী বলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এটি বন্ধের দাবী জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও অভিযোগ করেন বর্তমানে দ্রব্যমুল্যের যে উর্ধ্বগতি পাগলা ঘোাড়া বাজারের আগুন ছড়াচ্ছে যা মধ্যবিত্ত জনগনসহ সর্বস্থরের সাধারন নাগরিকদের জীবনযাত্রাকে ভয়াবহ দুর্বীসহ করছে, সাধাররন মানুষ এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামবৃদ্ধি, জীবন রÿাকারী ওষধের সীমাহীন মুল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, বাড়ীভাড়া বৃদ্ধি ইত্যাদি যন্ত্রণায় কাতর সেখানে বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধি এ যন্ত্রণাকে বহুগুনে বাড়িয়ে দিবে। বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধির কারনে কৃষি, শিল্প, ব্যবসা বানিজ্য ইত্যাদি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শিল্প কারখানাসমুহে নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদন এবং ফিনিশিড প্রোড়াক্টস’র মুল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ কার্যকর ভুমিকা রাখে বিধায় এসমস্ত উৎপাদিত পণ্যের ভোক্তা পর্যায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন, ট্যারিফ কমিশন ও সরকার দেশের ১৫ কোটি ভোক্তার স্বার্থ চিন্তা না করে গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসীয়দের স্বার্থ সংরক্ষণে বদ্ধ পরিকর এবং সেকারনে কম্পিটিশন পলিসি অ্যাক্ট বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে, অতচ মুষ্ঠিমেয় অসৎ ব্যবসায়ী ও মুজদদাররা নানা টালবাহনায় এবং অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজণীয় সকল পণ্য ও জীবনরÿাকারী ওষধের দাম বাড়িয়ে, বিনা নোটিশে বাস ভাড়া, পরিবহন ভাড়া, সকল প্রকার ভোগ্যপণ্য ও জীবন রÿাকারী ওষধের দাম বৃদ্ধি, সাময়িক সংকট তৈরী করে, জনজীবনে দুর্বীসহ অবস্থা তৈরী করলেও ট্যারিফ কমিশন ও সরকার কোন কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। যা একটি জনকল্যাণমুখী সরকারের পÿে কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিষয়টি সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসে ও রাজনৈতিক সংকটে ভয়ংকর হতে পারে এবং সামগ্রিক ভাবে সমাজে অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
তারা আরও বলেন গ্রীস্মকাল শুরুতেই বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং এর কারনে জনজীবন অতিষ্ঠ, ক্যাবসহ নগরবাসী বারংবার লোডশেডিং বন্ধ, লোডশেডিং এর অগ্রিম ঘোষনার দাবী জানালেও সরকার বিদ্যুৎ বিভাগের চুরি, অবৈধ সংযোগ বন্ধ না করে, ট্রান্সফরমার বিকল বানিজ্য বন্ধ না করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ও নতুন করে ডিজিটাল মিটার স্থাপানের নামে গ্রাহকদের উপর নিত্য নৈমত্তিক ঝামেলা পাকিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্ঠিতে ইন্ধন যোগাচ্ছে বলে মত প্রকাশ করে অবিলম্বে এ ধরনের হঠকারি সিন্ধান্তের পিছনে বিপদগামী রাজনৈতিক শক্তির মদদ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আহবান জানানো হয়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন বিগত সরকার গুলি যেভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় ভোক্তাদের বিষয়টি চিন্তা না করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিবর্তে ২০০০কোটি টাকার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। বর্তমান সরকারও পুর্বেকার ধারা অব্যাহত পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি সংস্কার না করে ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, রেন্টাল পাওয়ারে জন্য শুল্কমুক্ত জ্বালানী আমদানী, বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ না করে, সেবার মান না বাড়িয়ে জনগনের উপর মুল্যবৃদ্ধির যন্ত্রনা চাপিয়ে দিয়ে পুর্বশুরীর ধারা অব্যাহত রেখেছেন, এটি গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটি সদস্য এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের ভারপ্রাপ্ত জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব মহানগর নেতা অধ্যক্ষ দবিরউদ্দীন খান, হাজী ইকবাল আলী আকবর, রাশেদ খান মেনন, উম্মেকুলসুম আরজু, হাজী আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা ছালে আহমদ, আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, আবিদা আজাদ, শিক্ষক নেতা লকিয়ত উল্লাহ, অঞ্চল চৌধুরী, কাজী সমিতির নেতা ইউসুফ চৌধুরী, উন্নয়ন কর্মী শাহাদৎ হোসেন, দেলুয়ার হোসেন, নারী নেত্রী শাহনাজ পারভীন লুনা, সায়মা হক, দীপিকা বড়–য়া, হারুন গফুর ভুইয়া, জানে আলম প্রমুখ।
Discussion about this post