ডেস্ক : রসালো ও সুস্বাদু ফল লিচুর চাষ মাগুরায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলায় এবার ৩ হাজার লিচু বাগানের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে লিচুর মুকুল। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় জেলায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে , জেলার ৮০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩ হাজার লিচু বাগান রয়েছে। এসব বাগানের প্রত্যেকটি গাছে ব্যাপকভাবে ফুল ও মুকুল এসেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সদর উপজেলার ৬৬০ হেক্টর জমিতে প্রায় দুই হাজার বাগান রয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। এ লক্ষ্যে লিচু চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। দেখা গেছে, জেলার সদর উপজেলার হাজিপুর, হাজরাপুর, ইছাখাদা, খালিমপুর, মিঠাপুর, আলমখালি, রাউতাড়া, কুছুন্দি, রামনগর, শিবরামপুর, নড়িহাটি, আলিধানীসহ জেলার বিভিন্ন গ্রামে লিচু বাগানের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে লিচুর মুকুল। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, লিচু চাষিরা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় লিচু বাগানের গাছে আসা মুকুল পরিচর্যা করছে ব্যাপকভাবে। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও ফুল ফোটার সময় ঘন কুয়াশা না থাকায় লিচু বাগানের সব গাছের মুকুল থেকে ভালো ফল আসবে বলে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় মৌচাষীরা মধু সংগ্রহের জন্য লিচু বাগানে মৌমাছি ছেড়েছে। এর ফলে ফুলের পরাগায়ন ভালো হচ্ছে। এসব কারণে চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন দেড় থেকে দুই গুণ বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব গ্রামের কৃষকরা লিচু মৌসুমকেই তাদের কৃষি পণ্য উৎপাদনের মূল মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করেন। যে কারণে তারা মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধমে এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করেন। এক একজন কৃষক এক একটি বাগান ভেদে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করে এই লিচু চাষ করে থাকে। গত বছর জেলার লিচু চাষীরা প্রায় ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করেছে। এ বছর ফলন ভালো হলে চাষীরা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামের লিচু চাষী আবু জাফর জানান, তার ৩ একর জমিতে প্রায় আড়াই শতাধিক গাছে ব্যাপক মুকুল এসেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় তিনি লিচুর মুকুল পরিচর্যা করছেন। গত বছর তিনি তার বাগান থেকে ৩ লাখ টকার লিচু বিক্রি করেছিলেন। এ বছর ৪ লাখ টাকা লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করছেন। ইছাখাদা গ্রামের কৃষক ওলিয়ার বিশ্বাস জানান, আবহওয়া ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে লিচুর ব্যাপক মুকুল হয়েছে। গত বছরের তুলনায় লিচুর দ্বিগুণ ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার চক্রবর্তী বলেন, জেলায় লিচু চাষ সফল করতে ‘গুড এ্যাগরিকালচার প্রাটিস’ প্রযুক্তিতে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবহওয়া ভালো থাকায় লিচুর ফুল ও মুকুল খুব ভালো হয়েছে। আশা করছি জেলার লিচু চাষীরা এ বছর বাম্পার ফলন পাবেন।
Discussion about this post