মাতৃভাষা বাংলা শেখার জন্য কতটা কাঠ-খড় পোড়াতে হয় তা একমাত্র বিদেশে বসবাস করা প্রবাসীরাই বলতে পারবেন। বিশেষ করে যে সব দেশে বাংলা স্কুল নেই সে সব দেশের অভিভাবকরা বেশি চিন্তিত তাদের সন্তনদের নিয়ে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদিআরব, বাহরাইন, ওমান, আরব আমিরাত সহ আশে পাশের দেশ গুলোতে সরকারী বেসরকারী বা কমিউনিটির বেশ কিছু বাংলাদেশী স্কুল থাকলেও তেমনটা নেই কুয়েতে। কুয়েতে প্রবাসীরা তাদের সন্তানদের বাংলা শিক্ষা দিতে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে ১৯৯৪ সাল থেকে অধ্যবদি চালিয়ে আসছেন বাংলা স্কুল। শুরুটা তেমন সহজ ছিলো না। নিজ সন্তানদের বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি শিক্ষার দেওয়ার কথা চিন্তা করে মাত্র চার জন শিক্ষার্থী নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামিক টিচিং সেন্টার বি,আই,টি,সি , কুয়েত নাম দিয়ে শুরু করেন। দীর্ঘ ত্রিশ বছর নানা চড়াই-উতরাই পারি দিয়ে নিরভে নির্বিত্তে কুয়েতে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশী সন্তানদের বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সহ ইসলামি শিক্ষা দিয়ে আসছে এই নিবন্ধনহীন বি,আই,টি,সি স্কুলটি। স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মোস্তাকুর রহমান বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েত এর সভাপতি সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার সুমন কে জানান কুয়েত সরকারের মিনিস্ট্রি অফ আউকাফ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুদের ইসলামি শিক্ষা প্রদানের অনুমতি নিয়ে ১৯৯৪ সালে ফ্রিতে একটি ক্লাসরোম নিয়ে শুরু করেছিলেন কুয়েতে তাদের কার্যক্রম। ধিরে ধিরে এর পরিধি বেড়ে বর্তমানে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত বাংলা ভাষার পাশাপাশি এবং আন্তর্জাতিক কারিকুলামে স্কুল এবং মাদ্রাসার সিলেবাস পড়ানো হয়। তবে সকল শিক্ষার্থাদের দেশে গিয়ে পরিক্ষা দিতে হয়। কুয়েতে নিজ দেশের নামে নিবন্ধিত না থাকায় বর্তমানে কুয়েতের খাইতানে আরেকটি পাকিস্তানি স্কুলের স্কুলের কয়েকটি রুম ভাড়া করে চালিয়ে যাচ্ছেন বি,আই,টি,সি’র শিক্ষা। এখানে কুয়েতে জন্ম নেওয়া শিশু কিশুরদের শুধুমাত্র বাংলা অক্ষর শিক্ষার হাতে খরি ধরাতে আলাদা ক্লাস নেওয়া হয় বলে জানান। স্কুলে ভর্তির শুরুতে বাংলাদেশের স্কুল এবং মাদ্রাসা উভয় সিলেবাসে পড়ানো হয় যাতে শিক্ষর্থীরা উচ্চ ক্লাসে উঠে চাহিদা মত পড়া চালিয়ে যেতে পারেন। এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা কেউ ডাক্তার কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার। নাম মাত্র ফি দিয়ে এখানে পড়াতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অভিভাকরাও। কুয়েতে ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন সহ বিভিন্ন দেশের অসংখ্য স্কুল রয়েছে। প্রায় তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী অবস্থান করা দেশটিতে টপ টেন জনসংখার দিক থেকে বাংলাদেশ চতুর্থ । যাদের অনেকেই স্বপরিবারে এখানে বসবাস করছেন। সংশিষ্টরা আশা করেন অদুর ভবিষ্যতে এখানে নিজ দেশের নামে একটি স্কুল হবে যেখানে লাল সবুজের আলো ছড়াবে।
Discussion about this post