কুয়েত থেকে প্রবাস বাংলা মিডিয়া কর্তৃক দি পাথফাইন্ডার পাবলিকেশন্স এর প্রকাশনায় দ্বিতীয় বই “রেমিট্যান্স যোদ্ধা” বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালের বহুল আলোচিত ও পতিত সরকারের কাঙ্খিত প্রার্থনা ছিল “রেমিট্যান্স”। বইটিতে সেই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নামকরণ করা হয় “রেমিট্যান্স যোদ্ধা”। প্রবাসে যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রেমিট্যান্স অর্জন করেন, তাদের নানা রকম সমস্যা সম্ভাবনা, অধিকার,মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবি-দাওয়া এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাণশক্তি ও সমৃদ্ধির বাহক রেমিট্যান্স। বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১২ শতাংশ থেকে আসে রেমিট্যান্স থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ঋণ ও সহায়তার চেয়েও রেমিট্যান্স এর গুরুত্ব ও অবদান বেশি স্থিতিস্থিল। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ২৪ আগস্ট এর “রেমিট্যান্স শাটডাউনে” স্বৈরাচারের পতন ত্বরান্বিত হওয়া। বাংলাদেশ সরকারের কর্তা ব্যক্তিগণ, প্রবাসীদের অর্থনীতির প্রাণভোমরা, বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি ইত্যাদি চমক পদ উপাধিতে ভূষিত করে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছেন, সেই দিন এখন অতীত হলেও আগামী দিনেও প্রবাসীদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে না পারে, প্রবাসীদের ঘুম থেকে জাগাতে, অধিকার সচেতন করতে, মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে কুয়েত থেকে প্রবাস বাংলা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত করা হয়েছে”রেমিট্যান্স যোদ্ধা” বইটি। দেড় কোটি প্রবাসীদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বে দিতে সক্ষম বইটি। রেমিট্যান্স যোদ্ধা সোসাইটি কুয়েত বইটির অনুপ্রেরণার ফসল।
প্রবাসীরা নিজের জীবনের সুখ বিসর্জন দিয়ে পরিবার রাষ্ট্রের জন্য তাদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠান, তারাই রেমিট্যান্স যোদ্ধা, যদিও রাষ্ট্রীয়ভাবে এর কোন স্বীকৃতি নেই, অদ্যবধি রাষ্ট্র, প্রবাসীদের কল্যাণে, প্রবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় কোন আইন প্রণয়ন করেন নি। যা হয়েছে মানব সম্পদ (বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইনে ১৩ – প্রবাসীদের পণ্যের মতো) মানুষ বেচাকেনার আইন, মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী, সচিব, কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মসংস্থান মাত্র। অথচ হওয়ার দরকার ছিল প্রবাসীদের মর্যাদা, অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার আইন। মানব সম্পদ উন্নয়নের নামে চলছে লুটপাট, প্রবাসীদের যোগ্য নাগরিক মর্যাদা দেওয়া হয়নি, প্রবাসীদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা হয়নি, প্রবাসীদের সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান ঝুলে আছে যুগের পর যুগ। সরকার বিভিন্ন আইন করে প্রবাসীদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার রাষ্ট্রপরিচনায় অংশগ্রহণ, সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরী। প্রবাসীদের অবহেলা করার দিন শেষ, বইটিতে আগামীর উন্নয়নশীল বাংলাদেশ গড়তে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে লেখনি চালানো হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিটি সরকার প্রবাসীদের রেমিটেন্সের অর্থৈ ভোগ বিলাসে রাষ্ট্র পরিচালনা করেও প্রবাস বান্ধব সরকার হতে পারেননি, বরং হয়ে উঠেছেন রক্ষক হিসেবে। তাইতো প্রবাসীদের কল্যাণে উল্লেখযোগ্য কিছুই করেনি, ফলে প্রবাসীরা হাজারো সমস্যায় জর্জরিত হয়ে জীবন যাপন করছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধা বইটিতে প্রবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের সমাজের পরিবারের সদস্যদের অবহেলা, প্রবাসীদের তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। প্রবাসীদের সচেতন করতে বইটিতে প্রবাসীদের অধিকার ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রবাসীরা সচেতন হলেই, প্রবাসীরা বিদেশে ভালো থাকলেই বাংলাদেশ ভালো থাকবে।
রেমিট্যান্স যোদ্ধা বইটিতে গুরুত্বের সঙ্গে যা জানা যাবে, ছাত্র আন্দোলনে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভূমিকা ও অবদান ভূমিকা,বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের গুরুত্ব ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা, রেমিট্যান্স যোদ্ধার উপাখ্যান,প্রবাসীদের সচেতন, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার কথামালা, দেড়কোটি প্রবাসীদের ১২ দফা দাবি,
-শ্রমবাজার, অভিবাসী সমাধানে করণীয়
রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার মূল কারণ, প্রবাসের জীবন যেভাবে আনন্দময় হয়,
ফ্রি ভিসা বলতে কুয়েতে কিছুই নেই,
প্রবাসে মিডিয়াকর্মীদের যা করণীয়
এবং প্রবাসীদের জীবনযাত্রার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা।
আমরা আশাবাদী, বইটি পড়ে প্রবাসের এবং দেশের মানুষের অনেক অজানা তথ্য জানতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশ সরকারের এর দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রবাসীদের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হবেন। রেমিট্যান্স যোদ্ধা বইটির সুবহুল প্রচারণা কামনা করছি।
ধন্যবাদান্ত, আ ক ম আজাদ, সম্পাদক প্রবাস বাংলা মিডিয়া কুয়েত।
Discussion about this post