ঢাকা: সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রকারী যতবড় শক্তিই হোক সেনা আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো ষড়যন্ত্রকারী বা অগণতান্ত্রিক শক্তি দেখতে চায় না। এদেশের মানুষ সংবিধান ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার গণভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রী ও অগণতান্ত্রিক শক্তির স্থান বাংলাদেশে নেই।
সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের একটি চেষ্টা চালানো হয়েছিলো যা নস্যাৎ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সেনা সদর দপ্তর এমন তথ্য জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ এসব কথা বলেন।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘সেনাবাহিনীর এ ঘটনা তারা নিজেরাই জানিয়েছে এবং এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমেই আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর আগে বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা ছিলো কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমাদের কাছে ছিলো না।’
খাগড়াছগি আ’ লীগের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের পর এ ব্রিফিং ডাকা হয়।
ওই বৈঠকের বিষয়ে সৈয়দ আশরাফ জানান সংগঠনকে শক্তিশালীর করার বিভিন্ন দিক নিয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম আরো বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে যে তথ্য দেয়া হয় সেটাই আমাদের মুল সূত্র। এর আগেও কানাঘুষা ছিল। তবে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলনে জানতে পারলাম কারা দায়ী, কেন করেছে, কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের সময় শেষ। অতীতে সফল হলে এখন আর পারবে না। যেই ষড়যন্ত্র করুক চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমার ধারণা, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সেনাবাহিনী তাদের সেনা আইনে সঠিক ব্যবস্থা নেবে।’
আশরাফ আরো বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই ধরণের ষড়যন্ত্রের কোনো স্থান নেই। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র, আইন ও সংবিধানে বিশ্বাসী। বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি এর ছাড় দেবে না। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের অনুরোধ করবো অনতিবিলম্বে আত্মসমর্পণ করুন। তা না করলে তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সৈয়দ আশরাফ গণতন্ত্রের স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নানা বিষয়ে দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রশ্নে কারো মধ্যে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র নষ্ট হলে শুধু রাজনৈতিক দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র রক্ষা শুধু সরকারের একার দায়িত্ব নয়। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রত্যেকের দায়িত্ব। গণতন্ত্র ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যত নেই। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যব্স্থা হুমকির মুখে নয়। অনেক কষ্টে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সবার দায়িত্ব গণতান্ত্রিক শাসন ব্যব্স্থা ধরে রাখা এবং নিশ্চিত করা।’
আশরাফ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচন হবে। জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই সরকারে আসবে। গণতন্ত্র ব্যাহত হলে কেউ একা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও ব্যাহত হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
Discussion about this post