আজ ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করার আহবান জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালি নিধনের এই কালোদিনটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে জাতীসংঘ সহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, যুক্তরাষ্ট্রের শাখা।
যুক্তরাষ্ট্রের একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত যুক্তরাষ্ট্রেও ২৫ মার্চ গণহত্যার কালরাত্রি পালনের কর্মসূচী হিসেবে নিউইয়র্কের কুইন্সের বাঙ্গালীর প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসে সমবেত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে প্রদীপ প্রজ্বলন করছে .২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবিতে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে সমাবেশ করেছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও । বিকালে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার দাবি করা হয়। সমাবেশস্থলে একাত্তরের গণহত্যার বিভিন্ন তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। সমাবেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাক্ষীদের নিরাপত্তা, ৭২-এর মূল সংবিধান পুনরুদ্ধার, আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক সহায়তা আদায়ে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশের গণহত্যার ৪১তম বার্ষিকীতে আমরা জাতীসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানাতে চাই- ২৫ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ ঘোষিত হোক। এই দিন আমরা স্মরণ করতে চাই বিশ্বের সেই সব মানুষকে যারা গণহত্যার শিকার হয়েছেন। নিহতদের স্মরণে আমরা প্রত্যেকে অন্তত একটি মোমবাতি জ্বালাতে চাই, যে আলো ঘাতকের চেতনা থেকে হিংসা, বিদ্বেষ ও হানাহানির কালিমা দুর করবে’।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন ঘাতক-দালাল নির্মূল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ড. আব্দুল বাতেন, সম্পূর্ণ আলো আধারির মধ্যে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন “আগুনের পরশমনি ছোঅও প্রাণে, এ জীবন পুণ্য কর,”এর পর এক আবেগময় আলেক্ষ পাঠ করেন বিশিষ্ট নাটটো শিল্পী এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক গোষ্টি উত্তর আমেরিকার আহবাযক লুত্ফুন্নাহার লতা | এর পর গান নিয়ে আসেন তাহমিনা শহীদ তার গান এর করুণ সুর সবার রিদয় ছুয়ে যায়. সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বর্ষিয়ান সঙ্গীত শিল্পী শফি চৌধুরীর , নিউইয়র্ক ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্ঠা চলচ্চিত্রকার কবির আনোয়ার, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার নুরুন্নবী, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক খুরশিদ আনোয়ার বাবলু, মানবাধিকার নেতা রতন বড়-য়া, মিজানুল হাসান , প্রমুখ। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান টির সমন্নয় করেন একাত্তরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য ও উত্তর আমেরিকার সমন্নয়কারি আল আমিন বাবু
এ বছর স্বাধীনতা ও গণহত্যার ৪১তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেশে দেশে আমাদের আলোর মিছিলে আমরা সামিল করতে চাই সেই সব দেশ ও জাতীসত্তার মানুষদের, যেসব দেশ ও জাতী সভ্যতার নৃশংসতম অভিশাপ গণহত্যার শিকার হয়েছে এবং ঘাতকদের বিচারের অপেক্ষা করছে। গণহত্যার অন্যতম ভুক্তভোগী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশে যেভাবে আমরা গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তুলেছি, সেভাবে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের পক্ষে বিশ্বজনমত সংগঠিত করা। এ ক্ষেত্রে আমাদের তরুণ প্রজন্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অবগত হতে পারে ৭১ এর গণহত্যা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণহত্যা সম্পর্কে এবং ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে পারে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের দাবিতে’।’আমরা আশা করর যেভাবে শেখ হাসিনার সরকার প্রথম মেয়াদকালে জাতিসংঘের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারীর স্বীকৃতি আদায় করেছে, ঠিক একইভাবে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের জন্য জাতিসংঘে এবং দেশে দেশে কুটনৈতিক তৎপরতা চালাবে। আমরা বিশ্বাস করি সরকার উদ্যোগী হলে বিশ্বের যত দেশে আমাদের মতো ভুক্তভোগীরা আছে সবাই এই দাবির সঙ্গে সহমত পোষন করবে’। আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ২৫ মার্চের স্বীকৃতি আদায়ে সোচ্চার হওয়ার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের ব্প্রবাসী বাঙালিদের প্রতিও উদাত্ত আহবান জানায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
Discussion about this post