মোবারক বিশ্বাস বাংলার বার্তা সংবাদদাতাঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ‘উধাও হয়ে যেতে পারে ডেসটিনি’ শিরোনামে যুগান্তর, প্রথম আলো সহ দেশের র্শীষ স্থানীয় পত্রিকা গুলোতে একাধিক তথ্য সংবাদ প্রকাশিত হলে সারাদেশের ন্যায় পাবনা, চাটমোহরসহ পাশ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর উপজেলার ডেসটিনিতে বিনিয়োগ করা সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উদ্বেগ ও তোলপাড় শুরু হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা গুলোতে গ্রাহকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা নগদ টাকা জমা দিয়ে খুঁইয়ে যেতে বসেছেন। বিভিন্ন স্থানে টাকা ফেরত চাচ্ছেন গ্রাহকরা। আবার অনেকে অফিস গিয়ে গ্রাহক টাকা ফেরত চাওয়ায় অফিস খোলা হচ্ছে না। এ অঞ্চলের অনেক স্থানে শাখা কর্মকর্তারা গা-ঢাকা দিয়ে চলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গতকাল শহরের ডেসটিনির অফিসে গিয়ে অফিস তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। কর্মকর্তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কারও সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ডেসটিনির প্রতারণা ও দুর্নীতির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে তথ্য পেয়ে সরকার এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নড়ে চড়ে বসেছে বলে জানা গেছে। তারা ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ডেসটিনির বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় গ্রহন করা হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ডেসটিনির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ডেসটিনির অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। প্রতিবেদনের তথ্য ও সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডেসটিনিসহ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, এদের কার্যক্রম এখন যেন আমাদের কালচার হয়ে গেছে। এসব কালচার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ডেসটিনির দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। ডেসটিনির ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বলেছেন, লোকদেখানো কোন ব্যবস্থা যেন সরকার না নেয়। তারা বলেন, কোন ধরনের মূলধন ছাড়াই ডেসটিনি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে হাজার হাজার কোটি টাকা বানিয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত মানুষের কাছে নতুন প্রকল্পের অফার নিয়ে যাচ্ছে। তাদের কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হলে যে কেউ বছরের মাথায় কোটিপতি হয়ে যেতে পারেন, এমন প্রলোভনে পড়ে দেশের আধাশিক্ষিত, সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হচ্ছেন। তারা বাড়ির জমিজমা, গরু-ছাগল বিক্রি করে ডেসটিনির বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা জমা দিচ্ছেন। কিন্তু তারা জানেন না আদৌ তাদের ভবিষ্যৎ কি? পাঠকরা অনেক হকারের কাছে পত্রিকা কিনেছেন ১০ টাকা দিয়ে। কোথাও বা ফটোকপি করে বিশেষ খবরটি ডেসটিনি গ্রাহকরা সংগ্রহ করেছেন। কয়েকজন ক্ষোপ প্রকাশ করে বলেন, ডেসটিনির লোকজন টাকা নিয়ে তাদের একটি আইডি কার্ড (নম্বর সি.আই.ডি- ৫১৮৩৮৩৫) ধরিয়ে দেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ডেসটিনিকে একটি হায় হায় কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত করে এ ধরনের আশংকার কথা প্রকাশ করায় এবং এ কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় সরকার, পল্ল¬ী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও সমবায় অধিদফতরকে তদন্ত টিম এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করায় গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।
Discussion about this post