নজরুল ইসলাম মিন্টু বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ বর্ষাকাল এলেই যমুনা নদীর ভাঙ্গনে একের পর এক জনপথ নদীবক্ষে বিলীন হয়ে যায়। মানুষ জন ভিটামাটি হারিয়ে হয়ে পড়ে সহায় সম্বলহীন নিঃস্ব। রেহায় পায় না স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাটবাজার এমন কি নদী ভাঙনরোধে নির্মিত স্থাপনা সমূহ। চলতি মাসেই সহস্রাধিক পরিবার নদীভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জুন মাসের শেষে সারিয়াকান্দির নিকট যমুনা অববাহিকায় হঠাৎ করে ব্যাপক পানি বৃদ্ধি পেয়ে দু’কুল ভাসিয়ে নিয়ে যায়। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীর দু’কুলে দেখা দেয় ব্যাপক নদী ভাঙন। উপজেলার নদীর ডান তীর ভাঙনের পাশাপাশি বর্ষাকালে বাম তীর ও যমুনার চরাঞ্চলে এবার ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্ষাকালে যমুনায় পানি হ্রাস ও বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নদীভাঙনের আশঙ্কায় চর গ্রামের মানুষ আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। শুধু মাত্র সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের চর গ্রাম নয়াপাড়া, করমজাপাড়া, চকরথিনাথ কাজলা ইউনিয়নের চরগ্রাম বেনীপুর, বেড়াপাঁচবাড়িয়া, টেংরাকুড়া, ঘাগুয়া এবং চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের মানিকদাইড়, শিমুলতাইড়, কাকালিহাতা, বহুলাডাঙ্গা, ভাংগরগাছা চর গ্রামের সহস্রাধিক ঘরবাড়ি গত তিন সপ্তাহে নদীতে ভেঙে গেছে। যমুনার ডান ও বাম তীর নদী ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ বাস্তবায়ন করলেও চর গ্রামগুলো রক্ষায় ভাঙনরোধ করা সম্ভব নয়। কাজেই চর গ্রামগুলো নদী ভাঙনের কবল হতে রক্ষায় কোন কাজ করা হয় না। তবে চরবাসী আশা করেন ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হোক অন্তত ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে যেন কিছুটা হলেও গৃহনির্মাণে সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হয়। তাতে নদীভাঙনে ছিন্নমূল মানুষ নতুন করে কোন চরে ঘর নির্মাণ করে সেখানে আশ্রয় নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে। এ বারের বন্যার শুরুতে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে অনেক ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে আরো অনেক ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে যাবে। দীর্ঘদিন হাটশেরপুর ইউনিয়নে নদী ভাঙন ছিল না। এ বছর হঠাৎ করে নয়াপাড়া গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। করমজাপাড়া ও চকরতিনাথ চরেরও কিছু পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের চর গ্রামগুলোতে এ বছর ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। শিমুলতাইড় গ্রামের লোকজন গত এক সপ্তাহ আগেই যমুনা নদীর ভাঙনে ঘরবাড়ি অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পর আবার ভযাবহ নদী ভাঙনে সেখান হতেও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে হচ্ছে। ব্যাপক ভাঙনে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
Discussion about this post