যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর শাহবাগের আন্দোলন যেন থেমে না যায় সে জন্য ছাত্র-যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি শাহবাগের আন্দোলনকারীদের প্রতি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে। স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়। আ স ম আব্দুর রবই ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এরপর থেকে ২ মার্চ পতাকা উত্তোলন দিবস পালিত হয়ে আসছে।
ছাত্র-যুব সমাজকে স্বাধীনতার মূল শক্তি উল্লেখ করে আ স ম রব বলেন, “ছাত্র-যুব সমাজের প্রতিনিধি হয়েই ২ মার্চ পতাকা উত্তোলন করি এবং ৩ মার্চ শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর উপাধিটিও ছাত্র-যুব সমাজ দিয়েছিলেন। এই ছাত্র-যুব সমাজ যখন শাহবাগের জয় বাংলা স্লোগান দেয় তখন গর্বে বুকটা উঁচু হয়ে উঠে। নতুন করে বাঁচার ইচ্ছে করে। এই যুব সমাজকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে তাদের আন্দোলন থেমে গেলে চলবে না।”
শাহবাগের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে রব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের, “স্বাধীনতার কোনো শেষ নেই। জীবন দিয়ে স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে।” তিনি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ক্ষমতায় গেলে সরকার মানুষকে মানুষ মনে করে না, রাস্তায় বের হলে গুলি করে উল্লেখ করে রব বলেন, “এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যেখানে গুলি থাকবে না। পাশাপাশি শাহবাগ আন্দোলন যেন লক্ষ্যচ্যুত না হয় সেদিকে সজাগ থাকাতে হবে।”
স্বাধীন দেশে জাতীয় পতাকায় আগুন, শহীদ মিনার ভাঙচুর, গির্জায় আগুন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না উল্লেখ করে রব বলেন, “দেশের ১৬ কোটি মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করছে।”
জেএসডির সহ-সভাপতি এমএ গোফরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ও আবুল কাশেম ফজলুল হক, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, সাবেক সংষদ সদস্য আব্দুল মতিন হিরুসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন সবাই সমর্থন দিচ্ছে, তবে এই আন্দোলনের লক্ষ্য নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
দেশ পাওয়ার আগেই পতাকা পাওয়া এবং তা উত্তোলন করার ইতিহাসে নজির নেই উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, সেদিনটার কথা মনে হলে গর্বে বুকটা ভরে যায়। যার নায়ক ছিলেন আ স ম রব। পাঠ্য পুস্তকে জাতীয় পতাকার ইতিহাস না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি ‘পচাগলা শবদেহ’ থেকে রাজনীতি মুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নেতৃবৃন্দকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
এর আগে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জেএসডির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।
Discussion about this post