মোবারক বিশ্বাসঃ পাবনা থানার এসআই দায়ত্বিপ্রাপ্ত সেকেন্ড অফিসার জিয়াউরের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তকালে ঘুষের বিনিময়ে আসামী সংযুক্ত ও বাদ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাক্তিরা জানান, গত ২২শে ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বাদ জুম’আ মহানবী (সাঃ) কে কটাক্ষ করার প্রতিবাদে ব্লগারদের শাস্তির দাবীতে সারাদেশ ব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ গ্রহণ করে। মিছিল শেষে দোয়েল চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে কতিপয় উচ্ছশৃংখল ব্যাক্তি জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে গণজাগরন মঞ্চে আক্রমন করেন। সেই সাথে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে সামনে নেতা-কর্মীদের টানানো ব্যানার ফেষ্টুন ছিড়ে ফেলেন। পুলিশ উচ্ছশৃংখল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠি চার্য করেন। এ সময় শান্তিপূর্ণ মিছিলে আসা অনেকে দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিবি’র এসআই রওশন আলী বাদী হয়ে আরো অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা রুজু করেন। যার নং-২৫, তাং ২২-০২-১৩।
মামলাটির তদন্তের দায়িত্বপান পাবনা থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই জিয়াউর রহমান। মামলার তদন্ত চলাকালে এস আই জিয়াউর রহমান অনেককে গ্রেফতার করে টাকার বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন। এ ছাড়া মামলার এজাহারভুত
২জনকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়। উক্ত মামলায় আরো ৩১ জনের নাম অন্তভুক্ত করা হয়। অভিযোগ আছে, স্থানীয় কতিপয় পুলিশের সোর্স বা রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের সহায়তায় এসআই জিয়া টাকার বিনিময়ে এসব নিরাপরাধ ব্যাক্তিদের নাম মামলায় অর্šÍভুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করেন। মামলার তদন্ত চলাকালে একাধিক নিরাপরাধ ব্যাক্তিদের ধরে এনে মামলার আসামী করা হয়। প্রায় ১৫ জনকে এই মামলায় গ্রেফতার করে এনে এসআই জিয়া টাকার বিনিময়ে স্থানীয় ক্ষমতাসীন নেতাদের মুচলেকায় রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দেন। এজাহারভুক্ত দুই আসামীর নাম প্রত্যাহার বাবদ মোটা অংকের টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে এমন ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেছেন এই দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা যাদের বয়স ষাটোদ্ধ। ভাংচুর বা সহিংসতার সাথে জড়িত থাকার মতো পেশিশক্তি নেই। তাদেরকে উক্ত মামলায় অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চার্জশিট ভুক্ত এক আসামীর ছেলে বলেন, ২২শে ফেব্রয়ারী গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সরাসরি যারা ভাংচুরের সাথে জড়িত ছিল এমন ৩জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে মামলায় অর্ন্তভুক্ত না করে রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দেন। অথচ এমন অনেক নিরাপরাধ ব্যাক্তিকে রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় এসআই জিয়া এই মামলায় অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করেন। শুধু তাই নয় এসআই জিয়ার বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে সংবাদপত্রে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ ও মাদক সেবনের অভিযোগে একাধীকবার খবর প্রকাশিত হয়েছে। পাবনা সদর থানা এলাকায় প্রচারনা রয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা এসআই জিয়ার নামে তোলা হতো। পুলিশের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে অভিযান পরিচালনার তথ্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে দিত এই এসআই জিয়া। মাদক ব্যবসায়ীরা আগেই সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করার ফলে পুলিশের অভিযান বিফলে যেত। অন্যদিকে পাবনা থানা পুলিশের পরিচালিত মাদক অভিযান সফল না হলেও পাবনা র্যাব ক্যাম্প মাঝে মধ্যেই সফলতা দেখাত। এদিকে এসআই জিয়া এত অভিযোগের অভিযুক্ত হলেও অজ্ঞাতকারনে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তপক্ষ বরং তকে পুরস্কৃত করে পাবনা থানার মত একটি গুরত্বপূর্ণ থানার সেকেন্ড অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এসআই জিয়ার ম্যানেজ প্রক্রিয়া তার সব অপকর্ম আড়াল করতে সাহায্য করত বলে জানা যায়। এসব অভিযোগের ব্যাপারে এসআই জিয়ার সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Discussion about this post