ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করে কিছু পাওয়া যাবে না। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। দেশের সংকট নিরসনের সবার সংগ্রাম আজ একাকার হয়ে গেছে। আসুন আমরা সবাই মিলে বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে বাঁচাই।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
খালেদা বলেন, “আগামীতে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে পারলে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করা হবে।” শিক্ষক কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আসুন আমরা সবাই মিলে বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে বাঁচাই। দেশের মানুষ ও শিক্ষাকে সংকটমুক্ত করি। আপনাদের ন্যায্য সংগ্রাম ও দাবির সমর্থনে সব সময় আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।”
জাতীয় শিক্ষক দিবস-২০১২ উপলক্ষক্ষ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট এ শিক্ষক সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক, বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সদরুল আমীন, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, শিক্ষক নেতা চৌধুরী মুগীস উদ্দিন, কাজী আবদুর রাজ্জাক, নূর আফরোজ জ্যোতি, মাহবুবুর রহমান মোল্লা, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, আজিজুল হক রাজা প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব জাকির হোসেন।
খালেদা জিয়া বলেন, “দেশ ও সমাজের পরিবেশ নির্বিঘ্ন, নিরাপদ, শান্তিময় ও স্থিতিশীল না হলে শিক্ষাঙ্গণে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব নয়। দেশের অর্থনীতি এখন বিপর্যস্ত। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় স্বল্প বেতনের শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবনমান ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। গরীব অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের দু’বেলা খাবার যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। শিক্ষার ব্যয় ও শিক্ষা উপকরণের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেতন কমাবার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। সরকার তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষার আলো নিষ্প্রভ হতে থাকবে।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নে শিক্ষকের ভূমিকাই প্রধান। শিক্ষক যদি যোগ্য না হন, তারা যদি সমস্যা সংকটে জর্জরিত থাকেন, তাহলে সুশিক্ষার আশা করা যায় না। তাই আমরা বেসরকারি শিক্ষকদের শতভাগ বেতন সরকারি কোষাগার থেকে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছিলাম। অবসর ভাতা চালু করেছিলাম।”
খালেদা জিয়া বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীকে আমরা শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিলাম। সরকার পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রীয়ভাবে এই জাতীয় শিক্ষক দিবস উৎযাপন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট দিবসটি পালন করে আসছে। এজন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার মহান ঘোষক, আধুনিক বাংলাদেশের রম্নপকার, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের স্থপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি আজকের এই দিনে গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাই।”
খালেদা জিয়া বলেন, “আগামী ১২ মার্চ চল চল ঢাকা চল কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। ওই মহাসমাবেশে অংশ গ্রহণ করার জন্য আমি সর্বস্তরের জনগণসহ আজকের উপস্থিত শিক্ষক সমাজকেও আহবান জানাচ্ছি। ”
Discussion about this post