(বিডিনিউজ)- চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী আন্তঃনগর ট্রেনের মাত্র ৫২ শতাংশ টিকিট সাধারণ যাত্রীরা পেয়ে থাকেন। চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের কাউন্টারগুলোতে যাত্রার তিন দিন আগে সাধারণ যাত্রীদের কাছে বিক্রির জন্য এসব টিকিট উন্মুক্ত করে কর্তৃপক্ষ। এক হিসেবে দেখা গেছে, একদিনে গড়ে ঢাকাগামী আন্তঃনগর মহানগর গোধুলী, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও তুর্ণা নিশীথার তিন ধরনের মোট টিকিটের সংখ্যা ২২৭৯টি। এর মধ্যে কাউন্টারগুলোতে বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করা হয় মাত্র ১১৮১টি। বাকি টিকিটের মধ্যে ২৫ শতাংশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে, ১০টি করে প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এবং আর টিকিটগুলো মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ ভিভিআইপি ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে কম খরচে নিরাপদ যাত্রার মাধ্যম হিসেবে ট্রেনই সবার পছন্দ। অথচ প্রতিদিনই শত শত যাত্রী কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান। যাত্রার দিন তিন দিন আগে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পাওয়া অনুযোগও করলেন অনেকে। প্রতিদিন সকাল ৯টায় বিক্রি শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে ওই ৫২ শতাংশ টিকিট। টিকিট না পেয়ে শুক্রবার চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে বিক্ষোভও হয়েছে। বিক্ষুব্ধরা অভিযোগ করেছেন টিকিট কালোবাজারি ও অব্যবস্থাপনার। রেল স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, আগামী ২৬ মার্চ ঢাকাগামী মহানগর গোধুলীর ২০৩টি øিগ্ধা (এসি চেয়ার) টিকিটের মধ্যে ১১১টি, ১৮০টি শোভন চেয়ারের মধ্যে ৮৮টি এবং ৬৬টি কেবিন সিটের মধ্যে ১৭টি কাউন্টারে বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করা হয় শুক্রবার সকাল ৯টায়। সকাল ১০টার মধ্যেই এসব টিকিট বিক্রি হয়ে যায় বলে দাবি করেন স্টেশন ব্যবস্থাপক শামসুল আলম। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাকি টিকিটের মধ্যে ২৫ শতাংশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে, ১০টি প্রতিবন্ধী, ১০টি মুক্তিযোদ্ধা, বাকিগুলো মন্ত্রীসহ বিভিন্ন ভিআইপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষণ করা থাকে।” প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে একই নিয়মে আসন সংরক্ষণ ও সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে বলে স্টেশন ব্যবস্থাপক জানান। মোবাইল ফোনের ২৫ শতাংশ টিকিটের অধিকাংশই কালোবাজারে বিক্রি হয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে। স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, প্রতিদিন সকালে ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেসে এসি-ননএসি মিলিয়ে গড়ে ৮৯৪টি টিকিটের মধ্যে কাউন্টারে দেওয়া হয় ৫৮০টি। প্রতিদিন রাতের তুর্ণা নিশীথায় ৮৩৫টির মধ্যে কাউন্টারে সাধারণ যাত্রীদের জন্য দেওয়া হয় ৩৮৫টি টিকিট। এর মধ্যে নন এসি ২৭০টি। স্টেশন ব্যবস্থাপক শামসুল আলম জানান, প্রতিদিন এভাবেই টিকিট বিক্রির নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে। কাউন্টারে দেওয়া টিকিটের বাইরে ২৫ শতাংশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। তিনি বলেন, “সাধারণ যাত্রীদের টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিদিন সকাল ৬টার পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রির নিয়ম করেছি।” এত অধিক সংখ্যক টিকিট সংরক্ষণ করায় ক্ষুব্ধ চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে টিকিট কিনতে আসা সাধারণ যাত্রীরা। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সুব্রত বড়–য়া পিন্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতিদিনই এভাবে টিকিট সংরক্ষণের ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। কাউন্টার থেকে না পেলেও যাত্রীরা স্টেশনে দালালদের কাছ থেকে দ্বিগুণ দামে টিকিট পাওয়ার কথা জানান তিনি।
Discussion about this post